ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

‘পুলিশকে প্রযুক্তিনির্ভর হিসেবে গড়তে কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২২ পিএম, ৩০ অক্টোবর ২০২২ রবিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার বাংলাদেশ পুলিশকে সাইবার ক্রাইম, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন, মানি লন্ডারিং ইত্যাদি সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম একটি জনবান্ধব আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সব ধরণের সময়োপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, এরই অংশ হিসাবে গত সাড়ে ১৩ বছরে পুলিশ বাহিনীতে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট, সাইবার ইউনিট গঠনসহ ৬টি বিশেষায়িত ইউনিট, ৪টি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, ৩টি র‌্যাব ব্যাটালিয়ন, ২টি রেঞ্জ, ২টি মেট্রোপলিটন পুলিশ, ৬৩টি থানা, ৯৫টি তদন্ত কেন্দ্র এবং ৩০টি ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার গঠন করা হয়েছে। 

শেখ হাসিনা সোমবার ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এক যুগপূর্তির এই শুভক্ষণে তিনি ইউনিটের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। 

তিনি বলেন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কালজয়ী আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের দেশপ্রেমিক পুলিশ সদস্যগণ। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ দেশ গড়ার লক্ষ্যে পুলিশের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করতে জনবল ও বাজেট বৃদ্ধিসহ সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য পুলিশের প্রায় সকল ইউনিটের কাঠামো সংস্কারসহ মোট ১ হাজার ৫২৯টি ক্যাডার পদসহ সর্বমোট ৮২ হাজার ৯২৭টি পদ সৃজন করা হয়। বিশ্বায়নের ও ডিজিটালাইজেশনের এ যুগে অপরাধীরা সহজলভ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও সর্বদা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে অপরাধকে আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক পরিসরে দ্রুত বিসাতৃত করছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক এবং স্থানীয় প্রযুক্তি নির্ভর অপরাধ প্রতিরোধ ও অপরাধ উদঘাটন এবং চতুর্থ শিল্পবিপ্ল¬বের এই যুগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য পুলিশ কার্যক্রমের প্রতিটি পর্যায়কে ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পাঞ্চলে অপরাধের মাত্রা ও প্রকৃতি ভিন্নতর। শিল্পক্ষেত্রে বিশেষ করে পোশাক শিল্পে নৈরাজ্য ও অস্থিরতা দেখে আওয়ায়ামী লীগ সরকারই প্রথম শিল্প পুলিশের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে ২০০৯ সালে শিল্প পুলিশ গঠনের ঘোষণা দেয়। ২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর হতে শিল্পাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য এই ইউনিটটি যাত্রা শুরু করে। গঠনের পর থেকেই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ অত্যন্ত সফলতার সাথে তাদের দায়িত্বপালন করে আসছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি শিল্প খাত হতে অর্জিত আয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয় ছিল ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্পখাত রপ্তানি করেছে ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের অধিক, যা মোট রপ্তানির ৮১.৮২ শতাংশ। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে ২য় অবস্থানে রয়েছে। শুধুমাত্র পোশাক শিল্পে বর্তমানে প্রায় ৪২ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। পোশাক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বজায় থাকার কারণে আমাদের এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। 

তিনি বলেন, শিল্পাঞ্চলে শ্রমিক, মালিক ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে শিল্প সম্পর্কিত সু-সম্পর্ক বজায় রাখা, বিদেশি বিনিয়োগকারী ও কারিগরি বিশেষজ্ঞদের নিরাপত্তা বিধান করাসহ শিল্প সেক্টরে সামগ্রিকভাবে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এ কারণে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও কলকারখানার সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে কর্মসংস্থানের সুযোগ উল্লেখ করে তিনি আশা করেন, দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ সকল শিল্পক্ষেত্রে অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ আরো সচেষ্ট হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে। 

প্রধানমন্ত্রী ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ১২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

এসি