হঠাৎ পঙ্গু পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অনিক, সাহায্য চান দিনমজুর বাবা
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৩০ এএম, ৬ ডিসেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার তালপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অনিক ইসলাম। বয়স মাত্র ১৪ বছর। গত চার মাস আগে প্রতিবেশির ঘরের টিনের চালা ঠিক করতে গিয়ে বৈদ্যুতিক শকে অসুস্থ হয় অনিক। সেই বৈদ্যুতিক শকে তার প্রাণ না গেলেও বর্তমানে পঙ্গুত্ব ও দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে সে।
সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের পূর্ব নারগুন গ্রামের দিন মজুর আব্দুর রহিমের বড় ছেলে অনিক। যে বয়সে স্কুলের সহপাঠিদের সঙ্গে পড়াশোনা ও খেলাধূলায় দুরন্তপনার বয়স তার। কিন্তু আজ এই বয়সে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মাথার এক অংশ ও গলার একপাশ পুড়ে যায় এবং পায়ের আঙ্গুলে আঘাত প্রাপ্ত হলে সেই আঙ্গুলটিও চিকিৎসকের পরামর্শে কেটে ফেলতে হয়।
এতে সে অসহনীয় কষ্টে ও দুর্বিসহ জীবন পার করছে। বর্তমানে সে ঠিকভাবে চলাফেরা ও ঘার নড়াচড়া করতে পারছে না। স্কুলে যাওয়া ও খেলাধূলাও বন্ধ তার।
তার চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে ধারদেনা করে অনেক টাকা ব্যয় করেছেন তার দরিদ্র বাবা। আর এই চিকিৎসার খরচ ব্যয়বহুল হওয়ায় বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না পরিবারটি।
সন্তানের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানসহ প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়ে তার বাবা আব্দুর রহিম জানান, চার সদস্যের পরিবার, দিন মজুরি করে ভালই চলছিল সংসার। বড় ছেলে অনিক ইসলাম পঞ্চম শ্রেণিতে ও ছোট ছেলে নিরব ইসলাম প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে। একদিন তার প্রতিবেশি অনিককে তার ঘরের টিন ঠিক করার জন্য ডেকে নিয়ে যায়। টিন ঠিক করতে চালের উপর উঠলে অনিক বিদ্যুতায়িত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে অনিককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
সেখানে তার চিকিৎসা করে এখন কিছুটা সুস্থ বোধ করলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেনি। তাকে সুস্থ করতে প্রায় তিন লাখ টাকার প্রয়োজন। এতোদিন আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় তার চিকিৎসা করা হয়েছে। টাকার অভাবে বর্তমানে তার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে।
এমতাবস্থায় অনিকের বাবা সমাজের বিত্তবান ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের আকুল আবেদন জানিয়েছেন। আর্থিক সহায়তা পেলে তার ছেলেটা আগের মতো সব কিছু করতে পারবে, এমন আশা দিনমজুর বাবার।
প্রতিবেশি আব্দুল কুদ্দুস, নূর মোহাম্মদ, আবুল কাশেম ও তাসিমা বেগম জানান, বৈদ্যুতিক শকে অসুস্থ হয় অনিক। চিকিৎসা করাতে তার পরিবারের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। অনিকের বাবা একজন দিনমজুর। দিনে আনে দিনে খায়, তাই সংসারের খরচ চালাবে না ছেলের চিকিৎসা করাবে। যদি সরকার ছেলেটির চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য করতো তাহলে সে সুস্থ হয়ে আগের মতো খেলাধূলা ও স্কুলে যেতে পারতো।
সুস্থ হতে বিত্তবান এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সাহায্যের আকুতি জানিয়েছে অসুস্থ অনিকও।
সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, অনিকের চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হবে।
এএইচ