এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় নোয়াখালী
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:০৬ এএম, ৭ ডিসেম্বর ২০২২ বুধবার
আজ ৭ ডিসেম্বর, নোয়াখালী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এইদিনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার প্রতিরোধের মুখে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নোয়াখালী থেকে বিতাড়িত হয়। জেলা শহর মাইজদীতে রাজাকারদের প্রধান ঘাঁটির পতন ঘটিয়ে নোয়াখালীর মাটিতে উড়েছিলো স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর নোয়াখালী প্রাইমারি টিসার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) এ থাকা রাজাকারদের প্রধান ঘাঁটি দখলের মধ্য দিয়ে নোয়াখালীর মাটিকে হানাদার মুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা। হনাদারদের তাড়িয়ে লাল সবুজের বিজয় নিশান উড়িয়েছিল মুক্তিসেনারা।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর প্রায় এক মাস ধরে নোয়াখালীকে মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন মুক্তিকামী মানুষ ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা। পদে পদে বাধা অতিক্রম করে পাকিস্তানী সেনারা ২৩ এপ্রিল নোয়াখালী জেলা শহরে ঢুকে পড়ে।
পাকিস্তানী সেনারা কয়েক দফায় জেলা সদরের সোনাপুর, শ্রীপুর, গুপ্তাংক, রামহরিতালুক, বেগমগঞ্জের কুরীপাড়া, গোপালপুর ও আমিশাপাড়া এলাকায় নির্বিচারে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। এসময় গুলি ও পুড়িয়ে প্রায় দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে হানাদার বাহিনী।
গান পাউডার দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা দেশের অভ্যন্তরে ও ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অস্ত্র হাতে মাঠে নামে পাক-হানাদার ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে।
নোয়াখালীকে হানাদার মুক্ত করার লক্ষ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রস্তুতি যখন প্রায় চূড়ান্ত, ঠিক তখনই ৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে মাইজদী পিটিআই ও বেগমগঞ্জ টেকনিক্যাল হাইস্কুল ক্যাম্প ছেড়ে কুমিল্লা সেনানিবাসের উদ্দেশ্যে পালিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তানী হানাদাররা।
এসময় বেগমগঞ্জ-লাকসাম সড়কের বগাদিয়া ব্রিজ অতিক্রম করতেই সুবেদার লুৎফুর রহমান ও শামসুল হকের নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনীর হামলায় অসংখ্য পাক সেনা ও মিলিশিয়া মারা যায়।
দিবসটি উপলক্ষে ৭ ডিসেম্বর মাইজদী পিটিআই সংলগ্ন মুক্ত স্কয়ারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের মধ্যদিয়ে নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে পারবে এমন প্রত্যাশা জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের।
এএইচ