জুনে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে আরও ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:২১ পিএম, ৩ নভেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
আগামী জুনে জাতীয় গ্রীডে আরও ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপের নারায়ণগঞ্জের সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার ষ্টেশন-২ থেকে জাতীয় গ্রিডে এই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছেন গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান।
তিনি আজ সাংবাদিকদের জানান, আগামী বছরের জুনে সামিটের নারায়ণগঞ্জের সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার ষ্টেশন-২ থেকে জাতীয় গ্রিডে ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। সর্বনিম্ন মূল্যে এ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এইচ ই পিটার হাস আজ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, আইনের শাসন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। সামিটের এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আমেরিকান কোম্পানি জিই’র প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। আমেরিকান কোম্পানি জিই ও স্থানীয় কোম্পানি সামিট এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে। যৌথভাবে এই কোম্পানি গড়ে তোলা আমেরিকান অন্যান্য কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে জ্বালানিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগে উৎসাহিত করবে।
করোনার সময় ভ্যাকসিন দিয়ে আমেরিকা বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলো। বিশ্বের জ্বালানি সংকটের সময় আমেরিকা বাংলাদেশের পাশে থাকবে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের পাশে থাকবো। শুধু গ্যাস, কয়লা বা ডিজেলভিত্তিক গতানুগতিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে নয়, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে আমাদের কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ভবিষ্যতে কাজ করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
বাংলাদেশের সমুদ্র সীমানায় তেল-গ্যাস উত্তোলনে আমেরিকা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে কিনা; এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি বিশেষজ্ঞ নই। তবে বাংলাদেশের সমুদ্র সীমায় থাকা তেল, গ্যাস উত্তোলনের সম্ভাব্যতা আমেরিকান কোম্পানিগুলো যাচাই করে দেখবে।’ তিনি বলেন, আমেরিকা উন্নয়নশীল দেশগুলোর পাওয়ার সেক্টরের উন্নতিতে কাজ করছে। আমেরিকান কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও উন্নতিতে সহায়তা করছে।
আজ দুপুরে তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের চর সানাউল্লায় নির্মাণাধীন সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার কোম্পানি লিঃ-২ ও উৎপাদনে থাকা সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার কোম্পানি লিঃ পরিদর্শন শেষে সিলেটে সামিট বিবিয়ানা পাওয়ার কোম্পানি দেখতে যান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান, ভাইস চেয়ারম্যান লতিফ খান, জিই গ্যাস পাওয়ারের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সিইও দীপেশ নন্দা ও জিই গ্যাস পাওয়ারের কান্ট্রি লিডার নওশাদ আলী প্রমুখ।
সামিটের নির্মাণাধীন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান সামিটের চেয়ারম্যান আজিজ খান। তিনি বলেন, গত ১০ থেকে ১২ বছরে জিডিপি যে শতকরা ৭-৮ ভাগ উন্নতি হয়েছে সেটা বিদ্যুতের কারণে হয়েছে। জিডিপির গ্রোথকে ধরে রাখতে চাইলে বিদ্যুতের প্রয়োজন। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাস থেকে ৬২ ভাগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে ফলে বিদ্যুৎ খরচ কম হবে।
তিনি জানান, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র গ্যাসে চলতে পারে; ডিজেলে চলতে পারে; হাইড্রোজেনে চলতে পারে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কার্বণ নিঃসরণ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ষাট ভাগ কম ও অন্যান্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে চল্লিশ ভাগ কম।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি সরবরাহ সম্পর্কিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের দাম আগের চেয়ে কমেছে। যেটা ষাট ডলার পার এম এম ভি কিউ হয়ে গিয়েছিলো সেটা এখন ২৫ ডলার পার এম এম ভি কিউ হয়েছে। আর কিছুটা কমলে বাংলাদেশের অসুবিধা হবে না।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পেট্রোবাংলার গ্যাস সরবরাহ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি একশত ভাগ নিশ্চিত পেট্রোবাংলা আমাদের গ্যাস দিবে। কারণ এখানে গ্যাস দিলে সর্বনিম্ন মূল্যে বিদ্যুৎ পাবে।’
তিনি বলেন, রাশিয়া বিশ্বের বিশ ভাগ জ্বালানি সরবরাহ করতো। সে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ইউরোপ বাকি বিশ্বের জ্বালানি নিয়ে নিচ্ছে। তবে তাদের সামারে অর্থ্যাৎ জুন-জুলাই মাসে যখন এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হবে তখন তাদের জ্বালানি সবচেয়ে কম লাগে। ফলে এ প্ল্যান্ট চালুর সময় বিশ্ব বাজারে জ্বালানির মূল্য কমে আসবে।- বাসস
এসি