গেরিলাযোদ্ধাদের দু:সাহসী ভূমিকা আজও অনন্য (ভিডিও)
শাকেরা আরজু, একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৩৬ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২২ শুক্রবার
পাকসেনাদের খতম করতে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালাতেন গেরিলারা। তাদের অতির্কিত হামলায় ধরাশায়ী হয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানের সুসংগঠিত সেনা দল।
২৫শে মার্চ অপারেশন সার্চ লাইটের নামে বাঙালি নিধন শুরু হলে পাক দোসরদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে জেগে ওঠে বাংলা।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হয়ে হামলা চালাতে প্রস্তুতি নিতে থাকে মুক্তিকামী জনগণ। শত্রুদের পরাস্ত করতে নিজেদের মতো করে প্রশিক্ষণ নেয় গেরিলা বাহিনী। পশ্চিম পাকিস্তানের দোসরদের মানসিক শক্তি আর সাংগাঠনিক মনোবল ভেঙ্গে দেয়াই ছিল গেরিলাদের অন্যতম লক্ষ্য। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও কৃষক-শ্রমিকরাও অংশ নেয় গেরিলা যুদ্ধে।
একাত্তরে ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধের প্রথম সফল অপারেশন ছিল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল আক্রমণ।
রাস্তা, কালাভার্ট আর ব্রিজ ভেঙে দেয়া, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, পেট্রোল পাম্পগুলো ধ্বংস করাই ছিল গেরিলা যুদ্ধের অন্যতম কৌশল।
মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, “বায়তুল মোকাররমের চারদিকে ৮টি গাড়ি নিয়ে পাকিস্তান আর্মি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাহাড় দেয়। আমাদের দায়িত্ব ছিল বন্ধ করা। পুরো রেকি করার পর রাইসুল ইসলাম আসাদের নেতৃত্বে অপারেশনটা হয়।”
রাজাকারদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পাক আর্মিরা ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে ঢাকায়। অনেকগুলো গেরিলা আস্তানা ও বাড়িতে হানা দেয়। টরসাল সেলে গেরিলা যোদ্ধাদের উপর চলে নির্মম নির্যাতন।
নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, “গেরিলা যুদ্ধের কৌশলটা শত্রুর মনোবল ভেঙ্গে দেয়। বিশ্ববাসীর মতামত আমাদের পক্ষে আনতে সাহায্য করে।”
মুক্তিযুদ্ধে গ্রাম অঞ্চলে বেশ কার্যকর অবস্থান গড়ে তুলে ছিল গেরিলারা। অনেক বাহিনীর মধ্যে সে সময় ১৮ হাজার সশস্ত্র যোদ্ধা আর ৭২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী দিয়ে গঠিত হয় কাদেরিয়া বাহিনী। কাদের সিদ্দিকির এই গেরিলা বাহিনী যুদ্ধের সময় টাঙ্গাইল অঞ্চলে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলে ছিল।
গেরিলা যোদ্ধা বলেন, “দেশের অভ্যন্তরে অনেক বাহিনী হলো, হেমায়েত বাহিনী, কাদিরিয়া বাহিনী, আসাদ বাহিনী ও বাতেন বাহিনী। এরা এবং আমরা যারা ভারতে ট্রেনিং নিয়েছি সবাই মিলে যুদ্ধটা খুব সুশৃঙ্খলভাবে হয়েছিল।”
গেরিলাদের অপারেশনের খবর তখন গুরুত্বের সঙ্গে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, আকাশবাণী, বিবিসি, ভয়েস অব আমেরিকা গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করতো। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছাপা হতো গেরিলাদের অতির্কিত হামলার প্রসঙ্গ। বহুমাত্রিক কারণেই গেরিলা যোদ্ধাদের দু:সাহসী ভূমিকা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আজও অনন্য, অবিস্মরণীয়।
এএইচ