বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের জন্মদিন আজ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:১০ এএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ১১:১৩ এএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ শুক্রবার
আজ ১৬ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের ৭৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৭ সালের এইদিনে ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার হাজিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দিবসটি পালন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায়, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান।
মুক্তিযুদ্ধকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার দরুইন গ্রামের গঙ্গাসাগর এলাকায় শহিদ হন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল। আর এখানেই তাকে সমাহিত করা হয়।
১৯ শতক জায়গার মধ্যে রয়েছে মোস্তফা কামালের সমাধি, স্মৃতিসৌধ ও মোস্তফা কামালের সমাধিলিপি।
সিপাহী মোস্তফা কামালের জন্ম ১৯৪৭ সালে বরিশাল জেলার দৌলতখান থানার পশ্চিম হাজীপুর গ্রামে। মোস্তফা কামালের পিতা হাবিলদার মো. হাবিবুর রহমান ও মাতা মালেকা বেগম। ৫ ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তাঁর স্ত্রীর নাম পিয়ারা বেগম।
ছোটবেলা থেকেই স্কুলের পড়াশোনার চেয়ে ভালো লাগত সৈনিকদের কুচকাওয়াজ ও মার্চ করা। নিজেও স্বপ্ন দেখেন সৈনিক হওয়ার। ১৯৬৭ সালে কাউকে কিছু না বলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন।
’৬৭ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ছিলেন চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক। একাত্তরের উত্তাল দিনে পাকিস্তানিরা চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে অভ্যন্তরীণ গোলযোগের অজুহাতে সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোতায়েন করে। এ রেজিমেন্টের বেশিরভাগই বাঙালি সেনা। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয় এই রেজিমেন্ট।
স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর পর ১৪ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী হেলিকপ্টার, গানশীপ, নেভাল গানবোট ও বিমানযোগে মুক্তিবাহিনীর ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রতিরক্ষা অবস্থানের উপর ত্রিমুখী হামলা চালায়। গঙ্গাসাগর প্রতিরক্ষা অবস্থানের দরুইন গ্রামে নিয়োজিত আলফা কোম্পানির ২নং প্লাটুনের একজন সেকশন কমান্ডার ছিলেন মোস্তফা কামাল।
আখাউড়া প্রতিরক্ষা অবস্থানে পাকিস্থান বাহিনী আক্রমণ চালালে দরুইন গ্রামে অবস্থান নেয় ইপিআরের একটি কোম্পানী। ব্রীজ ভেঙ্গে পাকসেনাদের প্রতিরোধ করে মুক্তিযোদ্ধারা। কিন্তু পাকবাহিনী গঙ্গাসাগর এলাকা থেকে তীব্র আক্রমণ চালিয়ে দরুইন গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের চারপাশ ঘিরে ফেলে। এ সময় দরুইন গ্রামে বাঙ্কার খুঁড়ে মোস্তফা কামাল ও তার সহযোদ্ধারা প্রাণপণ যুদ্ধ চালিয়ে যান।
১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল ব্রাম্মণবাড়িয়ায় পাকবাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শাহীদ হন তিনি।
মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীর শ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাদের অন্যতম।
এএইচ