আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে রাষ্ট্রপতি
‘সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম বাংলাদেশ’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৩৫ এএম, ১৩ অক্টোবর ২০২২ বৃহস্পতিবার
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ এখন দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, জাতির অগ্রযাত্রার স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার বাস্তবরূপ দিতে দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত এবং শোষণমুক্ত দেশ গড়তে সংশ্লিষ্ট সকলে নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাবে।
রাষ্ট্রপতি ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস’ উপলক্ষে এক বাণীতে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২২’ উদ্যাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে আবদুল হামিদ বলেন, আমি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘আর্লি ওয়ানিং এ্যান্ড আর্লি অ্যাকশন ফর অল’- বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় পূর্ব সতর্কীকরণ ও ঝুঁকিহ্রাসই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রধান ভূমিকা রাখে। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের নীতি-পরিকল্পনায় জনগণের জন্য দুর্যোগপূর্ব পূর্বাভাস ও দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাস কৌশল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
তিনি জানান, স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপকূলীয় বনায়নের মাধ্যমে সর্বপ্রথম দুর্যোগের ঝুঁকিহ্রাস কার্যক্রমের সূচনা করেছিলেন। ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং মাটির কিল্লা নির্মাণের কাজও তখন থেকে শুরু হয়। সে সময়ে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া ও ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্ক সংকেত প্রচারের জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচিকে সরকারের অন্যতম একটি কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল, যা দুর্যোগ প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আজও কার্যকর অবদান রাখছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী চিন্তায় ১৯৭২ সালে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র চালু হয়। যে কোন দুর্যোগ মোকাবিলায় উন্নত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালে বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।”
তিনি বলেন, “এরই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার আবহাওয়ার পূর্বাভাস প্রদানের জন্য ২০১২ সাল থেকে সার্ক মনসুন ইনিশিয়েটিভ প্রোগ্রাম (SAARC Monsoon Initiative Programme) চালু করেছে। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রদান ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে।”
আবদুল হামিদ বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে বজ্রপাত হতে প্রাণহানি রোধকল্পে বজ্রপাত প্রবণ ১৫টি জেলায় বজ্রনিরোধক দণ্ড ও বজ্রনিরোধক যন্ত্র স্থাপন এবং টর্নেডোর পূর্বাভাস বিষয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কৃষকেরা যাতে খরা মোকাবিলায় আগাম পদক্ষেপ নিতে পারে সেলক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল খরা পর্যবেক্ষণ ও পূর্ব সতর্কীকরণ পদ্ধতির উন্নতি সাধন করছে।”
তিনি ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২২’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
এসএ/