স্থুলতায় রোগের ঝুঁকি, ডায়েট করার আগে মাথায় রাখবেন কোন বিষয়?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:১১ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার
বর্তমান যুগে এক অস্বস্তির নাম স্থুলতা। আর তা থেকে রোগভোগের ঝুঁকি। তাই ওজন কমাতে অনেকেই ঝুঁকছেন ডায়েট কন্ট্রোলের দিকে।
আপনি স্বীকার করুন আর না করুন, বিশ্বজুড়ে সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে যে বৈশিষ্বগুলো বিবেচিত হয় তারমধ্যে একটি স্লিম ফিগার। অর্থাৎ ছিপছিপে শারীরীক গঠনের অধিকারী হলেই আপনি সুন্দরীর তকমা পেতে এগিয়ে যাবেন এক ধাপ।
এজন্যও ডায়েটে ঝাঁপিয়ে পড়েন অনেকে। কিন্তু অতিরিক্ত কিছুই শরীরে জন্য ভালো নয়, উলটো ক্ষতির কারণ হতে পারে।
আপনি যদি ভেবে থাকেন সঠিক পথে ডায়েট করবেন তাহলে মাথায় রাখুন এই বিষয়গুলো।
স্থুলতার কারণে সৃষ্ট রোগ মোকাবেলায় বাড়তি ওজন কমাতে চাইলে একজন ডায়েটেশিয়ান বা স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
তবে তথাকথিত ‘জিরো ফিগারের’ জন্যে ডায়েট প্ল্যান না করাই ভালো। কারণ স্লিম হওয়ার নেশায় যা করা হয় তা শরীরের প্রতি অনাচার বৈ কিছু নয়।
হাড় জিরজিরে নারী মডেলদের দেখে অনেকের কাছে সৌন্দর্যের মাপকাঠি স্লিম দেহ। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই ‘স্লিম ম্যানিয়ায়’ আক্রান্তদের অনেকেই ভুগছে চরম অপুষ্টিতে? এমনকি পশ্চিমা কয়েকজন তারকা অতিরিক্ত শুকনো হতে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে মারা পর্যন্ত গেছেন।
আসলে এন্ডোমর্ফ, মানে যাদের দেহকাঠামো গোলগাল আর বৃহদাকার তারা শত চেষ্টাতেও স্লিম হতে পারবেন না। বরং জোরাজুরি করতে গিয়ে শরীর ভেঙে পড়তে পারে।
আর ইউটিউব দেখে কখনো ডায়েট করতে যাবেন না। কারণ ইউটিউবে যারা ভিডিও দেন তাদের বেশিরভাগই আপনার উপকারের চেয়ে নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার বিষয়টিই মাথায় রাখেন। আর ভিডিও দেখে ডায়েট করে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার দায়ভারও তাদের ওপর চাপাতে পারবেন না।
তাছাড়া একই ডায়েট সবার জন্যে প্রযোজ্য নয়। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, একই খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করেও ওজন কমার ক্ষেত্রে ভিন্নতা থাকতে পারে।
পুষ্টিবিদ সোফি মেডলিন বলেন, “প্রতিটি মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্য, জীবনধারা ও শারীরিক গঠন আলাদা। একজনের জন্য যে রীতি কার্যকর হবে, আপনার জন্যও তা ফলপ্রসূ হবে এটি ভুল ধারণা।
সময় নিন, ওজন কমাতে তাড়াহুড়ো করবেন না। কারণ যে ওজন তিন বছরে বেড়েছে সেটাকে তিন মাসে কমানোর চিন্তা বাস্তবসম্মত নয়। বরং হঠাৎ করে ওজন কমাতে গেলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের ইলেক্ট্রোলাইট পরিবর্তন হতে পারে। এছাড়াও হাড়ের ঘনত্ব কমে আপনি আক্রান্ত হতে পারেন অস্টিওপোরোসিসে।
অন্যদিকে, কঠোর ডায়েটের সাথে সম্পর্ক রয়েছে ইটিং ডিজ-অর্ডারের। টিনএজ বয়সে যার ঝুঁকি ১৮ গুণ!
এতে মৃত্যুও হতে পারে। গত বছর ১৭ বছরের কিশোর সামিনের মৃত্যুর কারণ ছিল এই ইটিং ডিজ-অর্ডার।
ডয়েট প্ল্যান রয়েছে বিভিন্ন ধরনের, প্রতিটি ডায়েটেরই কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। কাজেই ডায়েট শুরুর আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
সরাসরি আপনার সাথে কথা বলে, আপনার খাদ্যাভ্যাস, জীবনাচার ও মেডিকেল প্রোফাইল দেখশুনে আপনার জন্য কোন ডায়েট উপযোগী সেটি তিনিই ভালো বুঝবেন।
আমাদের শরীরের জন্যে প্রতিটি পুষ্টি উপাদানই কম বেশি প্রয়োজন। ডায়েট করতে গিয়ে কোনো খাদ্য উপাদান পুরোপুরি বাদ দিলে বা শরীরের চাহিদার চেয়ে কমানো হলে সেটার নেতিবাচক প্রভাব শরীরে পড়বে। এ কারণেই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ জরুরি।
এসবি/