লক্ষ্মীপুরে বেগুনি রঙের ধান চাষ, বাম্পার ফলন
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:৫৬ এএম, ২৯ নভেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার
লক্ষ্মীপুরে চলতি আমন মৌসুমে ৪০ শতক জমিতে বেগুনি রঙের ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন সিরাজ উদ্দিন। সবুজ ফসলের মাঠে এই ভিন্ন রং ও ভিন্ন জাতের ধান চাষ করে সবার দৃষ্টি কেড়েছেন লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলার শাকচর ইউনিয়নের শাকচর গ্রামের এই কৃষক।
বেগুনি রঙের ধান চাষের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তা একনজর দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমান স্থানীয়রা।
এদিকে, লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন জানান, বেগুনি রঙের ধান চাষ সম্পর্কে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
জার্নাল অব অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রির একটি গবেষণার উঠে এসেছে, বেগুনি রঙের ধানের চালের ভাত হৃদরোগ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে এবং লিভার সচেতজ রাখে।
মাঠে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চর আলী হাসান গ্রামে বেগুনি রঙের ধান কেটে মাড়াই করছেন সিরাজ উদ্দিন। ফলনও হয়েছে ভালো। শতক প্রতি ৫০ কেজি ধান পাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। চিকন কিংবা মোটা নয়, মাঝারি ধরনের এ ধানের চালের ভাত খেয়ে ভবিষ্যতে এ ধান চাষ ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।
ধান বেগুনি হলেও গাছের পাতা সবুজ। তাই কৃষকদের কাছে এই ধান বেগুনি রঙের ধান বা রঙিন ধান নামে পরিচিতি পেতে শুরু করেছে।
গণনা করে প্রতি শীষে গড়ে ২১৬টি ধান পাওয়া গেছে।
সিরাজ উদ্দিন জানান, একই এলাকার বর্গা চাষী তার জামাতা আজাদ এক বন্ধুর মাধ্যমে চীন থেকে ৩ কেজি ধান এনেছিলেন চাষ করার জন্য। কিন্তু তিনি জমি না পাওয়ায় পরে ধানগুলো তাকে দিয়ে দেন। সেগুলো অন্য ধানের মতোই নিজের জমিতে চাষ করেন। প্রথম বছরই ফলন ভালো হয়েছে।
তিনি জানান, অন্যান্য জাতের ধানের চেয়ে বেগুনি রঙের ধানের কুশির সংখ্যা বেশি হওয়ায় এ ধানের ফলন বেশি হয়েছে। ধানের শীষের গোড়া শক্ত, তাই ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের বাতাসে ধান নুয়ে পড়েনি। পোকা-মাকড়ের আক্রমণও কম ছিল। ক্ষেতে একবার করে সার ও কীটনাশক দিয়েছেন।
রোপণের সময় প্রতি গোছায় ২-৩টি ধানের চারা রোপণ করেছিলেন। কিন্তু ধান কাটার সময় প্রতি গোছায় ১৫-১৬টি ধানের শীষ পেয়েছেন। চাল ও ভাতের রং এবং স্বাদ কেমন হবে, তা জানাতে পারেননি তিনি।
সিরাজ উদ্দিনের প্রতিবেশী রেনু বেগম জানান, এবারই প্রথম বেগুনি রঙের ধান দেখলাম। সবুজ মাঠে বেগুনি ধান দেখতে খুবই সুন্দর লেগেছে।
লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. জাকির হোসেন জানান, বেগুনি ধান চাষের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিদিন স্থানীয়রা একনজর দেখতে ভিড় জমান ওই ধান ক্ষেতে।
এএইচ