বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের মানববন্ধন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:২৭ পিএম, ৯ ডিসেম্বর ২০২২ শুক্রবার
স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাতের মানবাধিকার লঙ্ঘন, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের অপরাধে বিএনপির রাজনীতি স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধসহ বিএনপির শাসনামলে হাজার হাজার মানুষ খুন, গুম, ধর্ষণ, বোমা হামলা ও নির্যাতনের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ মানববন্ধন হয়।
উক্ত কর্মসূচীতে বিএনপির রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে নির্বাচন কমিশনকে ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। আরোও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের অন্যতম সাক্ষী বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন বিচ্ছু জালাল, ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান রাজুসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘বিগত ২০১৪ ও ২০১৮ সালে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাত সমগ্র দেশে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে নিরীহ মানুষদেরকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে বাংলাদেশকে ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল। রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে বিএনপি আবার পুলিশের ওপর বোমা হামলা ও জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধন করে দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি-জামাতের এসব সন্ত্রাসীদের বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সম্প্রতি সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির অপরাধে চখা রাজাকার পুত্র মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসার মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছিল। এই বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে বঙ্গবন্ধু কন্যার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য সবসময় মাঠে থাকবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। গতকাল পুলিশের ওপর হামলা ও নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে বোমা মজুদ করে বিএনপি প্রমাণ করেছে তারা একটি সন্ত্রাসী দল। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। বিএনপি অবৈধ সামরিক শাসক খুনী জিয়া কর্তৃক বিনা বিচারে হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারকে ও সৈনিককে হত্যার অপরাধে খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সম্প্রতি খালেদা ও তারেককে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আখ্যা দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে চরমভাবে অবমাননা করেছে। মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতারা মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনগণের স্বাভাবিক জীবন-যাপন বিঘ্নিত করার অপরাধে মির্জা ফখরুলসহ গ্রেফতারকৃত সকল সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী সন্ত্রাসী দল বিএনপিকে দ্রুত নিষিদ্ধসহ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের আগুন সন্ত্রাসীদের বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। ঠাকুরগাঁওয়ের চখা রাজাকারের পুত্র মির্জা ফখরুল সম্প্রতি তারেক ও খালেদাকে মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে আমাদেরকে চরমভাবে অপমান করেছে। রাজাকার পুত্র মির্জা ফখরুলকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চকে সাথে নিয়ে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে।’
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ৫ দফা দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো যথাক্রমে-
১। সম্প্রতি দেশব্যাপী পুলিশের ওপর বোমা হামলা, গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে জনগণের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত করার অপরাধে বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
২। বিএনপি-জামাত জোটের শাসনামলে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা, অগ্নি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের সাথে জড়িতদেরকে বিশেষ ট্রাইবুনালে বিচার করতে হবে।
৩। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিক হত্যার অপরাধে অবৈধ সামরিক শাসক খুনি জিয়ার মরণোত্তর বিচার করতে হবে।
৪। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আন্দোলনের নামে সমগ্র দেশে আগুন দিয়ে হাজার হাজার মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অপরাধে বিএনপির রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে।
৫। জঙ্গিবাদ, অগ্নি সন্ত্রাস, দুর্নীতি, ধর্ষণ ও বোমা হামলার মদদদাতা বিদেশে পলাতক আসামি খাম্বা তারেককে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে হবে।
এসি