ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বাগেরহাটে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রভাবে শিশুসহ ২৫০ রোগী ভর্তি 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৫:৪১ পিএম, ১৬ নভেম্বর ২০২২ বুধবার

হঠাৎ করে শীত পড়ায় বাগেরহাটে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগের প্রকোপ। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত বেশি। প্রতিনিয়ত জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে জ্বর, সর্দি, কাশি আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে জেলা হাসপাতালে আসছেন অভিভাবকরা। জেলা হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ৯‘শ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বহির্বিভাগে। এর সঙ্গে রয়েছে ভর্তি থাকা রোগী ও স্বজনদের চাপ। অতিরিক্ত রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। আবহাওয়ার পরিস্থিতি বিবেচনায় নাগরিকদের আরও বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানাযায়, ঠাণ্ডাজনিত কারণে বেড়েছে বয়ষ্ক ও শিশু রোগীর সংখ্যা। গেল কয়েক দিন ধরে জেলা হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার দিগুণের বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে। শয্যা সংকট দেখা দেওয়ায় হাসপাতালের মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেক রোগী। গেল এক সপ্তাহে প্রায় ২৫০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে। 

বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর পর্যন্ত একশ শয্যার বিপরীতে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ৩৬ জন শিশুসহ মোট ২৩৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

কানিজ ফাতেমা নামরে এক নারী বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আমার ছেলের জ্বর। ঔষধ খাওয়াইছি, কিন্তু কোন উপকার হয়নি। যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।

২ মাস তেরদিন বয়সী শিশু আব্রাহিম নাইমকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মা হালিমা বেগম বলেন, কয়েকদিন ধরে বাচ্চার জ্বর, সর্দি ও কাশি। এখানে ভর্তি হলে ডাক্তাররা এক্সরে করতে বলেছে। এক্সরেতে দেখা গেছে ছেলের বুকে কাশি জমে শুকিয়ে গেছে। সুস্ হতে সময় লাগবে।

পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের ইব্রাহিম শেখ বলেন, হঠাৎ করে ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তাই সোমবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখন কিছুটা ভালো।

শুধু বাগেরহাট জেলা হাসপাতাল নয়, বাগেরহাট জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোরও একই অবস্থা। ঠান্ডা জনিত রোগের সাথে ডেঙ্গু যেন মরার উপর খারার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে বাগেরহাটবাসীর জন্য। বর্তমানে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ২২জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে। এছাড়া জেলায় মোট ১২৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। আক্রান্তদের অনেক সতর্কভাবে সেবা দিতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।

বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দায়িত্বরত সেবিকা সীমা আলো হালদার বলেন, নিউমোনিয়াসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই শিশু রোগীরা ভর্তি হচ্ছে। অনেক বেশি রোগী হওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।

বাগেরহাট ২৫০ শয্যা রাজিয়া নাসের জেলা হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. হুসাইন সাফায়াত বলেন, আমাদের ২৫০ শয্যার অনুমোদন থাকলেও জনবল রয়েছে একশ শয্যার। এই অবস্থায় রোগীর চাপ থাকলেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।

তিনি আরও বলেন, ঠাণ্ডাজনিত রোগীর প্রকোপ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইনডোর ও আউটডোর দুই জায়গাতেই জ্বর, সর্দি, কাশি, নিমোনিয়াসহ নানা ধরণের রোগী আসছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৯‘শ থেকে এক হাজার রোগীকে সেবা প্রদান করে থাকি। আসলে স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে এই সেবা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। হাসপাতালে বিদ্যমান জনবল বৃদ্ধি পেলে রোগীদের আরও বেশি সেবা প্রদান করতে পারবেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।
কেআই//