বিদায় বেলজিয়াম, বিদায় সোনালি প্রজন্ম
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:০৯ এএম, ২ ডিসেম্বর ২০২২ শুক্রবার
গোটা ম্যাচে আধিপত্য নিয়ে খেলে, একের পর এক আক্রমণ করেও ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করল বেলজিয়াম। ফলে রবার্তো মার্টিনেসের দল ছিটকে গেল বিশ্বকাপ থেকেই। এর সঙ্গেই শেষ হলো বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের।
কারণ, এই দলের অনেক ফুটবলারকেই আর দেখা যাবে না পরবর্তী বিশ্বকাপে।
এই ম্যাচে বেলজিয়াম যা মিস করেছে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা অসম্ভব। রোমেলু লুকাকু একাই দ্বিতীয়ার্ধে হ্যাটট্রিক করে ফেলতে পারতেন। কিন্তু কোনোবারই বল ক্রোয়েশিয়ার জালে জড়ায়নি।
কিছুদিন আগেই বেলজিয়ামের তারকা ফুটবলার কেভিন দ্য ব্রুইন বলেছিলেন, বিশ্বকাপ জেতার ক্ষমতা নেই তাদের। কারণ দলের ফুটবলাররা ‘বুড়ো’ হয়ে গেছেন। সেই কথা যে আক্ষরিক অর্থেই সত্যি, তা প্রমাণিত হলো বৃহস্পতিবার। গতবারের তৃতীয় স্থানাধিকারী বেলজিয়াম কাপ জেতা তো দূর, ছিটকে গেল এবারের গ্রুপ পর্ব থেকেই।
ইপিএল-সহ ইউরোপের বিভিন্ন লিগে দাপটের সঙ্গে খেলেন বেলজিয়ামের প্রথম একাদশের প্রায় সব ফুটবলার। তা সত্ত্বেও দেশের হয়ে চূড়ান্ত ব্যর্থ তারা। গোটা দল একত্রিত হয়ে খেলতেই পারেনি বিশ্বকাপে। স্বপ্ন দেখিয়েও বার বার ব্যর্থ হয়েছেন তারা।
ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয়। তবে বেশি আধিপত্য নিয়ে খেলছিল বেলজিয়ামই। এই ম্যাচ তাদের কাছে বিশ্বকাপে বেঁচে থাকার ম্যাচ ছিল। খেলছিলও সেভাবেই। রক্ষণে পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন জ্যান ভার্টোঙ্গেন এবং টবি অল্ডারওয়েরেল্ড।
আক্রমণে তেমনই ঝড় তুলছিলেন কেভিন দ্য ব্রুইন এবং ইয়ানিক কারাস্কোরা। তবে খেলার বিপরীতে ১৫ মিনিটেই পেনাল্টি পেয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। বক্সের মধ্যে পড়ে যান কারাস্কো। তাকে আঘাত করেন ক্রামারিচ।
সেই পেনাল্টি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ চলে নাটক। পেনাল্টি স্পটে বল বসিয়ে অপেক্ষা করছিলেন লুকা মদ্রিচ। এসময় রেফারি ভিএআর-প্রযুক্তির সাহায্য নেন। দেখা যায়, আক্রমণের সময়ই অফসাইডে ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার দেজান লোভরেন। ফলে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বাতিল করে বেলজিয়ামকে ফ্রি-কিক দিয়ে দেন রেফারি।
৩৩ মিনিটের মাথায় ব্রোজোভিচের শট দারুণভাবে বাঁচিয়ে দেন বেলজিয়ামের ডেনডকার। বিরতির কিছুক্ষণ আগে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় ক্রামারিচের শট। তার পরেই ক্রোয়েশিয়ার জুরানোভিচের একটি হেড গোললাইন থেকে ক্লিয়ার হয়ে যায়। বিরতিতে সাজঘরে ফিরেই বেলজিয়াম ফুটবলাররা নিশ্চয়ই জানতে পেরেছিলেন কানাডার বিরুদ্ধে ১-১ ড্র চলছে মরক্কোর খেলা।
৫১ মিনিটের মাথায় দ্য ব্রুইনের শট গোলের বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যায়। তিন মিনিট পরে ব্রোজোভিচের শট বাঁচিয়ে দেন বেলজিয়াম গোলকিপার থিবো কুর্তোয়া। পরের মিনিটেই তিনি মদ্রিচের শট বাঁচান। গোলের লক্ষ্যে লুকাকুকে নামিয়েছিলেন মার্টিনেস। ৬০ মিনিটে সেই লুকাকুর শট পোস্টে লাগে, যা অনায়াসে গোল করা উচিত ছিল। দু’মিনিট পরে আবার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন ইন্টার মিলান তারকা। দ্য ব্রুইনের ক্রস থেকে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় বল পেলেও হেড করেন বাইরে।
এরপর বেশ কিছুক্ষণ উল্লেখযোগ্য আক্রমণ করেনি দুই দলের কেউই। তবে দুই দলই গোলের সন্ধানে আপ্রাণ চেষ্টা করছিল। একবার ক্রোয়েশিয়া আক্রমণ করছিল তো, পর ক্ষণেই বেলজিয়ামের আক্রমণ আসছিল।
নির্ধারিত সময় শেষের তিন মিনিট আগে আবার সুযোগ নষ্ট করেন লুকাকু। মিউনিয়েরের ভাসানো বলে সরাসরি হেড করার বদলে বুকে রিসিভ করতে যান। সঙ্গে সঙ্গে বল ধরে নেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার। ওখানেই আশা শেষ হয়ে যায় বেলজিয়ামের। গ্রুপের অন্য ম্যাচে ২-১ ব্যবধানে কানাডাকে হারানোয় ক্রোয়েশিয়াকে সঙ্গী করে গ্রুপ শীর্ষে থেকেই পরের পর্বে গেল মরক্কো।
এনএস/