সয়াবিন চাষে সুখবর, দেশেই মিলছে ভালো ফলন (ভিডিও)
মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৩৯ এএম, ৫ ডিসেম্বর ২০২২ সোমবার
দেশে সয়াবিন চাষে আসছে সুখবর। গবেষণাগারে সফলতার পর এবার কৃষক পর্যায়ে সয়াবিনের চারটি উচ্চফলনশীল জাতের চাষে মিলেছে ভালো ফলন। নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে এই মাঠ গবেষণা পরিচালনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। চলতি রবি মৌসুমের পর নতুন জাতগুলোকে অবমুক্ত করার বিষয়ে আশাবাদী তারা।
সয়াবিন চাষে তৃপ্তির হাসি নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের চাষীদের মুখে। বিইউ-১ ও বিইউ-২ দুটি জাতের পর এবার আরও উচ্চ ফলনশীল সয়াবিন চাষে মিলেছে ভালো ফলন।
চাষিরা জানান, “এটা করে আমরা প্রচুর লাভবান হচ্ছি। আগে শতকে ৭-৮ কেজি করে সয়াবিন পেতাম, এখন শতকে পাচ্ছি ১৩ থেকে ১৪ কেজি। আগে অল্প কিছু জমিতে চাষ হতো, এখন রামগতি, কমলনগর, সুবর্ণচর, রায়পুর- এসব জায়গায় গেলে রবি মৌসুমে দেখতে পাবেন সয়াবিন আর সয়াবিন।”
সলিডারিড্যাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার সয়াবিন চাষ প্রকল্পের সমন্বয়ক ফরহাদ হোসেন বলেন, “একটি লাইনের মধ্যে এসিএস থ্রি ওয়ান থ্রি লাইনের সফলতা ভালো। এটা কাঁদা মাটিতে ছিটিয়ে দেওয়ার পরও দেখা যাচ্ছে সে জার্মিনেট করছে। প্রায় শতভাগ জার্মিনেশন পাচ্ছি।”
এক যুগেরও বেশি সময়ে সয়াবিন নিয়ে গবেষণা করে আসছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। লবণ সহিষ্ণু, খরা সহিষ্ণু কিংবা অধিক পানি সব পরিবেশেই ভালো ফলন আসছে উদ্ভাবিত নতুন জাতে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ করিম বলেন, “পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ২শ’ জাম প্লাজো আমরা সংগ্রহ করে এর উপর গবেষণা শুরু করি। ২শ’ লাইনের মধ্যে ৪টি লাইনে ভালো সফলতা পেয়েছি। একটি লাইন অবমুক্ত করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করবো।”
পুষ্টি বিশ্লেষণে নতুন এসব জাতে প্রোটিন, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়ামসহ সব ধরণের পুষ্টি উপকরণ দেশে প্রচলিত সব সয়াবিনের চেয়ে বেশি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এ এ মান্নান বলেন, “আমাদের বিইউ-১ ও বিইউ-২ ও এই ৪টি জাতের মধ্যে প্রোটিন যেমন অত্যধিক, এর মধ্যে কিছু কিছু জিঙ্কা সমৃদ্ধ, কোনটায় আছে উচ্চ ক্যালসিয়াম, কোনটায় পটাশিয়াম। যখন কৃষক বলবে ফলন ভালো তখন সরকারের কাছে অনুমোদন চাওয়া হবে কৃষকের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য।”
সলিডারিড্যাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান বলেন, “কোয়ালিটি অনেক ভালো, দানার সাইজটাও অনেক ভালো।”
ভুট্টা চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের মত দেশজুড়ে সয়াবিন চাষকে জনপ্রিয় করা গেলে, বাজারে যোগান উত্তরোত্তর বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এএইচ