ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

সামরিক খাতে ব্যয় বাড়াচ্ছে সুপারপাওয়ার দেশগুলো

আজহারুল ইসলাম, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩০ এএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ রবিবার | আপডেট: ১০:৩৪ এএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ রবিবার

আবারও খাদ্য সঙ্কটে পড়বে বিশ্ব। উদ্বাস্তু হতে পারে অসংখ্য মানুষ, হবে শান্তি বিনষ্ট। সুপার পাওয়ারদের সামরিক ব্যয় বাড়ানো আর অস্ত্রপরীক্ষা তেমনটিই জানান দিচ্ছে। 

বিশ্বজুড়ে বহুমুখী সংকট। অর্থনীতির সূচকে একটানা মন্দাগতি। সাথে যোগ হয়েছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার একরাশ আশঙ্কা।

ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ চলমান। শেষ পরিণতি নির্ধারণ হয়নি এখনো। জলবায়ু পরিবর্তনর বিদ্যমান ধাক্কা সামাল দেয়াও কঠিন হবে অনেক দেশের। খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্য, জ্বালানি সংকট আর কোভিড নাইনটিন সঙ্কটময় বিশ্বকে করেছে শোচনীয়। 

বিশ্ব অর্থনীতির বাজারে চাপ বেড়েই চলেছে। এমনকি যুক্তরাজ্যে বেড়েছে বন্ডের দাম। দর কমেছে পাউন্ড স্টার্লিংয়ের। 

জাপানে ইয়েনের দরপতন ঠেকাতে ১৯৯৮ সালের পর এই প্রথম বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময়ে হস্তক্ষেপ করেছে দেশটি। বৈদেশিক মুদ্রার বহিঃপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ফোরেক্স বাণিজ্য রিজার্ভে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে চীন।

এমন পরিস্থিতিতে সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে বিশ্বের সুপারপাওয়ার দেশগুলো। সুইডেনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট এরইমধ্যে গেল বছরের সামরিক ব্যয়ের হিসেব জানিয়েছে। ২০২১ সালে বিশ্বের সামরিক ব্যয় ছিল ২১ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি।

সামরিক খাতে সর্বোচ্চ ব্যয় করা শীর্ষ পাঁচটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়া। পৃথিবীর মোট সামরিক ব্যয়ের ৬২ শতাংশ সম্মিলিতভাবে ব্যয় করেছে এই পাঁচ পরাক্রমশালী।

প্রতিরক্ষা ব্যয় ব্যাপক পরিমাণে বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশ জার্মানি। দাপট দেখাতে সশস্ত্র বাহিনীতে ১শ’ বিলিয়ন ইউরো দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর সোলজ। 

পরিসংখ্যান বলছে, সামরিক খাতে শুধু ইসরায়েল যা ব্যয় করে তা অন্য ৫ শক্তিধর দেশের সমান।  বিশ্বের অন্যতম প্রধান আধুনিক অস্ত্র সরবরাহকারী দেশটি ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র, রাডারসহ এসবের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী চড়া দামে বিক্রি করে।

যুদ্ধবাজদের দৌড়ে পিছিয়ে নেই সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কেনা বন্ধ করবে না বলে সাফ জানিয়েছে দেশটি। করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়ে অভ্যন্তরীণ ব্যয় সঙ্কোচন নীতি অবলম্বন করেছিল সৌদি আরব। অথচ  সামরিক খাতে ব্যয় অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তে অটল দেশটি।

সেনাবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার ঘোষণা দিয়েছে ঝামেলাবিহীন জাপান। এমনকি অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করার পরিকল্পনাও নিয়েছে এশিয়ার শিল্পোন্নত দেশ জাপান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গ্লানি থেকে বেরিয়ে এসে শান্তিময় পৃথিবীর স্বপ্ন দেখা দেশটি সামরিক খাতে আগামী ৫ বছরে ৩শ’ ২০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার ঘোষণা দিয়েছে। 

সর্বোপরি নতুন করে শক্তি দেখাতে চায় সুপারপাওয়ার দেশগুলো। আশঙ্কা, আবারও কি দুর্ভিক্ষের কবলে পড়বে বিশ্ববাসী? নাকি যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় আগুনে পুড়বে জনপদ, রাসায়নিক অস্ত্রে নি:শেষ হবে বহু প্রাণ। 

এএইচ