ঢাকা, সোমবার   ০৭ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২১ ১৪৩১

পরী যে উপহার দিয়েছে, তা পৃথিবীর কাউকে বলতে পারব না: রাজ

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৬:০৪ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০৬:০৭ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২২ শনিবার

গত মাসে রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে বেশ জমকালোভাবেই চিত্রনায়িকা পরীমনির জন্মদিন উদ্‌যাপন করা হয়েছে। ভেন্যুর সাজসজ্জাও ছিল নজরকাড়া। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পরীমনির স্বামী চিত্রনায়ক শরীফুল রাজও  জন্মদিনের উৎসব জমিয়ে তুলেছিলেন। অথচ তাঁর নিজের জন্মদিনটি উদ্‌যাপিত হচ্ছে অনেকটাই নীরবে। গতকাল শুক্রবার ঢাকাই ছবির বর্তমান আলোচিত নায়ক শরীফুল রাজের জন্মদিন। সন্তানের সঙ্গে প্রথম জন্মদিন এটি তার।

কীভাবে শুরু হলো জন্মদিনের প্রথম প্রহর? জানালেন ১২টা ১ মিনিটে স্ত্রী পরী ও তিন মাসের সন্তান রাজ্যকে নিয়ে বাসায় কেক কেটেছেন রাজ। বলেন, ‘বিয়ে, সন্তান—এসবের আগে আমি যখন একা ছিলাম, তখন আমার মতো করে আড্ডা মেরে, ফুর্তি করে জন্মদিন উদ্‌যাপন করেছি। কিন্তু এবার একেবারেই নিজের মতো করে আমরা তিনজন বাসায় জন্মদিনের কেট কেটেছি। বাইরের কাউকে রাখতে চাইনি। নিজের জন্মদিন নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চেয়েছি। এমনকি জন্মদিনের কেক কাটার ছবিও তুলিনি আমরা।’

জন্মদিনের রাতে স্ত্রী পরীমনির কাছ থেকে একটি উপহারও পেয়েছেন বলে জানান রাজ। তবে সেটি কী, তা প্রকাশ করতে চাননি এই অভিনেতা, ‘উপহার হিসেবে পরী যে জিনিসটি আমাকে দিয়েছে, তা পৃথিবীর কাউকে বলতে পারব না।’

জন্মদিনের পুরো দিনটিই পরিবারের তিনজন মিলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন রাজ। জানালেন পরিবার হওয়ার আগে একসময় ধানমন্ডি ১৫ নম্বর, রবীন্দ্রসরোবর, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড এলাকাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা মেরে, গল্প করে সময় কেটেছে তাঁর। জন্মদিনে তিনজন মিলে সেসব জায়গায় ঘুরেছেন। বলেন, ‘আমি একসময় যেসব জায়গা থেকে এ পর্যায়ে উঠে এসেছি, জায়গাগুলো আমার পরিবারের সদস্যদের দেখিয়েছি। কারণ, আমি খুবই স্মৃতিকাতর মানুষ, আবেগপ্রবণ মানুষ।’

এ প্রসঙ্গ ধরে রাজ আরও বলেন, ‘একসময় ঢাকায় আমার থাকার জায়গা ছিল না। মহাখালীসংলগ্ন একটি শুটিং হাউস ছিল পরিচালক রেদওয়ান রনি ভাইয়ের। ওখানেই রাতে ঘুমাতাম। যেদিন রাতে হাউসে শুটিং থাকত, আমি মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে একটি জায়গায় সেদ্ধ ডিমের দোকানে শুটিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত সময় কাটাতাম। এভাবে অনেক দিন ভোররাতে গিয়ে হাউসে ঘুমিয়েছি।’

বউ ও সন্তানের সঙ্গে প্রথম জন্মদিন উদ্‌যাপনের দিনে নিজেকে সৌভাগ্যবানও বললেন আবার দুর্ভাগ্যবানও বললেন রাজ। বোঝা গেল কথার মধ্যে কোথাও যেন একটু দুঃখবোধও কাজ করছে এই অভিনেতার।  

এ প্রসঙ্গে রাজ বলেন, ‘আমার আর্থিক অবস্থাটা যদি আরও ভালো থাকত, তাহলে আমার সংসার, আমার স্ত্রী, সন্তানকে আরও বেশি সময় দিতে পারতাম, কেয়ার নিতে পারতাম। এখন আমাকে শুটিংয়ে যেতে হয়, কাজে যেতে হয়। এসবের ফাঁকে ফাঁকে পরিবারকে সময় দিতে হয়। আমি যদি পুরো সময়টাই পরিবারকে দিতে পারতাম, তাহলে আমার ভালো লাগত। এ কারণে দুর্ভাগ্যের কথা বললাম।’

রাজের স্ত্রী পরীমনির ফেসবুকে লেখা দুটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে বিদ্যা সিনহা মিম ঘোষণা দিয়েছেন রাজের সঙ্গে আর কাজ করবেন না। এ ব্যাপারে রাজ বলেন, ‘আমি এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই না। কারণ, এ বিষয় নিয়ে আমি প্রশ্ন জন্ম দিই নাই, কাউকে কিছু বলি নাই। এই বিষয়টি আমার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হলো কাজ, আমার পরিবার। আর এটি আমি আমার বাবা-মার কাছ থেকে শিখেছি। সংসার, পরিবার মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। সংসার সবার আগে। আমার বাবাকে দেখছি সংসারকে অগ্রাধিকার দিতে। সারাটা জীবন সংসারের জন্য কাজ করে গেছেন বাবা। আমার জীবনটাও এর বাইরে নয়।’

রাজ আরও বলেন, ‘অন্য কোনো কিছু নিয়ে আমার আক্ষেপ নাই। বাট এ কয়েক দিন ধরে যা যা হয়েছে, কেন হয়েছে, কী কারণে হয়েছে—এসবের উত্তর আমার কাছে নাই। যদি থাকত বলতে পারতাম, এই কারণে এই সব হয়েছে। যেহেতু এসব ঘটনা আমার কাছ থেকে প্রকাশ হয় নাই, তাই এসব নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নাই।’

পরীমনির সম্প্রতি দুটি স্ট্যাটাস নিয়ে কী বলবেন? এমন প্রশ্নে রাজের বক্তব্য, ‘আমার ঘরে বউ, বাচ্চা রেখে আমি সারা রাত ধরে অন্য মেয়ের সঙ্গে কেন কথা বলব? কেন প্রেম করব? আরে আমি তো সেই রকম ছেলে না, লুকিয়ে প্রেম করব। কোনো মেয়ে পছন্দ হলে পরীকেই সরাসরি বলতে পারি। কিন্তু আমার তো এখন পরিবার আছে। আমি পরিবার রেখে এসব করব কেন? পরী হয়তো তাঁর আবেগ, অভিমানের জায়গা থেকে এসব করেছে। তবে সেটার দায়িত্ব আমি নেব না। নিতে চাইও না।’

এসবি/