ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

শিশুসন্তানকে হত্যার পর থানায় গিয়ে মায়ের আত্মসমর্পণ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:২৯ পিএম, ২৭ অক্টোবর ২০২২ বৃহস্পতিবার

ঘাতক মা মৌমিতা পাল

ঘাতক মা মৌমিতা পাল

কণিনীকা পাল হিয়া নামে চার বছরের কন্যা শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন মা মৌমিতা পাল। হস্পতিবার সকালে জয়পুরহাট পৌর শহরে ঘটে এমন ঘটনা। 

নিহত শিশু কণিনীকা পাল হিয়া (৪) পাঁচবিবি সোনালী ব্যাংকের সিনিয়র কর্মকর্তা নয়ন পাল ও মৌামিতা পালের একমাত্র মেয়ে। পরিবার নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে নয়ন পাল জয়পুরহাট শহরের বারিধারা মহল্লায় তিন তলার একটি ফ্লাটে ভাড়া থাকছেন। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা সোনালী ব্যাংক শাখার সিনিয়র ক্যাশ অফিসার নয়ন কুমার পালের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার আমড়া গোহাইল গ্রামে। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি পরিবার নিয়ে জয়পুরহাট শহরের বারিধারা মহল্লায় তিন তলার একটি ফ্লাটে ভাড়া আছেন। শ্বশুড় বাড়ির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বেশ কিছুদিন থেকে পারিবারিক কলহে মানসিক রোগে ভূগছিলেন মৌমিতা পাল। 

বৃহস্পতিবার সকালে অসুস্থ স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান কণিনীকা পাল হিয়াকে বাসায় রেখে তিনি তার কর্মস্থলে যান। সকাল ৯টার দিকে মৌমিতা তার সন্তান হিয়ার গলায় মোবাইল ফোনের চার্জারের তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ওই সময় ঝর্ণা রাণী নামে পাশের এক ভাড়াটিয়া তাদের সন্তানের খোঁজ নিতে গেলে মৌমিতা ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন এবং তা খুলতে বারণ করেন। তার বারণ উপেক্ষা করে ঝর্ণা রাণী ঘরের দরজা খুলে দেখতে পান শিশুকন্যা হিয়ার নিথর দেহ বিছানায় পড়ে আছে। ওই সময় মৌমিতা বাসার সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে সোজা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। 

পরে থানা থেকে পুলিশ এসে খোঁজ নিয়ে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। খবর পেয়ে পাঁচবিবি থেকে নয়ন কুমার পাল ছুটে আসেন থানায়। পুলিশ নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

প্রতিবেশি ঝর্ণা রাণী বলেন, ‘মৌমিতা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিজ সন্তানকে হত্যার পর বাড়ি থেকে নেমে সোজা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। মোবাইলের চার্জার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে সে তার সন্তানকে হত্যা করেছে। 

নিহত শিশুর পিতা নয়ন কুমার পাল জানান, পারিবারিক কলহের কারণে তার স্ত্রী মৌমিতা মানসিক বিকারগ্রস্ত। বেশ কিছুদিন থেকে মানসিক রোগে ভূগছেন তার স্ত্রী। সকালে তিনি স্ত্রী ও সন্তানকে বাসায় রেখে গিয়েছিলেন। পৌনে ৯টার দিকে মেয়ের সাথে তার মোবাইলে কথা হলেও স্ত্রী কথা বলেননি। পরে থানা থেকে তাকে হত্যার বিষয়টি জানিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়।

জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘পারিবারিক কলহে হাতাশা থেকে হত্যাকাণ্ডটি ঘটতে পারে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা নয়ন কুমার পাল স্ত্রী মৌমিতা পালকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে।

এনএস//