ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

কুয়াকাটায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:০২ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০২২ রবিবার

পর্যটন নগরী কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত এলাকায় অবৈধভাবে ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাসরত চার শতাধিক পরিবারকে শনিবার সকালে উচ্ছেদে নামে জেলা প্রশাসন। বিপুল সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিকে উপেক্ষা করে ওই সকল পরিবারের সহস্রাধিক নারী পুরুষ ‘আগে পুনর্বাসন এবং পরে উচ্ছেদ’ এমন স্লোগান নিয়ে রাস্তায় নামে। 

এসময় বিক্ষোভকারীরা কুয়াকাটা ধানসিঁড়ি বাংলোর সামনে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কে অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে প্রায় দুই ঘন্টা পর আপাতত উচ্ছেদ অভিযান না চালানোর জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষে কলাপাড়া ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা সড়কের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ায়। 

বিক্ষোভকারীরা জানান, তারা ৫০/৬০ বছর ধরে বেড়িবাঁধের বাহিরে সরকারী জমিতে ঘরবাড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন। হঠাৎ করে শুক্রবার রাতে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। কোন প্রকার নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে বাধ্য হয়েছেন। 

বিক্ষোভকারীদের দাবী, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা আগে করে তারপর প্রশাসন উচ্ছেদ করুন। খাস জমিতে বসবাসকারী ৭০ বছর বয়সী দুলাল মিয়া জানান, এখনই উচ্ছেদ করলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে তাদের পথে বসতে হবে। তাই পুনর্বাসন না করে উচ্ছেদে নামলে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করবেন তারা। 

একই স্থানের ষাটোর্ধ্ব আঃ রহিম জানান, প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও তারা তাদের পূর্বপুরুষের কবরের জায়গা ধরে রাখবেন। বিক্ষোভে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টের পুর্বদিকে বেড়িবাঁধের বাহিরে সরকারী জমিতে বসবাসকারী নারী শিশুসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের পূর্বপাশে দুই কিলোমিটার এলাকার ৭৩ একর জমির মালিকানা দাবী নিয়ে সরকারের সাথে স্থানীয় মনির আহম্মেদ ভূইয়া গং ও সিরাজুল ইসলাম মিয়াজী গংদের সাথে ১৯৭২ সাল থেকে মামলা চলছিল। এ মামলায় কখনও সরকার পক্ষ আবার কখনও পাবলিকের পক্ষে রায় দেয় আদালত। ৫০ বছর ধরে এ মামলা চলমান রয়েছে। গত ১০ নভেম্বর ২০২২ ইং পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করলে জেলা প্রশাসক সরকারী জমিতে থাকা বাড়িঘর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়। গত শুক্রবার ২৯৩ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ সম্পন্ন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধের বাহিরে সৈকত লাগোয়া দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সরকারী জমি। সরকারী জমি দীর্ঘ বছর ধরে ভূয়া মালিকানা দাবীতে ভোগদখল করে আসছিল কতিপয় অবৈধ বসবাসকারীরা। আদালত কর্তৃক মালিকানা দাবী নামা নিষ্পত্তি হয়েছে। এই জমি এখন সরকারের। তাই সরকারী জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয়। 
কেআই//