সন্তানদের ঝগড়া থামাতে আত্মহত্যার অভিনয়ে গৃহবধূর মৃত্যু
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:৫৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ সোমবার
দশ বছরের মেয়ে জান্নাতুল নাঈম ও ছয় বছরের ছেলে ওসমান দুই ভাইবোন ঝগড়া করছিল। স্বামী নাছির উদ্দিন চলে যান অফিসে। বাবা চলে যাওয়ার পর ভাইবোনের মধ্যে ঝগড়া আরও বেড়ে যায়। এতে মা রেহানা আক্তার মুক্তা (৩০) সন্তাননের ঝগড়া থামাতে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা অভিনয় করতে গিয়ে মারা যান।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জস্থ আফজাল রোড সংলগ্ন হানিফ মিয়ার বাড়ির ৪র্থ তলায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর বড় মেয়ে জান্নাতুল নাঈম ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, স্বামী নাছির উদ্দিন ইসলামী ব্যাংক চন্দ্রগঞ্জ শাখায় চাকরির সুবাধে তারা গত ৩ মাস আগে হানিফ মিয়ার বাড়ির ৪র্থ তলায় বাসা ভাড়া নেন। জান্নাতুল নাঈম ও ওসমান ছাড়াও তাদের ফাতেমা নামে ৩ বছরের আরও একটি মেয়ে সন্তান আছে। তাদের মধ্যে বড় মেয়ে জান্নাতের সাথে ছেলে ওসমানের প্রায় ঝগড়া হয়। এতে তাদের মা মুক্তা তাদের উপর অসন্তুষ্ট।
রোববার সকালে তারা উভয়ই আবারও ঝগড়া শুরু করে। এতে মা রেহানা আক্তার মুক্তা বলেন, তোদের ঝগড়া না থামালে আমি আত্মহত্যা করবো। এই বলে মুক্তা গলার ওড়না জানালার গ্রীলের সঙ্গে বেঁধে নিজের গলায় পেঁচিয়ে সন্তানদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোরা দেখ আমি আত্মহত্যা করছি। সন্তানদের ভয় দেখানোর জন্য এ কথা বলার পরই পা পিচলে খাট থেকে পড়ে গিয়ে ঝুলন্ত ওড়নায় গলায় ফাঁস লেগে যায় তার।
পরে বড় মেয়ে জান্নাত ফোন করলে তার বাবা ডাক্তার নিয়ে বাসায় আসেন। ডাক্তার তখন গৃহবধূ মুক্তা মারা গেছেন বলে জানান
গৃহবধূ রেহানা আক্তার মুক্তা সেনবাগ উপজেলার অর্জুনতলা গ্রামের মৃত আব্দুস ছাত্তারের মেয়ে। স্বামী নাছিরের বাড়ি ফেনীর জেলার পরশুরাম উপজেলায়।
চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, সন্তানদের সঙ্গে অভিমান করে ফাঁসি দিচ্ছি বলে তাদেরকে ভয় দেখাতে গিয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ময়নাতদন্ত রিপোর্টে হত্যাকাণ্ডের আলামত পাওয়া গেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।
এএইচ