ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

পণ্যবাহী জাহাজ ভাড়া ৫০ শতাংশ কমলেও সুফল নেই

রফিকুল বাহার, চট্টগ্রাম থেকে

প্রকাশিত : ১২:০০ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০২২ সোমবার | আপডেট: ১২:০২ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০২২ সোমবার

সমুদ্রপথে চলাচলকারী পণ্যবাহী জাহাজের ভাড়া কমেছে ৫০ শতাংশ। করোনা মহামারির সময় আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী জাহাজের ভাড়া অস্বাভাবিক হারে বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। এখন অনেকটাই কমছে ভাড়া। কিন্তু দেশের বাজারে তার প্রভাব পড়েনি। 

আমদানিনির্ভর বাংলাদেশে জাহাজ চলাচলে প্রধান তিনটি রুট হলো চট্টগ্রাম-চীন, চট্টগ্রাম-ইউরোপ ও চট্টগ্রাম-আমেরিকা। মূলত চীন থেকে পণ্য আমদানি বেশি হলেও রপ্তানির প্রধান রুট দুটি হলো ইউরোপ ও আমেরিকা। মহামারি করোনা শুরুর কয়েক মাস পর ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে পণ্যবাহী জাহাজের ভাড়া লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। ভাড়া বাড়ার এই প্রবণতা গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। 

জাহাজের সংখ্যার তুলনায় আমদানি-রপ্তানি পণ্যের পরিমাণ কমে যাওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ভাড়া আবার কমতে থাকে। বিশ্বব্যাপী মন্দা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ব্যাপকভাবে কমতে শুরু করে ফেব্রুয়ারি থেকে। যা কমে প্রায় অর্ধেকে ঠেকেছে। 

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের পরিচালক শাহেদ সারোয়ার বলেন, “আমাদের ডিমান্ড দিনকে দিন কমে যাচ্ছে। ক্যাপাসিটি বেশি হলেও ডিমান্ড কমের কারণে রেট পড়ে যাচ্ছে।”

চলাচলকারী জাহাজ মালিকদের স্থানীয় এজেন্টদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, ‘কন্টেইনার ও বাল্ক’ দুই ধরনের জাহাজের ভাড়া আন্তর্জাতিক রুটে এখন কমতির দিকে। আন্তর্জাতিক শিপিং সংবাদের জন্য পরিচিত ‘মেরিটাইম নিউজে’ গত ২৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সর্বোচ্চ ভাড়া থেকে ৫৯ শতাংশ কমেছে জাহাজ ভাড়া। একই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে ভাড়া কমেছে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ।

শিপিং ব্যবসায়ী আহসান ইকবাল চৌধুরী বলেন, “জাহাজের ফিকোয়েন্সি কমে যাবে, ব্লাঙ্ক সেইলিং শুরু হবে জাহাজ কমিয়ে ফেলতে হবে। কারণ শুধু শুধু ওয়েটিং কস্ট বাড়িয়ে লাভ নেই।” 

জ্বালানি ও ভোজ্য তেল, চিনি, গমসহ নিত্যপণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের পর আমদানি মূল্যের সঙ্গে জাহাজ ভাড়া যোগ করেই শুল্ক পরিশোধ করার বিধান রয়েছে। অর্থাৎ জাহাজ ভাড়া কমলে স্বাভাবিকভাবেই পণ্যমূল্য কমে যাওয়ার কথা।

আহসান ইকবাল চৌধুরী বলেন, “যারা ইম্পোর্ট করছেন তাদের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সেই সঙ্গে সরকারেরও সুপারভাইজ করা উচিত।”

শিপিং ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনে জাহাজ ভাড়া আরও কমবে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ ভোক্তারা আদৌ সুফল পাবেন কিনা সেটি নির্ভর করছে সরকার ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মনিটরিংয়ের উপর।

এএইচ