ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৮ ১৪৩১

মসজিদের নাম কেন ‘জিন মসজিদ’? (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৬ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

ঠাকুরগাঁও জেলা শহর থেকে উত্তর দিকে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়ক ধরে দশ কিলোমিটার এগোলে ভুল্লি বাজার। সেখান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত বালিয়া মসজিদ। 

স্থানীয়দের ধারণা, জিন-পরীরা সারারাত জেগে এই মসজিদ বানিয়েছে। দিনের আলোয় জিন-পরীরা থাকে না, তাই গম্বুজের কাজ আর শেষ করতে পারেনি, ফলে অসম্পূর্ণ থেকে যায় মসজিদটি। 

তবে ইতিহাস বলছে ভিন্ন কথা। মসজিদের গায়ে খোদাই করা সন অনুসারে এটি নির্মিত হয় ১৩১৭ বঙ্গাব্দে মানে ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে। আবার মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা জমিদার মেহের বকস চৌধুরীর কবরেও তার মৃত্যুর সন খোদাই করা আছে ১৩১৭ বঙ্গাব্দ। 

জানা যায়, মেহের বকস চৌধুরী উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে মসজিদটি তৈরি করতে আগ্রা মতান্তরে মুর্শিদাবাদ থেকে স্থপতি নিয়ে আসেন। কিন্তু তার মৃত্যুতে অর্ধেকপথেই থেমে যায় মসজিদের নির্মাণকাজ। এরপর তার ছোট ভাই উদ্যোগী হন মসজিদটির নির্মাণ শেষ করতে। কিন্তু তিনিও মারা গেলে আর এগোয়নি কাজ। 

অবশেষে মেহের বকস চৌধুরীর নাতনী বিশিষ্ট শিল্পপতি তসরিফা খাতুন ২০১০ সালে চারুকলা ইনস্টিটিউটের সহায়তায় বালিয়া মসজিদটির সংস্কার কাজ শুরু করেন। 

আয়তাকার মসজিদ কমপ্লেক্সটি ভূমি থেকে ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি উঁচু প্লাটফর্মের ওপর পূর্ব-পশ্চিমে ৬২ ফুট ৬ ইঞ্চি ও উত্তর-দক্ষিণে ৬৯ ফুট ২ ইঞ্চি। মূলভবন বা নামাজঘর পূর্ব-পশ্চিমে ২৫ ফুট ১১ ইঞ্চি প্রশস্ত। মসজিদের ছাদে একই আকৃতির তিনটি গম্বুজ ও আটটি মিনার আছে। ভিত্তিসহ পুরো মসজিদটিই চুন-সুরকির মর্টার এবং পোড়া ইট দিয়ে নির্মিত। মসজিদের দেয়ালের বিভিন্ন স্থানে ইট কেটে বিভিন্ন নকশা করা হয়েছে।

প্রতিদিন মসজিদটি এক নজর দেখতে আসেন অসংখ্য দর্শনার্থী। তাদের দাবি, এলাকাটিকে পর্যটন কেন্দ্র করার।

মসজিদটি দেখতে আসা দর্শনার্থীদের জন্য সুব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এসবি/