ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে পতিতালয়ে বিক্রি, স্বামী আটক

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:৩৬ পিএম, ২১ অক্টোবর ২০২২ শুক্রবার

আটক সোহাগ

আটক সোহাগ

যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে ভারতের পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাসিন্দা স্বামী সোহাগের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে মো. সোহাগকে (২২) আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা।

আটক মো. সোহাগ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরউভুতি গ্রামের সফিক উল্লাহর ছেলে।

জানা যায়, প্রায় ৫ মাস আগে মো. সোহাগের সাথে কমলনগর উপজেলার চরকালকিনি ইউনিয়নের মতিরহাট এলাকার তাজল ইসলামের মেয়ে রিনার পারিবারিক সম্মতিতে বিয়ে হয়।

বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কথা থাকলেও ওই সময় ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়। পরে সোহাগ স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে বাকি টাকার জন্য বিভিন্ন সময় চাপ প্রয়োগ করে। এভাবে তাদের দুই মাস কেটে যায়। পরে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে স্ত্রীকে ঢাকা নিয়ে যায় সোহাগ। ঢাকা থেকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে চোরাই পথে ড্রামে করে ভারতের কলকাতার কাছাকাছি সোহাগের বোন সহিদার কাছে নিয়ে যায়। পরে সোহাগ দেশে চলে আসে। 

জানা গেছে, সহিদা সেখানকার একটি পতিতালয়ের সর্দারনীর দায়িত্বে রয়েছেন। আর সেখানেই তিন মাস যাবত সোহাগের স্ত্রী রিনার সাথে চলে অমানবিক নির্যাতন। 

এদিকে রিনাকে না পেয়ে তার পরিবার সোহাগকে চাপ প্রয়োগ করলে রিনা ঢাকায় তার বোনের বাসায় আছে বলে তাদেরকে জানায় সোহাগ। তবে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে গত ১০ অক্টোবর রিনার ভাই মো. জাহাঙ্গীর হাজিরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে সোহাগের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রিনাকে তার বাবার বাড়িতে ফিরিয়ে দিতে সোহাগকে চাপ দেয়। নিরুপায় হয়ে সোহাগ এক সপ্তাহ আগে রিনাকে অজ্ঞান করে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। জ্ঞান ফিরলে রিনা বুজতে পারে সে তার স্বামীর বাড়িতে আছে। পরে সে গোপনে বাবার বাড়িতে এসে পরিবারের কাছে সব কিছু খুলে বলে। 

এরপর রিনার পরিবার সোহাগকে যৌতুকের বাকি টাকা দিবে মর্মে আসতে বলে। সোহাগ বুধবার রাতে টাকার লোভে শ্বশুর বাড়িতে আসলে এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। বর্তমানে সোহাগ কমলনগর থানা হেফাজতে রয়েছেন।

ভুক্তভোগী রিনা বলেন, সোহাগ বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে আমাকে অজ্ঞান করে ভারতে নিয়ে তার বোনের কাছে বিক্রি করে দেয়। সেখানে তিন মাস যাবত আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। তাদের কথার অবাধ্য হলে আমাকে শারীরিক নির্যাতনও করা হতো। আমি সোহাগ ও তার বোন সহিদার বিচার চাই।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে সোহাগকে আটক করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনএস//