ঢাকা, বুধবার   ০৯ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২৪ ১৪৩১

দোকানের দখলে সড়ক, পথচারীদের ভোগান্তি

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০১:১৯ পিএম, ২১ ডিসেম্বর ২০২২ বুধবার

চট্টগ্রামের আবাসিক ও বাণিজ্যিক সড়ক মিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হিসেবে গড়ে ওঠে মিরসরাই-ফটিকছড়ি সড়ক। এ দু’ধারে দোকান গড়ে ওঠায় বোঝার উপায় নাই যে এটি একটি সড়ক। এতে মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে চরমভাবে।  ভোগান্তিতে পড়ছেন পথচারীরা।

এ সড়কের মিরসরাইয়ে প্রবেশপথ দখল করে দু’পাশে গড়ে উঠেছে প্রায় ৫০টি অবৈধ দোকান। প্রবেশপথ থেকে ৫০ মিটার দূরত্বে রয়েছে মিরসরাই ডিগ্রি কলেজ ও মিরসরাই স্টেডিয়াম। সড়কের মুখেই রয়েছে মিরসরাই কাঁচাবাজার ও উপজেলা ডিজিটাল পোস্ট অফিস। 

গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রতিষ্ঠান থাকার পরও সড়কের মুখে দুইপাশে পসরা সাজিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী দোকান। যানজট ও নাগরিক বিড়ম্বনা যেন এখানে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। এসব দেখেও নীরব সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

অবৈধ দোকানগুলো থেকে দৈনিক ও মাসিক ভিত্তিতে মাসোহারা আদায় করছে একটি চক্র। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই দিক থেকে বোঝার উপায় নেই এটি মিরসরাই-ফটিকছড়ি ২৯ কিলোমিটার পার্বত্য এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এটাও বোঝার উপায় নেই যে দোকানের পেছনে উপজেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট অফিস রয়েছে।

বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কের মুখে দুই পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে ফলের দোকান, পোশাকের দোকান, চা-দোকান। উপজেলা পোস্ট অফিসের প্রধান ফটকের দুই পাশে এবং ফুটওভারব্রিজের সিঁড়ির সঙ্গে একাধিক দোকান। 

দুই পাশের চলাচল পথ বন্ধ করে দিয়ে পসরা সাজিয়েছেন অস্থায়ী দোকানদাররা। 

দোকানের পণ্য ও ক্রেতাদের ভিড়ে পোস্ট অফিস খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। পোস্ট অফিসে প্রবেশ করতে না পেরে সেবাগ্র্রহীতাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। 

মরিয়ম নামের জনৈক নারী পোস্ট অফিসে এসেছেন ব্যাংকের কাজে রেভিনিউ স্ট্যাম্প নিতে।  দোকান ও ক্রেতাদের ভিড়ে পোস্ট অফিসের প্রবেশপথ খুঁজে পাচ্ছেন না। 

এক দোকানের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে ৩০টি মতো দোকান রয়েছে। প্রতিটি দোকানির ব্যবসা হোক না হোক দৈনিক ভিত্তিতে টাকা দিতে হয় বাজারের ইজারাদারকে। দোকান অনুযায়ী দৈনিক ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয় এসব অস্থায়ী দোকান থেকে।

ভুক্তভোগী পথচারী আশরাফ জানান, সরকারি রাস্তায় দোকান বসিয়ে এভাবে টাকা নেওয়া অন্যায়। সরকার তো ইজারাদারকে বাজারের বাইরে সড়কে দোকান বসিয়ে টাকা আদায় করতে বলেনি।

এ বিষয়ে মিরসরাই পোস্টমাস্টার নুরুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দোকানিরা বাধা মানে না। বাজার কমিটির সভাপতি মেয়র গিয়াস উদ্দিনকে জানানো হয়েছে। তারপরও কাজ হয়নি।’

মিরসরাই পৌরসভার মেয়র ও বাজার কমিটির সভাপতি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘অস্থায়ী দোকানিরা সামান্য দোকান করে তাদের পরিবার চালায়। এটা তাদের জীবিকার পথ। তারপরও চলাচলের রাস্তা উন্মুক্ত রাখতে তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সড়ক ও জনপথ চট্টগ্রাম (উত্তর)-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘এসব অবৈধ দোকানের কারণে মানুষ রাস্তায় চলাচল করতে পারেন না। পাশে একটি ফুটওভারব্রিজ, সেটিও ব্যবহার করতে পারছেন না। দ্রুত সড়ক সম্প্রসারণ কাজ শুরু হবে। তার আগেই সড়কের দুই পাশ দখলমুক্ত করা হবে।’

এএইচ