ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

প্রতি ৪ জনের মধ্যে একজন স্ট্রোকের ঝুঁকিতে (ভিডিও)

শিউলি শবনম, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২০ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২২ বুধবার

দেশে প্রতি বছর স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে ২০ লাখ মানুষ। গেল ১০ বছরে বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এ হার বেড়েছে চারগুণ। যদিও এতো রোগীর চিকিৎসার জন্য দেশে নেই পর্যাপ্ত স্ট্রোক সেন্টার। তবে আটটি বিভাগীয় শহরে মিনি নিউরোসায়েন্সেস সেন্টার করছে সরকার। স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে নিয়ন্ত্রিত জীবনাযাপনের ওপর জোর দিতে বলেছেন চিকিৎসকেরা। 

বিশ্বব্যাপী স্ট্রোকে মৃত্যুর দিক থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত জাপানের অবস্থান ছিল শীর্ষে। কিন্তু বিভিন্ন খাবারে লবণের পরিমাণ কমানো, হাঁটা, ব্যায়ামসহ নিয়ন্ত্রিত জীবনাযাপনের মাধ্যমে দেশটি স্ট্রোকে মৃত্যুকে তৃতীয় স্থানে নামিয়ে এনেছে। 

অথচ বাংলাদেশের চিত্র বিপরীত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ১০ বছর আগে ৬ জনের মধ্যে ১ জন স্ট্রোকের ঝুঁকিতে ছিল। বর্তমানে প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জন রয়েছে ঝুঁকিতে। 

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের গবেষণা বলছে, দেশে ১ লাখ মানুষের মধ্যে ১১শ’ জনের স্ট্রোক হচ্ছে। অথচ ভারতে এ সংখ্যা ১৫০ জন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোক হওয়ার অন্যতম কারণ। পাশাপাশি সবুজ শাকসবজি, ফলমূল খাওয়া এবং শারীরিক পরিশ্রম বাড়ানোসহ স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুললে প্রতিরোধ করা যাবে স্ট্রোক। 

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ বলেন, “যাদের ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার আছে কিন্তু চিকিৎসা করে নিয়ন্ত্রণে রাখেন। তারা যদি সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দেয়, খাদ্যাভাস পরিবর্তন করে, সবুজ শাক-সবজি খায়, ফলমূল বেশি খায়, রেড মিট বন্ধ করে, ভাত কম খায়, আর প্রতিদিন কমপক্ষে ২ কিলোমিটার অথবা আধাঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস করেন তাহলেই আপনি অনেকটা ভালো থাকতে পারবেন।”

চিকিৎসকরা বলছেন, স্ট্রোক হওয়ার সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নেয়া গেলে বেশিরভাগ রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। যদিও প্রায় ২০ লাখ রোগীর জন্য সারাদেশে স্ট্রোক সেন্টার রয়েছে মাত্র ৮টি। ফলে সময়মতো চিকিৎসার অভাবে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। 

স্ট্রোকের সর্বাধুনিক ও সুচিকিৎসা সবার জন্য নিশ্চিত করতে আটটি বিভাগীয় শহরে মিনি নিউরোসায়েন্স সেন্টার গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার। 

নিউরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. মো. বদরুল আলম বলেন, “আমাদের চিকিৎসা ভালো আছে কিন্তু সার্বজনিন না। সবার জন্য এটা নিশ্চিত করতে পারেনি, ভবিষ্যতে পরিকল্পনা আছে। ৮টি বিভাগীয় শহরে ৮টা নিউরোসায়েন্স সেন্টার করতে যাচ্ছি। এগুলো শেষ হলে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষরা নিউরোসায়েন্সের সেবা পাবে।”

 ৬০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের মধ্যে ৭ গুণ স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।

এএইচ