ব্যবসায়ে নতুন মাত্রা এনেছে কুইক কমার্সের ধারণা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:১২ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২২ বুধবার
বর্তমান সময়ে কিউ-কমার্স ধারণাটি বিশ্বজুড়ে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। গ্লোবাল ভিলেজ এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশেও এ ধারণাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ই-কমার্স ধারণাটির রূপান্তরিত রূপ হলো কিউ-কমার্স (কুইক কমার্স)। এর মাধ্যমে সুবিধামতো ও দ্রুততম সময়ে গ্রাহকদের কাছে খাবার এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসহ অন্যান্য জিনিস পৌঁছে যাচ্ছে। উন্নত গ্রাহকসেবা, উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও সুদক্ষ পরিচালনার সমন্বয় ও রিটেইল পার্টনারদের শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাংলাদেশে এ (কিউ-কমার্স) ধারণাটির শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে।
ই-কমার্স এবং কিউ-কমার্স এর মধ্যে ধারণাগত পার্থক্য রয়েছে। একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা যাক, সাধারণত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে পণ্য অর্ডার করলে ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে তা গ্রাহকদের হাতে পৌঁছায়। বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে এটি গ্রাহকদের হাতে পৌঁছাতে ১ থেকে ২ দিন সময় লাগে। তবে, কিউ-কমার্স এক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে; কিউ-কমার্স ধারণাটি গ্রাহকদের পণ্য প্রাপ্তিতে আরো গতি এনে দিয়েছে। কিউ- কমার্সের মাধ্যমে গ্রাহকরা খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে পণ্য হাতে পেয়ে থাকেন। কুইক- কমার্স স্পিডের (দ্রুতগতি) বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে এবং এখানে দক্ষতা ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া হয়। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অগ্রগতি, লজিস্টিক অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং গ্রাহকদের জীবনধারায় পরিবর্তন আসার কারণেই কুইক-কমার্স বিকশিত হয়েছে। ইন্টারনেট ভিত্তিক অর্থনীতিকে ত্বরাণ্বিত করতে দ্রুত গতিতে পণ্য পৌঁছে দেয়ার বিষয়টি আগের চেয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণেই রিটেইল ও ডেলিভারি খাতের ডিজিটাল রূপান্তরে কিউ-কমার্স এখন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, যা এক সময় ই-কমার্সের দখলে ছিলো।
কিউ-কমার্সে প্রযুক্তি এবং লজিস্টিক এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বাংলাদেশে বৈশ্বিক মহামারির সময় কিউ- কমার্সের উত্থান দেখা যায়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডেলিভারি প্রদানের পাশাপাশি কমিউনিটির প্রয়োজনে ও তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদানেও কুইক- কমার্স কার্যকর ভূমিকা রাখছে। সঙ্কটকালীন সময়ে ক্রেতাদের হোম ডেলিভারির ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে কিউ- কমার্স সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে। কুইক- কমার্সের এ অগ্রগতিকে ত্বরাণ্বিত করেছে লজিস্টিক, মেশিন লার্নিং ও ডেটা সাইন্স। প্রযুক্তির বিস্তৃত ব্যবহারের মা্ধ্যমে কিউ- কমার্স উন্নত সেবা, পণ্য ডেলিভারি ও ক্রেতা সন্তুষ্টি অর্জন করেছে।
বর্তমান সময়ে মানুষের জীবন অনেক কর্মমুখর। এ কর্মব্যস্ততার মাঝে রাজধানী ঢাকার অসহনীয় যানজট পেরিয়ে ঘরের বাইরে গিয়ে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী কেনার বিষয়টি বেশ ঝামেলাপূর্ণ। ক্রেতাদের জীবনকে সহজ করতে ও তাদের পণ্য কেনার চাহিদা পূরণে কুইক- কমার্স প্ল্যাটফর্ম বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তাইতো, ক্রেতা সাধারণের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে ২০২০ সালে গ্রোসারি ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম ‘প্যান্ডামার্ট’ চালু করে ফুডপ্যান্ডা। গ্রাহকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী কম সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে এই ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম। সঙ্গে বিভিন্ন আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট আর ভাউচার তো রয়েছেই।
যথাসময়ে ডেলিভারি সক্ষমতা গ্রাহকের সাথে মজবুত বন্ধন তৈরি করে, ডেলিভারি সেবার নির্ভরযোগ্যতা বাড়িয়ে গ্রাহকের আস্থা অর্জন করা যায়। একজন গ্রাহক তার কাঙ্ক্ষিত সময়েই ডেলিভারি প্রত্যাশা করেন। গ্রাহকের এমন প্রত্যাশা প্যান্ডামার্টের মাধ্যমে পূরণ হতে চলেছে। প্যান্ডামার্টে রয়েছে ঘরের ও গৃহস্থালি প্রয়োজনীয় সব পণ্য থেকে শুরু করে শিশুদের পণ্য ও পরিচ্ছন্নতা উপকরণসহ হাজারেরও বেশি পণ্যের সমাহার। পণ্যের এই বিশাল সমাহার থেকে কাঙ্ক্ষিত ও পছন্দের পণ্য মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। এছাড়াও, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ডেলিভারি চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্যান্ডামার্ট চালু হওয়াতে বিক্রেতাদের জন্য নতুন ব্যবসায়িক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সেইসঙ্গে রাইডার ও ওয়্যারহাউজ কর্মীদের জন্য সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ।