ঢাকা, শুক্রবার   ০১ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ১৭ ১৪৩১

নির্যাতনের বিচার চেয়ে ইবি শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:৩৮ এএম, ২২ অক্টোবর ২০২২ শনিবার

শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিচার চেয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন সৈয়দা সায়মা রহমান নামের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন।

অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, “২০ অক্টোবর আনুমানিক সকাল ৯টা ১৫ মিনিটের দিকে মিতুর নির্দেশে পপি আমাকে ২০৪ নং রুমে ডেকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এই সময়ে রুমের ভেতরে অবস্থানরত ছিল পপি (বাংলা ২০১৬-১৭), সালমা (মার্কেটিং ২০১৬-১৭), ইরানী (লোকপ্রশাসন ২০১৮-১৯), প্রমি (ইইই ২০১৬-১৭), রিপা (সি.এস.ই ২০১৮-১৯), তৃষা (বায়োটেকনোলজি ২০১৬-১৭), মিতু (বাংলা ২০১৬-১৭), সান্তনা ২০১৫-১৬, রিমা ২০১৬-১৭, মনিরা (ই.এস.জি ২০১৭-১৮), তন্দ্রা (রাসায়ন ২০১৭-১৮), মুম্মা (বাংলা ২০১৮-১৯) ও শুভ্রা মিলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধর করে। আমি রুম থেকে বের হতে চাইলে আবারও মারধর করা হলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।”

“তারপর কি হয়েছে আমি জানি না। পরে জ্ঞান ফিরে এলে দেখি আমি মেডিকেলে চিকিৎসারত অবস্থায় আছি। অতঃপর আমি আমার বান্ধবীদের ফোন দিতে চাইলে তারা আমার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে রেখে দেয় এবং বলে কাউকে কিছু জানালে তোমার অবস্থা আরও ভয়ানক হবে।”

“মেডিকেল থেকে ফেরার পর তারা আমাকে সিট ছেড়ে চলে যেতে বলে। না গেলে আমাকে পরবর্তীতে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এরপর সন্ধ্যা ৭টার দিকে আবারও আমাকে রুম থেকে ধরে এনে সবার সামনে মানসিকভাবে হেনস্তা করতে থাকে। একপর্যায়ে আমাকে অফিসরুমে ৩ ঘন্টা ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় রেখে দিলে আমি আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ি।”

এ বিষয়ে সৈয়দা সায়মা রহমান একুশে টেলিভিশনকে বলেন, “আমি কোন দোষ না করেও শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। এর বিচার না পেলে আত্মহত্যা করবো। কারণ, এখানে আমার পরিবারের সম্মান জড়িত। আমার বাবা-মা তারাও আমাকে ভুল বুঝেছে।”

এই বিষয়ে পপি খাতুন বলেন, “আমারা সায়মাকে কোন প্রকার র‍্যাগিং করিনি। তার গায়ে কোন প্রকার টাচ করাও হয়নি। আমাদের হলে কোন প্রকার র‍্যাগিং নেই। এর প্রমাণ দিতে পারবো। আর তার ফোন তার কাছেই ছিল। বরং আমার গায়ে ক্যাম্পাসে সবার সামনে তার সিনিয়র হাত তুলেছে। মেইন গেইটে সিসি টিভি ক্যামেরা আছে তা দেখলেই সব প্রমাণ হয়ে যাবে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “আমরা সৈয়দা সায়মা রহমান নামের একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তাকে না-কি হেনস্তা করা হয়েছে। আমরা বসে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো।”

খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী বলেন, “আমরা তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছি এবং আমি প্রক্টরকেও বলেছি যাতে প্রশাসন থেকেও তদন্ত করা হয়। আপাতত সায়মাকে তার বাবা-মায়ের সাথে থাকতে বলা হয়েছে।”

এএইচ