ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

মিতু হত্যা মামলায় চার্জশিট গ্রহণ আদালতের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৫৫ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৩:৫৮ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২২ সোমবার

চট্টগ্রামের আলোচিত মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারসহ সাতজনকে আসামি করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত।

সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে একই দিন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল হালিমের আদালতে শুনানি শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। স্ত্রী খুনের ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ২০১৬ সালের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ঘটনার পরের বছর মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ্যে আনেন। এরপর ২০২০ সালের শুরুতে বাবুলের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে চাঞ্চল্যকর এই মামলার।

২০২১ সালে পিবিআইর তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দাখিলের পর ১২ মে মিতুর বাবা বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নেয় পিবিআই।

এদিকে গত বছরের ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আট জনকে আসামি করে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। পরে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়। পরে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি মিতু হত্যার ঘটনায় তার বাবা মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পিবিআই।

সংস্থাটি জানায়, একই ঘটনায় বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্ত এগিয়ে নিতে মিতুর বাবার মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। একই ঘটনায় দুটি মামলা চলতে পারে না। সম্প্রতি আদালত এটিকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করেন। তাই আদালতের পর্যবেক্ষণ মেনে ও বিধিবিধান অনুসারে মিতুর বাবার দায়ের করা মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, বাবুলের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত শেষ করে বাবুলসহ ৭ জনকে আসামি করে গত ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম বলেন, “মিতু হত্যা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। তবে পিবিআইয়ের দেওয়া চার্জশিটের ওপর নারাজির আবেদন করেন বাবুল।”

তিনি আরও বলেন, “আদালত বাবুলের আবেদন খারিজ করে দেন। এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মিতু হত্যা মামলায় বাবুল আক্তারসহ সাতজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পিবিআই।”
এসএ/