ঢাকা, সোমবার   ০৭ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২১ ১৪৩১

চলনবিলে শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী বাউত উৎসব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২৯ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২২ শনিবার

বন্যার পানি কমে গেলে বিলের খালে জমে থাকা পানিতে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মাছ ধরার নাম বাউত উৎসব। সিরাজগঞ্জের তাড়াশের চলনবিল এলাকার সগুনায় কাটাবাড়ি বিল ও গুমানী নদীর মোহনায় অতীত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় শুরু হয়েছে বাউত উৎসব। 

শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ উৎসবে শোল, বোয়াল, কাতলা-মৃগেলসহ নানা প্রজাতির মাছ ধরতে নেমেছিল অপেশাদার ও সৌখিন ২ শতাধিক মাছ শিকারী। খালে আল্লাহর নাধে ধনি দিয়ে শুরু হয় এই মাছ ধরা। আগামী ২ মাস জুড়ে চলনবিলের বিভিন্ন অঞ্চলে হবে এই বাউত উৎসব।

স্থানীয়রা জানান, চলনবিলের দেশিয় মাছের প্রাচুর্যের কারণেই বিভিন্ন উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ শিকার করতে আসা লোকজন জমিয়ে তুলতো মাছ শিকারের সেই সব এলাকা। আর তৎকালীন মাছ শিকারের এই উৎসবই স্থানীয়ভাবে এলাকার লোকজনের কাছে পলো বা বাউত উৎসব নামে পরিচিত বলে জানান, কাটাবাড়ি বিলে মাছ শিকার করতে আসা ধামাইচ এলাকার মাছ আজিমুদ্দিন মিকারী (৫৫)। 

তিনি জানান, বাউত বা পলো উৎস এলাকার ঐতিহ্য। প্রতিবার এ সময়টাতে শুরু হয় এই উৎসব। তবে আগের মত মাছ নেই।

কাটাবাড়ি গ্রামের বৃদ্ধ সিরাজুল হক জানান, অতীতে তাড়াশ এলাকায় বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পরেই বিশেষ করে অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে বা শীতের মধ্যে সকালে বিভিন্ন জলাশয়ে দলবদ্ধ হয়ে দিনক্ষণ ঠিক করা হয় বাউত উৎসবের। সে অনুযায়ী এলাকাবাসী ছেলে, মেয়েদের নিয়ে মাছ শিকার করেন। এতে উপকরণ হিসেবে পলো, বেড় জাল, হেসি জাল, ঠেলা জাল, ধর্মজাল ব্যবহার করা হতো। তবে এখন পুরুষরাই এ কাজে মেতে ওঠে। আর বাড়িতে বউজি ও মেয়েরা অপেক্ষা করে মাছের জন্য। এখন আমেজ থাকলেও পর্যপ্ত সেই মাছ মেলে না।

এ ব্যাপারে তাড়াশ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক শফিউল হক বাবলু বলেন, অতিতে পলো বা বাউত উৎসব অনেক হলেও এখন তেমনি আর হয়না। বর্তমানে জলাশয় ভরাট, বিলের তলায় পলি জমে তা আবাদী জমিতে পরিণত হওয়াসহ নানা উপায়ে খাস সম্পত্তি দখল ও মালিকানায় রুপান্তরিত হয়েছে। ফলে পলো বা বাউত উৎসব করে মাছ শিকার করার স্থানও কমে এসেছে। এজন্য সরকারের যথাযথ ভুমিকা রাখা প্রয়োজন। 
কেআই//