ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

শিশুর পাইলসের অস্ত্রোপচার করা হলো জিহ্বায়

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৯:৫১ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার

লক্ষ্মীপুরে আবদুর রহমান আরিয়ান (২) নামের এক শিশুর পাইলস চিকিৎসার পরিবর্তে জিহ্বার নিচের অংশে অস্ত্রোপচার করার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর টাউন হলের সামনে ডা. আউয়াল শিশু সার্জারী সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওদুদ হাসপাতালে এসে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ, রোগীসহ স্বজনরা হাসপাতালেই ছিলেন।

এ ঘটনায় চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জামাল সালেহ উদ্দিন আরজু ভুল স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। তবে এতে কোনো সমস্যা হবে না। যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে সব দায়ভার আমার। প্রয়োজনে আমি এ ঘটনায় লিখিত দেবো।’

জামাল সালেহ চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও হাসপাতালটির মালিক।

ভুক্তভোগী আরিয়ান সদর উপজেলার টুমচর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের টুমচর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

শিশু আরিয়ানের বাবা নিজাম উদ্দিন ও মা লিপি আক্তারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আরিয়ানের পায়খানা করতে সমস্যা হতো। এজন্য সম্প্রতি তাকে সদর হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ইসমাইল হাছানকে দেখানো হয়। তবে ওষুধ দিয়ে ভালো হয়নি। শুক্রবার দুপুরে দিকে তাকে ডা. আউয়াল শিশু সার্জারি সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়।

ডা. জামাল সালেহ শিশুটিকে দেখে পাইলসে সমস্যার কথা বলেন। সন্ধ্যার দিকে নার্স এসে আরিয়ানকে অপারেশন কক্ষে নিয়ে যান। একপর্যায়ে অচেতন করার ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরে শিশুর বাবাকে অপারেশন কক্ষ থেকে বের করে দেন।

কিছুক্ষণ পর শিশু আরিয়ানকে বেডে আনেন নার্সরা। তারা বলেন, ‘শিশুর জিহ্বার সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। সে এখন কথা বলতে পারবে’।

নার্সের এ কথা শুনেই শিশুর মা লিপি মূর্ছা যান। তিনি বলেন, ‘ছেলের পাইলসে সমস্যা ছিল কিন্তু জিহ্বা কাটা হলো কেন?’। 

এরপরই হাসপাতালে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

আরিয়ানের বাবা নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘বাবুর পায়খানা করতে সমস্যা হতো। চিকিৎসক সমস্যাটি দেখবেন বলেছিলেন। পাইলসের অপারেশনেরও কথা ছিল না। কিন্তু তিনি ছেলের জিহ্বা অপারেশন করে ফেলেছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করবো।’

লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবদুল ওদুদ বলেন, ‘দুপক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি। ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ কবির বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এএইচ