ঢাকা, বুধবার   ২৬ জুন ২০২৪,   আষাঢ় ১৩ ১৪৩১

ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে বাড়ছে দর্শনার্থী (ভিডিও)

কাজী রিপন, টাঙ্গাইল থেকে

প্রকাশিত : ০১:২৬ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০১:২৭ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার

ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত টাঙ্গাইলের ‘শহীদ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করছে। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসিকতাপূর্ণ যুদ্ধদিনের নানা স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে এ জাদুঘরে। প্রতিদিনই এখানে আসছেন নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিরা। জেলা প্রশাসন বলছে, ব্যক্তি উদ্যোগে নির্মিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সহযোগিতাই করা হবে। 

টাঙ্গাইলে শহীদ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১০ সালে। প্রথমে এটি শহরের রেজিস্ট্রি পাড়ায়, পরবর্তীতে শহরের পাশে এনায়েতপুরে স্থায়ীভাবে স্থানান্তর করা হয়। জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করেন বীরমুক্তিযোদ্ধা ও কাদেরিয়া বাহিনীর বেসামরিক প্রধান সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ার উল আলম শহীদ। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর করোনা আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। 

জাদুঘরে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দলিল, চিঠি-পত্রসহ মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন, প্রশিক্ষণ, যুদ্ধ, মিত্রবাহিনীর অবতরণ, প্যারাটুপারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের স্থিরচিত্র। এছাড়া মিত্রবাহিনীর প্যারাস্যুট, প্যারাটুপার ব্যাগ, বুলেট, রিভলবার, হানাদার বাহিনীর অস্ত্রবোঝাই জাহাজ যমুনা নদীতে ধ্বংস করার পর ধ্বংসাবশেষসহ বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্নও স্থান পেয়েছে জাদুঘরে। 

দর্শনার্থীরা জানান, সময় পেলেই আমরা নতুন প্রজন্ম এই জায়গায় আসি। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের বিভিন্ন দুর্লভ স্মৃতি এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আমরা জানতে পারছি। 

শহীদ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আনোয়ার উল আলম শহীদের সহধর্মিনী ডাক্তার সাঈদা খান আলম জানান, পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতেই এই উদ্যোগ।

ডাক্তার সাঈদা খান আলম বলেন, “আমরা স্বাধীনতা পেলাম, স্বাধীন দেশ ও পতাকা পেলাম। তাকে সমুন্নত রাখতে যা করা উচিত তা উনি লালন করতেন।”

জাদুঘরটি প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উম্মুক্ত। প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা আসছে জাদুঘরটি দেখতে।

শহীদ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি আরও বলেন, “এর সংরক্ষণগুলো, স্মৃতিচিহ্নগুলো দেখে মুক্তিযুদ্ধের কিছুটা হলেও বুঝতে পারবে।”

জেলা প্রশাসন বলছে, মহৎ এই উদ্যোগ নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে সহায়তা করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।

টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক ডক্টর মোঃ আতাউল গনি বলেন, “এই কাজটাই কিন্তু তিনি আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যে করে গেছেন। এটা চিরন্তন অনুপ্রেরণা ও উৎসাহ হয়ে থাকবে।”

শহীদ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরই টাঙ্গাইলের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করছে। জাদুঘরকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহযোগিতার দাবি টাঙ্গাইলবাসীর। 

এএইচ