ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেবেন না সাকিব!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৪৪ পিএম, ৮ নভেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

সাকিব আল হাসান

সাকিব আল হাসান

২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাইরের বিতর্ক যেমন বাংলাদেশ দলকে চাপে ফেলে দিয়েছিল, এবার অবশ্য তেমনটা হয়নি। আগের বারের অভিজ্ঞতা থেকে অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে দলকে আগলে রেখেছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অধিনায়ক নিয়ম জারি করেছিলেন, দলের ভেতরের কথা বাইরে প্রচার করা যাবে না। সব ধরনের বিতর্ক থেকে ক্রিকেটারদের দূরে রাখার চেষ্টা করেন তিনি। 

বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট অধিনায়ক এ নিয়মটা বহাল রাখতে চান আসন্ন দ্বিপক্ষীয় সিরিজেও। দল গঠন থেকে শুরু করে পরিচালনার ক্ষেত্রেও চান পূর্ণ স্বাধীনতা।

জাতীয় দল নির্বাচনে সাধারণত কোচ এবং অধিনায়কের মতামত নেয়া হয়। নির্বাচক কমিটির সদস্যও যে তারা। সেদিক থেকে অধিনায়কের হাতে সেরা দলটাই তুলে দেয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টিও পরোক্ষে দল নির্বাচনে ঢুকে পড়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল নিয়েও তেমন কিছু ওজর-আপত্তি ছিল। যদিও প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট শেষে বিশ্বকাপে সেরা দলটাই বেছে নেয়া হয়েছে। 

বিশ্বকাপে প্রবেশের পর থেকে সাকিব হয়ে গিয়েছিলেন অন্য মানুষ। তিনি নিয়ম করে দিয়েছিলেন, দলের ভেতরের কথা কোনোভাবেই বাইরে যাওয়া চলবে না। এর পরও ফাঁক গলে কিছু তথ্য বেরিয়ে পড়ে। সেটা নিয়ে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের কাছে ব্যাখ্যা দাবি করে বসেন টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীধরন শ্রীরাম। বিষয়টি বেশি দূর বাড়তে পারেনি সাকিবের কারণে। সাকিব টিম রুলস জারি করায় পরিচালকরা অস্ট্রেলিয়ায় গেলেও তাই দলের খুব কাছে যেতে পারেননি। যে কারণে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ব্রিসবেনে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় দেখেই দেশে ফিরে গেছেন।

টিম ম্যানেজমেন্টের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভবিষ্যতেও জাতীয় দলের খেলা চলাকালে কর্মকর্তাদের দূরে রাখতে চান সাকিব। অধিনায়ক সাকিব এবং কোচ শ্রীরামের দৃষ্টিতে বাংলাদেশ দল সেরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছে অস্ট্রেলিয়ায়। বাইরের কোনো বিতর্ক স্পর্শ করতে পারেনি দলকে। কিন্তু একটু খতিয়ে দেখলে বিষয়টি অন্যভাবে দেখা যেতে পারে। এই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ জিতেছে কোয়ালিফাইং খেলা নেদারল্যান্ডস ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। 

যদিও ভারত-পাকিস্তানের মতো বড় কোনো দলকে হারাতে পারেনি তারা। জিম্বাবুয়ে হারিয়েছে সেমিফাইনালে উন্নীত হওয়া পাকিস্তানকে আর নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ দল টুর্নামেন্ট শেষ করেছে গ্রুপের পঞ্চম দল হিসেবে। সেরা বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের অবস্থান ছয় দলের মধ্যে পঞ্চম। 

ফলাফলের দিক থেকে যেমনই হোক, শৃঙ্খলা ধরে রাখার ক্ষেত্রে সাকিবের দল একেবারেই সফল। তবে সাকিব নিজে ব্যক্তিগতভাবে সমালোচিত হয়েছেন ব্রিসবেনে প্রবাসীদের দেয়া সংবর্ধনায় বিতর্কিত মন্তব্য এবং ছবি না তুলে। সিডনিতে বাণিজ্যিক সংবর্ধনায় যোগ দিয়ে হয়েছেন সমালোচিত। যেখানে অধিনায়ক নিজেই টিম রুলস ভাঙেন, সেখানে স্বাধীনতা চাওয়া এবং পাওয়ার মধ্যে একটা দূরত্ব থাকবেই। 

তবে, সাকিবের ঘনিষ্ঠজনসূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতা দেয়া হলে টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি দলকে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়ে যেতে চান তিনি। আর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হলে নেতৃত্ব ছেড়ে দেয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছেন তিনি। দল নির্বাচন আর পরিচালনায় বাইরের কোনো হস্তক্ষেপ মেনে নেবেন না সাকিব।

এনএস//