মহামায়া লেকে ক্যাম্পিং করে মুগ্ধ পর্যটকরা
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:২৭ এএম, ৭ নভেম্বর ২০২২ সোমবার | আপডেট: ১১:৩০ এএম, ৭ নভেম্বর ২০২২ সোমবার
আকাশে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে চাঁদের আলো। সে আলোয় চকচক করছে লেকের সচ্ছ পানি। মাঝে মাঝে বাতাসের তোড়ে মৃদু ঢেউ এসে লাগছে কিনারায়। এমন প্রকৃতিতে লেকের পাড়ে ক্যাম্পিং করতে প্রতিনিয়ত ছুটে আসছেন অসংখ্য পর্যটক। ক্যাম্পিং করে মুগ্ধ পর্যটকরা।
একদল সৌন্দর্যপ্রেমী বসে আছেন গোল হয়ে, কয়লার ভাপে সেদ্ধ হচ্ছে বারবিকিউর মাংস। কেউবা ব্যস্ত গিটার নিয়ে, কেউবা আবার গলা ছেড়ে গাইছে গান। আবার কেউ কেউ এককোণে দাঁড়িয়ে ভাব বিনিময়ে ব্যস্ত প্রকৃতির সাথে।
প্রকৃতিতে যখন শীতের বাতাস বইতে শুরু করেছে ঠিক তখনি চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মহামায়া লেকে প্রতিনিয়ত দেখা মিলছে এমন দৃশ্য।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত মহামায়া লেক বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হৃদ। এর আয়তন প্রায় ১১ বর্গ কিলোমিটার। মহামায়া কৃত্রিম লেক ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের রূপে ও মাধুর্যে মুগ্ধ করেছে।
উপজেলার ৮ নম্বর দুর্গাপুর ইউনিয়নের ঠাকুরদিঘী বাজার থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে পাহাড়ের পাদদেশে মহামায়া লেক অবস্থিত। পাহাড়ের কোলঘেঁষে আঁকাবাঁকা লেকটি অপরূপ সুন্দর। এখানে যেমন পাওয়া যায় রাশি রাশি সবুজের সমারোহ তেমনি মনোমুগ্ধকর পাহাড়ি পরিবেশ। সেই সঙ্গে লেকের দৃশ্য বেশ চমৎকার।
প্রায় ৮ বছর আগে থেকে এখানে ক্যাম্পিং শুরু হলেও সম্প্রতি বেড়েছে সুযোগ সুবিধা। আর পর্যটকরা এখন চাইলেই সহজে অবলোকন করতে পারেন অমেয় সেই প্রকৃতির সুধা। ব্যস্ততম জীবন থেকে কিছুটা সময় প্রকৃতির সঙ্গে কাটানোর সুযোগও হয়েছে এই ক্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে।
গত ৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে ৫ বন্ধু এসেছিলেন মহামায়া লেকে। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। সেমিস্টার ফাইনাল দিয়ে কিছুটা রিফ্রেশমেন্টের জন্য তারা বেচে নেন মহামায়া লেকে ক্যাম্পিং। তাদের মধ্যে সাফায়েত কবির নামে একজন জানান, মহামায়া লেকে ক্যাম্পিংয়ের অভিজ্ঞতার কথা।
তিনি বলেন, “আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পেইজের মাধ্যমে যোগাযোগ করে মহামায়া লেকে ক্যাম্পিং করতে আসি। এখানে এসে যে পরিমাণ মজা পেয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা। বিকেল হলে যখন সূর্যের তাপ কমে যায় তখন পরিবেশ একদম শান্ত হয়ে যায়। সন্ধ্যার আগে আগে শুরু হয় পাখির কলকাকলি। প্রকৃতির সঙ্গে গান-গল্পে-আড্ডায় কেটেছে পুরো রাত। এমন স্মৃতি মনে রাখার মতো।”
মহামায়া কায়াকিং এন্ড ক্যাম্পিং পয়েন্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী মো. সেলিম বলেন, “ক্যাম্পিংয়ে হ্যামোক, তাঁবু, রাতের খাবার, ক্যাম্প ফায়ারিং, বারবিকিউ, সকালের খাবারের সুবিধা দিয়ে থাকি। এখানে প্রতিনিয়ত অসংখ্য পর্যটক আসছেন। আশা করছি শীত এলে পর্যটক আরও বাড়বে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সব সময় চাই স্বল্প খরচে সেবা দিতে। এখনও পর্যন্ত যত পর্যটক এসেছেন তাদের হাসিমুখে বিদায় দিয়েছি। মহামায়ার লেকের পাড়ে বসে যেমন প্রকৃতি দেখা যাবে তেমনি এখানকার নিরব পরিবেশ মনের শান্তি জোগাবে। তাই যারা কায়াকিংয়ের চিন্তা করছেন তারা পছন্দ তালিকার শীর্ষে রাখতে পারেন মহামায়া লেক।”
এএইচ