ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৮ ১৪৩১

শিক্ষকদের দেয়া প্রতিশ্রুতি থেকে সরছে মন্ত্রণালয় (ভিডিও)

রিয়াজ সুমন, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৯ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০২২ শনিবার | আপডেট: ১১:৫৯ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০২২ শনিবার

সহকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের দেয়া প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসছে মন্ত্রণালয়। প্রধান শিক্ষক নিয়োগে আগের নীতিই বহাল থাকছে। বাইরে থেকে নেয়া হবে ৩৫ শতাংশ প্রধান শিক্ষক। যদিও পদোন্নতির মাধ্যমেই প্রধান শিক্ষকের শতভাগ পদ পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাবেক সচিব। তবে বর্তমান সচিব বলছেন, আগের সচিবের মৌখিক আশ্বাসের কোনো ভিত্তি নেই।

বেতন বৈষম্য দূরীকরণসহ বিভিন্ন দাবিতে ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশনে বসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তিন দিনের মাথায় তৎকালিন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে অনশন ভাঙান।

তবে আগের প্রতিশ্রুতি পূরণসহ সহকারি থেকে শতভাগ প্রধান শিক্ষক নেয়ার দাবিতে ২০১৯ সালে ফের আন্দোলনে নামেন শিক্ষকরা। 

২০১৯ সালের ১৩ মে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে শিক্ষকদের সাথে আলোচনায় বসেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালিন সিনিয়র সচিব। প্রতিশ্রুতি দেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতির মাধ্যমেই সহকারি থেকে শতভাগ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।  

সাড়ে তিন বছরে মাথায় সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এলো মন্ত্রণালয়। বলা হচ্ছে, প্রধান শিক্ষক নিয়োগের আগের নীতিই বহাল থাকবে। এ পদে সহকারি শিক্ষক থেকে পদোন্নতি পাবেন ৬৫ ভাগ। আর বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগ দেয়া হবে বাকি ৩৫ ভাগ। এ নিয়ে অসন্তোষ শিক্ষকদের মাঝে। 

শিক্ষকরা বলেন, “সাবেক শিক্ষা সচিবের প্রতিশ্রুতি আমরা বাস্তবায়ন চাই। তিনি বলেছিলেন সহকারি শিক্ষকের নিয়োগের মাধ্যমে শতভাগ পরিচালনা পর্যন্ত পদোন্নতি দেওয়া হবে।”

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “পদোন্নতির যোগ্য হলেই তাকে প্রধান শিক্ষকের স্কেল দিতে হবে। পাশাপাশি শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি চেয়েছিলাম। দীর্ঘদিনের দাবি থাকা সত্ত্বেও তা করা হয়নি।”

বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি তপন কুমার মণ্ডল বলেন, “কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ রাখছি যে, সহকারি শিক্ষক থেকে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে শতভাগ পদোন্নতি যেন দেওয়া হয়।”

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলছেন, আগের সচিবের অনানুষ্ঠানিক কিংবা মৌখিক আশ্বাসের কোনো ভিত্তি নেই।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান বলেন, “এভাবে লিখিত কিছু আছে কিনা এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। সরকার কাজ করে আইন-কানুন, নিয়ম, বিধি-বিধানের উপর ভিত্তি করে। সেক্ষেত্রে মৌখিক কথাকে আমলে নেওয়ার সুযোগ নাই।”

শিক্ষার মানের প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে যোগ্যতাকেই গুরুত্ব দেয়ার কথা বললেন তিনি।

আমিনুল ইসলাম বলেন, “যেহেতু প্রধান শিক্ষক দশম শ্রেণীর পদ, দশম শ্রেণী আসলে সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদ। যেহেতু সহকারি শিক্ষকরা কাজ করছেন সেহেতু তাদের পদোন্নতির সুযোগটাকে বেশি রেখে আমরা প্রধান শিক্ষকের পদগুলো পূরণ করতে চাই।”

সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসির মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগ পাবেন প্রধান শিক্ষকরা। যোগ্যতা স্নাতকোত্তর। এক্ষেত্রে স্নাতকোত্তরসহ অন্যান্য যোগ্যতা থাকলে সহকারি শিক্ষকরাও আবেদন করতে পারবেন।  

সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান বলেন, “সে পদোন্নতি যেটা পাচ্ছেন সেটা তো পাবেনই, আবার সরাসরি যখন নিয়োগ হবে তখন সে আবেদন করতে পারবেন।”
এএইচ