‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’ (ভিডিও)
রিয়াজ সুমন, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:২৭ পিএম, ৮ ডিসেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ। পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে মুক্তিকামী বাঙালি। জয়দেবপুরের সেই প্রতিরোধ যুদ্ধে শহীদ হন বেশ ক’জন। গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা।
উত্তাল মার্চের ১ তারিখে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করে দিলেন। বাঙালিদের আর বুঝতে বাকি রইলো না পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের অভিসন্ধি। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলেও আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করলো না সামরিক সরকার।
বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে রাজপথ ছেড়ে অলিগলিতে। বঙ্গবন্ধু ইয়াহিয়ার ঘোষণার প্রতিবাদ জানিয়ে ৩ থেকে ৬ মার্চ হরতাল আহ্বান করেন। ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহাসিক জনসভা।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পর আন্দোলন দুর্বল করতে জয়দেবপুরের দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বাঙালি সৈন্যদের অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় পাকিস্তানী হাইকমান্ড। কিন্তু মেজর শফিউল্লাহ নেতৃত্বে অস্ত্র জমা দিতে অস্বীকৃতি জানায় বাঙালী সৈন্যরা। ১৯ মার্চ গড়ে তোলে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিকামী বাঙালি যোগ দেয় সেই সশস্ত্র প্রতিরোধে।
প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধের অন্যতম সংগঠক আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, “মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে বাঙালিদের কাছে অস্ত্র না থাকে। এই খবর বঙ্গবন্ধুকে জানানো হলে তিনি বললেন যে কোনো মূল্য একে প্রতিহত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সেই নির্দেশ মোতাবেক সর্বপ্রথম সংগ্রাম কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে ১৯ মার্চ ব্রিগেডিয়ার জাহাঙ্গজেবকে প্রত্যক্ষভাবে প্রতিরোধ করে ঢাকায় অস্ত্র আনা ঠেকানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করি।”
ঢাকায় তখন পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টাচ্ছে, দিকে দিকে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রাম। স্লোগান ওঠে ‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’।
আ ক ম মোজাম্মেল বলেন, “ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে আমাদেরকে সহযোগিতা করেছিল। সমরাস্ত্র কারখানা থেকেও আমরা কিছু অস্ত্র নিয়েছিলাম। সেগুলো দিয়ে পাকিস্তান বাহিনীকে প্রতিরোধ করা হয়।”
যদিও পাকসেনাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সমান শক্তির প্রয়োজন ছিল। কিন্তু জাতির পিতার ৭ই মার্চের ভাষণ মুক্তিকামী বাঙালির বুকে যুগিয়েছিল দোর্দণ্ড শক্তি আর কঠিন মনোবল। বুক চিতিয়ে তাই জয়দেবপুরে হাজারো জনতা গড়ে তুলেছিল স্বাধীনতার প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ।
এএইচ