ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৮ ১৪৩১

‘সুয়া চাঁন পাখি’র স্রষ্টা নিয়ে দুই পরিবারে টানাপোড়েন (ভিডিও)

আতিক রহমান পূর্নিয়া, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৭ পিএম, ২০ ডিসেম্বর ২০২২ মঙ্গলবার

জনপ্রিয় গান সুয়া চাঁন পাখির স্রষ্টা কে? উকিল মুন্সি নাকি আব্দুর রশিদ? বিষয়টি নিয়ে বহুদিন ধরেই দুই সাধকের পরিবারের মধ্যে চলছে টানাপোড়েন।

হুমায়ুন আহমদের শ্রাবণ মেঘের দিন সিনেমার সুতো ধরে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মন ছুঁয়ে যায় এ গান। ভাবশিল্পী বারী সিদ্দিকীর স্বকীয় সূরে গানটির মুর্ছনা ছড়িয়ে পড়ে হৃদয়গহীনে। 

সুরবীণায় একদিকে যেমন সামাজিক দুঃখ-বেদনা প্রস্ফুটিত তেমনি মরমীবাদের গোপন গহীন অপ্রাপ্তি ফুটে উঠেছে বাক্যবাণীতে।

বেশ আগে লেখা আর গাওয়া হলেও অল্পদিন হলো জনপ্রিয় হয়েছে সুয়া চাঁন পাখির মনোবেদনা। আর সেই থেকেই গানের রয়্যালিটি নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। গীতিকবির নামভনিতা নিয়েও শুরু হয় নিবিড় যুদ্ধ।   

শিল্পী বারী সিদ্দিকি এ গানের স্রষ্টা প্রসঙ্গে বেশ আগে একবার ধারণাও দিয়েছিলেন।

ইউটিউব থেকে সংগৃহীত বারী সিদ্দিকির বক্তব্য, “সুয়া চাঁন পাখি মানে শুয়ে আছে আমার চান পাখিটা। বাউল তার মৃত স্ত্রীর মাথাটা কোলে নিয়ে কবরের পাশেই গানটি রচনা করা হয়।”

তবে বারী সিদ্দিকীর ধারণার সঙ্গে কিছুটা অমত পোষণ করেছেন উকিল মুন্সির স্বজনরেরা। তাঁদের যুক্তি, পুত্রশোকে মুহ্যমান উকিল মুন্সীর পাঁজরভাঙা এ গান। ছেলে সাত্তার মুন্সির অকাল মৃত্যুতে ভাবলেশহীন করে তুলেছিল শিল্পী সাধক উকিল মুন্সিকে। 

উকিল মুন্সির প্রতিবেশি জানান, মারা যান শ্বশুর বাড়িতে। সেখান থেকে লাশ আনা হয়। পরে এখানে বসে চোখের পানি ফেলেন আর এই গানটি গান।

উকিল মুন্সির নিকটাত্মীয় বলেন, “উকিল মুন্সি সুয়া চাঁন পাখি গানটা বলছিলেন যখন ছেলের লাশ নিয়ে আসে। আমার সুয়া চান পাখি আমি ডাকি তুমি ঘুমাইয়া আছো নাকি। গানটা বলছেন আর কান্না করছিলেন। এটা আমাদের দেখা।”

উকিলের পরিবারের এমন দাবি আবার মানতে নারাজ মরমি সাধক আব্দুর রশিদের পরিবার।

বাউল আব্দুর রশিদের ছেলে আবু আনসার কালামিয়া বলেন, “চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছেন উনি। এই রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ১৯৯৯ সালে পেয়েছেন। পুরস্কারটি আমি মন্ত্রণালয়ে থেকে আনি।”

বাউল আব্দুর রশিদের নাতি বলেন, “সুয়া চাঁন পাখি গানটা উকিল মুন্সির নামে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। যেহেতু এটা দিয়ে আমার দাদা রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছেন এই গানটা কিভাবে অন্যের নামে চালিয়ে দিবেন।”

বাউল মনের প্রবহমান বেদনা থেকে উৎসারিত এ গানের স্রষ্টা কে- তা নির্ণয় করতে রীতিমতো গবেষণার দাবিও জানিয়েছেন কেউ কেউ। 

এএইচ