ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

‘বৈশ্বিক সংকটে বিরোধী দলগুলো ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৩৫ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২২ বুধবার | আপডেট: ০৯:৪০ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২২ বুধবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে আজ বলেছেন, তাঁর সরকার দেশের জনগণের দুর্ভোগ লাঘোবের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, যদিও বিরোধী দলগুলো রাশিয়া-ইউক্রেইনের যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকটের সুযোগ নিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে।

তিনি বলেন, ‘যখন দেশ একটি সংকটময় সময় অতিক্রম করছে, তখন আমি আমাদের বিরোধী দলের মাঝে ওই উদ্বেগ দেখছি না। বরং, তাদেরকে এই সংকটজনক অবস্থার ফায়দা নিয়ে কিভাবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা যায়, সে চেষ্টাই করতে দেখা যায়। এটা কি ঠিক?’ 

বুধবার (২ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির মহাসচিব সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের একটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

মুজিবুল হক চুন্নু তার প্রশ্নে বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দায় সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আহবান জানিয়ে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেবেন কী না জানতে চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বললেন ? আমার প্রশ্ন এখানেই ? দেশ যখন এমন ক্রান্তিলগ্নে পড়ে, তখন আমাদের যারা বিরোধী দল আছেন- আমি সকলের কথাই বলছি- তাদের মাঝে ওই উদ্বেগ আমরা দেখিনি। বরং দেখেছি, এই সুযোগে রাজনৈতিক অশান্ত পরিবেশ কীভাবে সৃষ্টি করা যায়, সেটাই যেন তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এটা করাটা কী সমীচীন হচ্ছে ? সমীচীন হচ্ছে না। তাহলে ওই অনুভূতিটা কোথায়? অনুভূতিটা তো থাকতে হবে দেশের জন্য। দেশপ্রেমটাও থাকতে হবে।

মুজিবুল হক চুন্নু প্রশ্ন করেছিলেন যে- বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংটক মোকাবিলায় সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্যের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ নেয়া হবে কিনা। শেখ হাসিনা  বিরোধী দলগুলোর ব্যাপারে বলেন, তাদের মধ্যে এ ধরনের অনুভূতি দেখা যায় না। তাদের মধ্যে দেশপ্রেম থাকতে হবে এবং দেশের জন্য অনুভূতি থাকতে হবে। 

তিনি বলেন, ‘যখন বিশ্বব্যাপী এ ধরনের একটি সংকট চলছে, তখন আমাদের রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করা এবং ঘোলা পানিতে  মাছ ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে।’ 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবসময়ে ঐক্যে বিশ্বাস করি। যারা আসবেন, তাদের সঙ্গে আমরা কাজ করবো। এতে কোন সন্দেহ নেই। সংসদ নেতা বলেন, ঐক্যবদ্ধ শুধু মুখে বললে হবে না। নিজের থেকে পাশে দাঁড়াতে হবে। আমরা কিন্তু সবাইকে নিয়ে কাজ করি। আমরা যখন উন্নয়নটা করি, কোন এলাকাটা আমাদের ভোট দিলো বেশি, আর কোন এলাকা দিলো না- সেটা বিবেচনা করি না। জনমানুষের জন্য আমাদের উন্নয়ন। গণমানুষের কথা চিন্তা করে আমরা কাজ করি। ঠিক তেমনি দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা বসে থাকিনি। অনেকে তো সমালোচনা করে যাচ্ছেন। বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু একমুট চালও দিয়ে বা হাত দিয়ে পানি থেকে কাউকে উদ্ধার করতে দেখিনি। তবে আমরা সবসময়ে ঐক্যে বিশ্বাস করি। যারা আসবেন তাদের সঙ্গে আমরা কাজ করবো। এতে কোন সন্দেহ নেই।

বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের ভয়ারহতা ও পণ্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে আমি খোলামেলা কথা বলেছি। যদিও অনেকে আমার সমালোচনাও করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, এভাবে কথা বললে মানুষ ভয় পেয়ে যাবেন। ভয় নয়, মানুষকে সতর্ক করার জন্য এটা বলেছি। শুধু সতর্ক নয়, সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া জন্য বলেছি। তিনি বলেন, আমাদের মাটি অত্যন্ত উর্বর। আমরা ফসল ফলাবো। খাদ্য উৎপাদন করবো। আমরা ব্যবহার করবো এবং আমরা সেটা করতে পারি। বাংলাদেশ যে পারে, আমরা অনেক ক্ষেত্রে সেটা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছি। সেটা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কেবল নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ কষ্টে ভুগছে। পরিবহনের জন্যও পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যেখান থেকে খাদ্য বা তেল কিনতাম, যুদ্ধের কারণে কিনতে পারছি না। বিকল্প জায়গা খুঁজে বের করছি। সেখান থেকে যাতে আমরা খাদ্য, ডিজেল, তেল, সার আনতে পারি সেই ব্যবস্থা করছি। এমন কী এলএনজি আমদানীর জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং নিয়েছি।

গণফোরামের সুলতান মনসুরের সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আর সেই সঙ্গে স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা)। এই স্যাংশন দেয়ার ফলে বিশ্ববাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। সারা বিশ্বের অবস্থাই খুব টালমাটাল। তবে বাংলাদেশ অনেক উন্নত দেশ থেকে এখনো পর্যন্ত ভালো অবস্থায় আছে বলে মনে করি। তিনি বলেন, ইউরোপ, আমেরিকা, গ্রেট ব্রিটেনসহ বিভিন্ন  দেশের অবস্থা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রতিটি জায়গায় জ্বালানী তেলের অভাব, বিদ্যুত সাশ্রয়ের জন্য ব্যবস্থা, সব জায়গায় লোডশেডিং। গ্রেট ব্রিটেনে বিদ্যুতের দাম ৮০ ভাগ বেড়েছে। তারা সব কিছু রেশন করে দিচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে আমাদের দেশে যাতে প্রভাবটা না পড়ে, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি। সবার কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, আমাদের খাদ্য উৎপাদন অব্যহত রাখতে হবে। বার বার বলছি এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে। যখন সারা বিশ্বব্যাপী খাদ্যের অভাব, মূল্যস্ফীতি তখন আমাদের দেশে নিজেদের মাটি ও মানুষ নিয়ে চলার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি।

বাজার থেকে পণ্য গায়েব হয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তো আছেই। এই অসাধু ব্যবসায়ীরা নিজেদের আর্থিক লাভের কথা চিন্তা করে, মানুষের দুর্ভোগের কথাটা চিন্তা করে না। এজন্য তারা অনেক সময় পণ্য লুকিয়ে রাখে এবং কৃত্রিম উপায়ে জিনিসের দাম বাড়ায়। এতে অনেকের ইন্ধনও থাকতে পারে। তবে আমাদের মনিটরিং ব্যবস্থায় তাদের সঙ্গে সঙ্গে খোঁজা হয়, ধরা হয়। ইতোমধ্যে অনেক পণ্য কিন্তু খুঁজে বের করা হয়েছে এবং  তা বাজারজাত করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের সব সময় সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। এভাবে কোন না কোনভাবে পন্য লুকিয়ে রেখে মুল্য বৃদ্ধির চেষ্টা করে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চলমান থাকবে।

দৈনিক প্রথম আলোর একটি রিপোর্ট এবং সিপিডির প্রতিবেদন প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির রুমিন ফারহানা’র প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আগেই বলেছি, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার কিছু লোক থাকে। সেইসব লোকের কথাই মাননীয় সদস্য বলেছেন। যে পত্রিকাগুলোর নাম তিনি নিয়েছেন, তার মধ্যে একটা পত্রিকা কিন্তু আমি কখনো পড়ি না। পড়ি না এই কারণে যে তারা সবসময় উল্টো দিকে থাকে। এরা কখনো বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক, তা চায় না। একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তারা পছন্দ করে। পছন্দ করে এইজন্য যে তাদের একটু ভাল হয়, কোনো রকম কদর বাড়ে সেজন্য। আর যে প্রতিষ্ঠানটির কথা বলেছেন, এই প্রতিষ্ঠানটি কোন জায়গা থেকে হিসাব পায় জানি না। এই হিসাব তাদের কখনোই সঠিক হিসাব হয় না। 

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে দাম বেড়েছে সেটা তো অস্বীকার করছি না। আজকে সারাবিশ্বে যেভাবে পণ্যমূল্য বেড়েছে সেটা যদি দেখেন, সে তুলনায় বাংলাদেশে হয়নি। দাম বেড়েছে বলেই তো আমরা ভর্তুকি দিয়ে স্বল্প মূল্যে যারা ক্রয় করার সক্ষমতা রাখেনা, তাদের সব ধরণের সহযোগিতা দিচ্ছি। সংসদ নেতা বলেন, হেডলাইন দিয়েছে- সব দেশের থেকে বাংলাদেশে পণ্যমূল্য বেশি ! কিন্তু ভেতরে যে ডাটা দিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশ হিসাবে আসে না। বাংলাদেশ কয়েকটা দেশ থেকেই ভাল অবস্থায় আছে। এরা কারসাজিটা এভাবেই করে। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে কিছু কিছু পত্রিকা এখন এমনভাবে একটা হেডলাইন করে, যা বিভ্রান্তিকর। জাতি দেখুক সেটা সঠিক না। সঠিক তথ্য তারা দেয় না। বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দেয়। 

সিপিডির নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে প্রতিষ্ঠানটির কথা উনি (রুমিন ফারহানা) উল্লেখ করেছেন, সে প্রতিষ্ঠান তো এমনই বলে। কোনো কিছুই ভাল লাগে না তাদের। তাদের ভাল লাগে কখন, যখন সেনাশাসন ছিল, যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল। কারণ এতে তাদের একটু কদর বাড়ত। এই আশায় তারা বসে থাকে, এটাই বাস্তবতা। 

তিনি বলেন, দেশের মানুষের দুঃখ কষ্ট লাগবে যা যা করণীয় আমাদের সাধ্যমত করে যাব। পাশাপাশি উইক্রেন যুদ্ধের জন্য যুদ্ধ এবং স্যাংশনের জন্য যে প্রত্যেক জিনিসের দাম বেড়ে গেছে, সেজন্যে যুদ্ধ বন্ধ করার কথা আমি জাতিসংঘেও বলে এসেছি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে বলে এসব কথা বললে কোনো কোনো দেশ নারাজ হবে। কে নারাজ হল জানি না। যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের মানুষ ভুক্তভোগী। ইংল্যান্ডে বহুমানুষের মাছ মাংস কিনে খাওয়ার সামথ্য নেই। তিন বেলা খাবার খেতে পারে না। আমেরিকায় যারা একেবারে দরিদ্র, দারিদ্র বেড়ে গেছে। খাবার পাচ্ছে না, থাকার ঘর নেই, রোগের চিকিৎসা নেই। গৃহহীণ মানুষের ভীড়। ইউরোপের অবস্থা এ ধরনের। শীত এসে যাচ্ছে তারা গরম পানি পাচ্ছে না।

শেখ হাসিনা বলেন, এই যখন বিশ্বব্যাপী অবস্থা, বাংলাদেশের জনগণের জন্য সংসদ সদস্য হিসেবে কী করা উচিত সেটাই বলা দরকার। আর যে পত্রিকা, এবং যে প্রতিষ্ঠান, ওদের  সবাইকে আমার খুব ভাল চেনা আছে। আমাদের মতিয়া আপার ভাষায় বলতে হয়, একটা প্রতিষ্ঠান আছে, তার প্রধানকে মতিয়া আপা একটা নাম দিয়েছেন, আসল নাম বাদ দিয়ে বলেছেন সেনাপ্রিয়। অর্থাৎ অস্বাভাবিক একটা পরিস্থিতিতে তাদের একটু দাম বাড়ে মূল্য বাড়ে, এটাই বাস্তবতা। আমরা জনগণের পাশে আছি, জনগণের সঙ্গে থাকব। তারা যেটা বলছে, বলতে দিন। দেশের মানুষের কল্যাণে আমার যেসব কাজ, সেগুলো আমি করে যাব।

গণফোরামের দলীয় সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও বৈশ্বিক অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থায় ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার চরম আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য দেশের জনসাধারণের জীবনমান স্বাভাবিক রাখতে ও দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সরকারের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বাজারে খাদ্য সরবরাহ পর্যাপ্ত রাখতে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে খাদ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান রয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, চলতি ২০২২-২৩ অর্থ-বছরে জি টু জি পদ্ধতিতে ৫ লাখ ৩০ হাজার মে. টন চাল এবং ৬ লাখ ৫০ হাজার মে. টন গম আমদানির চুক্তি করা হয়েছে। আমদানির লক্ষ্যে ঋণপত্র খোলা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে এসকল চাল ও গম দেশে প্রবেশ শুরু হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমানে সরকারি গুদামে ১৬ লাখ ৪৩ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে। নিরাপদ খাদ্য মজুদ গড়ার মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রার মান সচল রাখার প্রয়াসে ২০২২-২৩ অর্থ-বছরে অভ্যন্তরীণভাবে ২২ লাখ ৯০ হাজার মে. টন চাল ও ১ লাখ ৫০ হাজার মে. টন গম সংগ্রহের পরিকল্পনা রয়েছে।  বৈশ্বিক ও অর্থনৈতিক নানারকম দুর্যোগ মোকাবেলা করে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভাগ্যোন্নয়নে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। সরকারের সকল উদ্যোগের ফলে জনমনে অচিরেই স্বস্তি আসবে বলে মনে করেন তিনি।

বিদেশে বসে দেশ বিরোধী বক্তব্য দিলে আইনী ব্যবস্থা॥ সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারবিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনা, উস্কানিমূলক ও বানোয়াট বক্তব্য দেওয়া ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। 

সংসদ নেতা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রবাসী/অভিবাসী বাংলাদেশি ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট দেশে তাদের মেধা, শিক্ষা ও কাজের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর পাশাপাশি স্বাগতিক দেশে তাদের ইতিবাচক কর্মকান্ডের মাধ্যমে দেশের নাম ও ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেন। স্বাগতিক দেশে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণেও তারা অনেক সময় ভূমিকা রাখতে পারেন। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, ইতিবাচক ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রবাসী/অভিবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে কিছু লোক দেশের বাইরে অবস্থান করে বাংলাদেশ এবং সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারনায় লিপ্ত হন। সরকারবিরোধী কর্মকান্ড পরিচালনা, উস্কানিমূলক ও সম্পূর্ণ বানোয়াট বক্তব্য প্রদানকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির/বিচারের মুখোমুখি করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। 

এ লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জানান, অপপ্রচার মোকাবেলা করতে এবং বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলোয় এবং অনলাইন মিডিয়াতে নিয়মিতভাবে তথ্যবহুল সংবাদ, প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশের বিষয়ে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েেেছ। এ বিষয়ে নিয়মিত প্রচেষ্টা চলমান। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অসত্য ও অপপ্রচারমূলক সংবাদ/প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগ এসব প্রতিবেদনের বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যবহুল প্রতিবাদলিপি পাঠিয়ে থাকে, যা ঐ সব গণমাধ্যমে প্রকাশ বা প্রচার করা হয়ে থাকে। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরকারের কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যগুলো তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমন- ফেসবুক পেজ ও টুইটারের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে জানানোর মাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিতকল্পে কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগ এবং বিদেশস্থ মিশনগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত বাংলাদেশ বিষয়ক খবর বা আর্টিকেলগুলো নিয়মিতভাবে মনিটরিং করা হয় এবং অসত্য ও অপপ্রচারমূলক সংবাদ/প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব প্রতিবেদনের বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যবহুল প্রতিবাদলিপি ছাড়াও বিভিন্ন প্রকাশনা পাঠিয়ে থাকে, যা ঐসব গণমাধ্যমে প্রকাশ বা প্রচার করা হয়ে থাকে। সংসদ নেতা জানান, বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোয় এবং অনলাইন মিডিয়াতে নিয়মিত তথ্যবহুল সংবাদ, প্রবন্ধ, ফিচার, ক্রোড়পত্র ও ও নিবন্ধ প্রকাশের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। অপপ্রচারকারীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীদের বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন পোষ্টগুলো নজরদারি করা হয়।

এসি