মরক্কোর অবিশ্বাস্য উত্থান
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৩৭ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২২ রবিবার | আপডেট: ০৭:০৭ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২২ রবিবার
এবারের বিশ্বকাপে যাদের নিয়ে কেউ ভাবেনি। যারা ছিল হিসেবের বাহিরে। তারাই একের পর এক বাজিমাত করে চলেছেন। ট্রফি নেয়ার জন্য যারা কাতার এসেছিলেন তারা অনেকে নিঃস্ব হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে নতুন ফুটবলশক্তির উত্থান ঘটেছে। আর সেটা হচ্ছে মরক্কো।
আফ্রিকার কোনো দেশ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কখনো খেলেনি। এর আগে তিনটি আফ্রিকান দল কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ অপেক্ষার পর ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের দল বিশ্বকাপের সেমিফানালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। ১৯৯০ বিশ্বকাপে ক্যামেরুন এবং ২০০২ ও ২০১০ বিশ্বকাপে যথাক্রমে সেনেগাল ও ঘানা আফ্রিকানদের স্বপ্ন দেখালেও শেষ চারে উঠতে পারেনি।
আফ্রিকার এই টিমের কোনো নায়কও নেই। আছে শুধু বেশ কয়েকজন দক্ষ ফুটবলার। এরমধ্যে আশরাফ হাকিমি অন্যতম। হাকিমি পিএসজিতে মেসি, এমবাপ্পে আর নেইমারের সতীর্থ। ফরাসি তারকা এমবাপ্পে টুইট করে এর আগেই তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ব্রাজিলিয়ান তারকার নেইমার বিদায় নিয়েছেন বিশ্বকাপের মাঝপথে। কোনো পাগলও ভাবেনি ক্রোয়েশিয়া এভাবে ব্রাজিলকে থামিয়ে দেবে। বাস্তবে হয়েছেও তাই। অঘটন যাকে বলে এটা তারই চূড়ান্ত পরিণতি। অনেকে বলেন, ব্রাজিল নেই, বিশ্বকাপও নেই। এটা হয়তো পুরোপুরি সত্য নয়। কারণ ফুটবল দুনিয়া দু’ভাগে বিভক্ত। একদিকে আর্জেন্টিনা, অন্যদিকে ব্রাজিল।
তবে আরব দুনিয়াসহ পুরো বিশ্বে আফ্রিকান এই সিংহদের ভক্ত অনেক বেড়ে গেছে। বলা যায় তাদের নিয়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে ভাসছে সোশ্যাল মিডিয়া। মরক্কোর এই নব উত্থানে এক অবিশ্বাস্য জাগরণ তৈরি হয়েছে। এই বিজয় অবিস্মরণীয়, নাটকীয়।
আরব দুনিয়ায় এটি প্রথম বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। কিন্তু মরক্কো যেভাবে নিজেদের মেলে ধরেছে তা তুলনাহীন, অনুকরণীয়। শুধু টিম স্পিরিট দিয়ে একটি দল টোটাল ফুটবল খেলে রচনা করেছে নতুন ইতিহাস। পাল্লা দিচ্ছে সেন্ট্রাল আমেরিকা এবং ইউরোপের দলগুলোর সঙ্গে। কে জানে সামনে আর কী বিস্ময় অপেক্ষা করছে! ইউরোপের অন্যতম ফুটবলশক্তি পর্তুগালকে যেভাবে মরক্কো বিধ্বস্ত করেছে তা দেখে আরব দুনিয়ার নেতারা নিজেদের আনন্দ চাপা রাখতে পারনেনি।
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে দুবাইয়ের ডেপুটি রুলার শেখ মাকতুম বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম এক টুইটে এই বিজয়কে অপ্রত্যাশিত বিজয় বলে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, এটা আরব ফুটবলের জন্য এক নতুন বার্তা। এটা তাদের প্রাপ্য।
টুইটারের মালিক ও টেসলার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্ক টুইট করেছেন। বলেছেন, কনগ্রাটস মরক্কো!. আফ্রিকান ইউনিয়ন প্রেসিডেন্ট মেকি সাল এই বিজয়কে ঐতিহাসিক, ফ্যান্টাসটিক বলে অভিহিত করেছেন।
কলম্বিয়ার সুপারস্টার শাকিরাও মরক্কোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এদিকে রেকর্ড গড়ে জয়ে নিজের মায়ের সঙ্গে খেলার মাঠে আনন্দ ভাগ করে নিয়েছিলেন মরক্কান উইঙ্গার সুফিয়ান বুফাল। মায়ের সঙ্গে নেচে-গেয়ে জয় উদযাপন করলেন তিনি। সেই আবেগঘন নাচের দৃশ্য এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল।
আল থুমামা স্টেডিয়ামে ইতিহাস তৈরির পর মরক্কানরা যেভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন, আনন্দ করেছেন, রাস্তায় রাস্তায় গেয়েছেন, নৃত্য করেছেন- এমন কী আনন্দে কেঁদেছেন তা এই বিশ্বকাপের অন্যতম আকর্ষণ।
এসি