বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা উন্নয়নে সিঙ্গাপুরের এগ্রোকর্পকে আইএফসি’র ঋণ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:৪২ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার | আপডেট: ০১:৪৩ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার
খাদ্যশস্যের বৈশ্বিক ঘাটতির মধ্যে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়নে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কৃষিপণ্য-বাণিজ্য কোম্পানি এ্যগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেডকে ৩২.৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে।
আইএফসি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়।
সিঙ্গাপুর ভিত্তিক কৃষিপণ্য-বাণিজ্য কোম্পানি এ্যগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড বাংলাদেশে গম ও ডালের শীর্ষস্থানীয় সরবরাহকারী।
উদীয়মান বাজারে বেসরকারী খাতের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা বৃহত্তম বৈশ্বিক উন্নয়ন সংস্থা আইএফসি আট বছরের অর্থায়ন প্যাকেজ প্রদান করছে যার মধ্যে ১৮ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সিনিয়র সিকিউরড লোন (সিসিএলস) ঋণ (ব্যাঙ্ক এবং প্রাতিষ্ঠানিক ঋণদাতাদের একটি কনসোর্টিয়ামকে দেওয়া ঋণ) এবং সেইসাথে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন প্রাইভেট সেক্টর উইন্ডো ব্লেন্ডেড ফিন্যান্স ফ্যাসিলিটি থেকে ১৪.৫ মিলিয়ন ডলার রেয়াতি ঋণ রয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিনিয়োগটি অ্যাগ্রোকর্পকে অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডা থেকে বাংলাদেশে লক্ষ লক্ষ টন গম এবং ডাল কিনতে এবং সরবরাহ করতে দেবে, যা দেশে নিরাপদ, পুষ্টিকর এবং ক্যালরি-সমৃদ্ধ প্রধান খাদ্য সরবরাহ করবে।
এই খাদ্যশস্য মিলার এবং ফুড প্রসেসরদের কাছে বিক্রি করা হয়। বাংলাদেশের জনসংখ্যার জন্য প্রধান খাদ্যপণ্য এদের সরবরাহের ওপর নির্ভর করে।
এগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনালের চেয়্যারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিজয় আয়েঙ্গার বলেন, ‘এশিয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা মোকাবেলায় এগ্রোকর্প একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা বিশ্বব্যাপী খাদ্য-সরবরাহ চেইনের সাম্প্রতিক সব ধাক্কার কারণে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’
বিজয় বলেন, ‘আমরা এই ঋণের জন্য অঅইএফসি’র সাথে অংশীদারিত্ব করতে পেরে আনন্দিত, যা বাংলাদেশের মতো উদীয়মান বাজারগুলোতে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে আরও শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম প্রদানে আমাদের কাজ জোরদারে সাহায্য করবে।’
এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুরের অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার জিওফ্রে ইয়েও বলেন, ‘আমরা আনন্দিত যে আইএফসি এগ্রোকর্পকে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ চেইনে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করতে আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে বাংলাদেশের বাজারে সেবা দিতে সক্ষম হয়েছে।’
ইয়েও বলেন, ‘আমরা আনন্দিত যে একটি বৈশ্বিক বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে সিঙ্গাপুরের ভূমিকা এগ্রোকর্পের মতো সংস্থাগুলিকে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম করেছে। এই সংস্থাগুলি খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং অঞ্চল জুড়ে খাদ্য প্রবাহের সুষ্ঠ ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।’
ইউক্রেনের যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী খাদ্য মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে তুলেছে। জ্বালানির উচ্চ মূল্য ও অস্থিরতা এবং সারের দাম বৃদ্ধি এবং বিধিনিষেধমূলক বাণিজ্য নীতি চালু করেছে। কোভিড-১৯ মহামারী থেকে সৃষ্ট সরবরাহ-শৃঙ্খলা ব্যহত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গম সরবরাহ বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছে। কারণ ইউক্রেন এবং রাশিয়া ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্ব-বাণিজ্যের পরিমাণের এক চতুর্থাংশের সরবরাহ করে থাকে।
আইএফসি’র দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হেক্টর গোমেজ অ্যাং বলেছেন,‘এই বিনিয়োগ বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদনকারী এবং প্রসেসরদের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ নিশ্চিত করবে, যাতে নিরাপদ, পুষ্টিকর এবং ক্যালরি সমৃদ্ধ প্রধান খাবারের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা যায়।’
গোমেজ বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের এগ্রোকর্পকে আইএফসি’র তহবিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আসে, যখন মহামারী-সম্পর্কিত বাধা এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বিশ্বব্যাপী খাদ্য-সরবরাহ চেইনকে প্রভাবিত করেছে।’
আইএফসি বিনিয়োগ একটি নতুন ৬ বিলিয়ন গ্লোবাল ফুড সিকিউরিটি প্ল্যাটফর্ম (জিএফএসপি) এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যার লক্ষ্য খাদ্য নিরাপত্তার অবনতি, বিশেষ করে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলিতে, খাদ্য নিরাপত্তার অবনতি মোকাবেলায় বেসরকারী বিনিয়োগকে একত্রিত করা।
এগ্রোকর্পকে আইএফসি’র অর্থায়ন ও ‘দক্ষিণ-দক্ষিণ’ বিনিয়োগের চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সিঙ্গাপুরের ক্রমবর্ধমান ভূমিকা একটি দৃষ্টান্ত, যা উদীয়মান বাজারের মধ্যে বিনিয়োগের প্রবাহ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এই ধরনের বিনিয়োগ উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য অর্থায়নের একটি মূল উৎস এবং মান, জ্ঞান এবং সফল ব্যবসায়িক মডেল স্থানান্তর করার একটি মাধ্যম।
আইএফসি গত এক দশকে সিঙ্গাপুরের ক্লায়েন্টদের উদীয়মান বাজারে তাদের সম্প্রসারণে সহায়তা করার জন্য ৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এছাড়াও ২০১০ সাল থেকে, আইএফসি বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের প্রসারে সহায়তা করার জন্য ৩.৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে।- বাসস
এসএ/