ঢাকা, বুধবার   ০৯ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২৪ ১৪৩১

বিএনপি-জামায়াতের যুগপৎ চলার আভাস (ভিডিও)

আতিক রহমান পূর্ণিয়া, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫৩ এএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২২ বুধবার

সম্পর্ক নিয়ে ধোঁয়াশা ছড়িয়ে শেষমেশ যুগপৎ চলারই আভাস দিচ্ছে বিএনপি-জামায়াত। একে অপরের সঙ্গে আছি, আবার নাই- এমন বক্তব্যের মাঝে প্রায় কাছাকাছি দাবিতেই দু’দল ঘোষণা করেছে আন্দোলন সূচি। আর আওয়ামী লীগ বলছে বিএনপি-জামায়াত অভিন্ন সত্তা।

ড. শফিকুর রহমান, জামায়াতের আমীর। গত ২৭ আগস্ট দলীয় এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, বিএনপির সঙ্গে তাদের আর সম্পর্ক নাই। এমনকি ২০ দলীয় জোটও কার্যকর নয়।

এরপর বিএনপি নেতারা কেউ কেউ মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিলেও দলটির পক্ষ থেকে কোন সুস্পষ্ট বক্তব্য না আসায় জামায়াত-বিএনপি সম্পর্ক নিয়ে একরকম লুকোচুরিই শুরু হয়। এরই মাঝে ২৬ সেপ্টেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দাবি করেন, জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে।

তবে আওয়ামী লীগ বলছে, জামায়াত-বিএনপি সম্পর্ক আগের মতো ঠিকই রয়ে গেছে। ১০ ডিসেম্বরের প্রায় অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা তারই প্রমাণ। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, “জামায়াতে ইসলামী তৈরি হয়েছে পাকিস্তানে তাদের আত্মাতিক নেতা মাওলানা মওদুদীর মাধ্যমে। আর বিএনপির সৃষ্টি হয়েছে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র মাধ্যমে। এটা তো বিএনপির নেতারাও অনেক সময় স্বীকার করেছেন। ছাত্রশিবির-ছাত্রদল একই মায়ের দুই সন্তান। এটা তো সত্য, অস্বীকার করার নেই। বেগম খালেদা জিয়া বা বিএনপিকে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা থেকে অর্থ দেওয়া হয় এটা তো আইএসআই প্রধান পাকিস্তান হাইকোর্টে স্বীকারুক্তিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। এটা তো সবাই জানে বিএনপি পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা সৃষ্টি এবং তাদের দ্বারা পরিচালিত। জামায়াতে ইসলামীও পাকিস্তানের তৈরি, পাকিস্তানের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কাজেই এই দুটি দল তো একই। তাদের কর্মসূচি একই হবে এটাই তো স্বাভাবিক।”

তাহলে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে গেলো দিনগুলোর ধোঁয়াশা ছড়ানো বক্তব্য কোনো কৌশল ছিলো?

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহেমদ বলেন, “বিএনপি তো জামায়াতকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। আন্দোলনে, যে কোনো কর্মসূচি, কোন জায়গায় তো জামায়াতকে দেখছেন না বিএনপির সঙ্গে। এটা তো প্রকাশ্য। পরে যদি আন্দোলনের যদি চূড়ান্ত কর্মসূচি শুরু হয় তখন বোঝা যাবে তার কি অবস্থান।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি ন্যাশনালিস্ট পার্টি, বিএনপি জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী। জামায়াত তো জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করে না। জামায়াত তো ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে। আমাদের জাতীয়তাবাদ তো টেরিটোরিয়াল।”

জামায়াত বিএনপি থেকে পুরোপুরি দূরে চলে যাক তা বিএনপির নীতি নির্ধারকরাও চান না।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “আন্দোলনে আমরা জামায়াতকে সাথে নিয়েছি বা জামায়াত আমাদের সাথে ছিল। এটা তো ইস্যুভিত্তিক, এটা তো আদর্শভিত্তিক নয়। জামায়াত যদি মনে করে যে একটা সুষ্ঠ নির্বাচন দরকার, তো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে জামায়াত আন্দোলন করতেই পারে। এখন যদি আমরা জোটে না থাকলাম, যদি যুগপদ আন্দোলনে যাই, সেই চলার পথে সরকারের শত্রু আমার মিত্র হতেও পারে।”

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ এক স্বাধীনতা বিরোধীদেরকে দেখতে চায় না। বিএনপি এখন জামায়াতকে নিয়ে কৌশলে এই সমস্ত লুকোচুরি কথাবার্তা বলে।”

দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপের মুখেও জামায়াতকে পাশে রেখে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপি লাভবান হবে বলে মনে করেন দলটির নেতারা।

এএইচ