ব্রাজিলকে বিদায় করে সেমিতে ক্রোয়েশিয়া
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:০৩ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার | আপডেট: ১২:০৪ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার
বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলো ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে ছিটকে গেলেন নেইমাররা। অতিরিক্ত সময়ে নেইমারের গোলেও লাভ হলো না। আবারও টাইব্রেকারে বাজিমাত করলো ক্রোয়েশিয়া।
যেখানে প্রথম ও শেষ শুট মিস করা ব্রাজিলকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিতে পৌঁছে গেলো লুকা মড্রিচের ক্রোয়েশিয়া।
প্রথম থেকে ব্রাজিলকে চাপে রাখার চেষ্টা করতে থাকে ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিলকে খেলার জন্য একটুও খোলা জায়গা দিচ্ছিল না তারা। বলের নিয়ন্ত্রণ বেশি ছিলো ক্রোয়েশিয়ার পায়ে। মূলত প্রতি আক্রমণে গোলের চেষ্টা করছিল ক্রোয়েশিয়া। ১৩ মিনিটের মাথায় ডান দিক থেকে ক্রস করেছিলেন মড্রিচ। কিন্তু সেই ক্রসে পা ঠেকাতে পারেননি পেরিসিচ।
নিজেদের আরও রক্ষ্মণাত্মক ভঙ্গিতে মুড়ে নেয় ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিলের কোনো ফুটবলার বল ধরলেই ছেঁকে ধরতে থাকেন তিন-চার জন। তবে ব্রাজিলের ফুটবলাররা বল তাড়া করে যান। ২২ মিনিটে পর পর দু’টি আক্রমণ করে ব্রাজিল। প্রথমে ভিনিসিয়াস, তার পর নেইমার। কিন্তু দু’টি প্রয়াসই ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ আটকে দেয়।
ক্রোয়েশিয়াকে বেশি মনোযোগ দিতে দেখা যায় নেইমারকে আটকানোর দিকে। তাকে ফাউল করা হতে থাকে বার বার। বাঁ দিক থেকে ভিনিসিয়াসও গোলের মুখ খুলতে পারেননি।
৪২ মিনিটের মাথায় ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে বক্সের সামান্য বাইরে ফ্রি-কিক করা হয়। নেইমারের পাস বিপক্ষ ফুটবলারের গায়ে লেগে হালকা ঘুরে গেলেও জমা পড়ে গোলকিপারের হাতে। বিরতিতে আর কোনো গোল হয়নি।
বিরতির পরে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। ম্যাচ শুরু হওয়ার দু’মিনিট পরেই জোড়া আক্রমণ বাঁচিয়ে দেয় ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ ভাগ। নেইমারের শট গাভারদিয়লের পায়ে লেগে নিজের গোলেই ঢুকে যাচ্ছিল। ঝাঁপিয়ে বাঁচান ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার লিভাকোভিচ। তার পরে ক্রোয়েশিয়ার এক ফুটবলারের হাতে বল লাগলেও রেফারি ভিএআর-এর সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি না দেওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেন।
৫৭ মিনিটে রাফিনহাকে তুলে অ্যান্টনিকে নামান তিতে। ডান দিক থেকে আক্রমণ বাড়াতে চাইছিলেন তিনি। নেমেই ডান দিকে পাস বাড়িয়েছিলেন অ্যান্টনি। অল্পের জন্য গোল হয়নি। কিছু ক্ষণ পরে পাকুয়েতার দুরন্ত শট বাঁচিয়ে দেন লিভাকোভিচ। গোলকিপারের মাথায় উপর দিয়ে লব করতে গিয়েছিলেন পাকেতা। লিভাকোভিচের হাতে লেগে বল কর্নার হয়ে যায়। এর পর নেইমারের শট বাঁচিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার। আবার গোলের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু সে বারও লিভাকোভিচ ত্রাতা হয়ে ওঠেন। ৮০ মিনিটের মাথায় অ্যান্টনির ক্রস পেয়েছিলেন রদ্রিগো। তাঁর থেকে পাস পেয়েছিলেন পাকেতা। তার শট আবার আটকে দেন সেই লিভাকোভিচ।
অতিরিক্ত সময়ের শুরু থেকেই গোল করার মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে ব্রাজিল। কিছুতেই একটাও আক্রমণ দানা বাঁধছিল না। বার বার ক্রোয়েশিয়ার বক্সে গিয়ে প্রতিহত হচ্ছিল তাদের আক্রমণ। এর মাঝেই দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। বক্সের মধ্যে ভালো বল পেলেও বারের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন ব্রোজোভিচ। সহজ সুযোগ নষ্ট করে ক্রোয়েশিয়া।
অপেক্ষার মুহূর্ত শেষ হয় ১০৫ মিনিট। নেমারের অসাধারণ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। মাঝমাঠ থেকে মুভ শুরু করেছিলেন নেইমারই। প্রথমে পাস খেলেন পেদ্রোর সঙ্গে। সেখান থেকে নেইমার বল পেয়ে দেন পাকেতাকে। তার থেকে পাস পেয়ে গোলকিপার লিভাকোভিচকে এক টোকায় কাটিয়ে বল জালে জড়ান নেইমার।
তবে ১২ মিনিট বাদেই পাল্টা আক্রমণে দুর্দান্ত এক গোল আদায় করে দলকে সমতায় ফেরান ব্রুনো পেতকোভিচ!
আর এতেই ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। যেখানে প্রথম ও শেষ শুট মিস করা ব্রাজিলকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিতে পৌঁছে গেলো লুকা মড্রিচের ক্রোয়েশিয়া।
এনএস/