ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

কাউন্সিলে সবার আগ্রহের কেন্দ্রে সাধারণ সম্পাদক পদ (ভিডিও)

ফারজানা শোভা, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩৬ এএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২ শুক্রবার

বাংলাদেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্র আর উন্নয়ন অর্জনের ধারাবাহিক পথচলায় রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগই নেতৃত্ব দিয়েছে। গত ৭৩ বছরে আওয়ামী লীগের ২১টি কাউন্সিল এবং ৬টি বিশেষ কাউন্সিল হয়েছে। সবগুলো কাউন্সিলেই সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ, গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র সংশোধন করে মতাদর্শিক স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে এগিয়ে চলছে দলটি। ২২তম জাতীয় সম্মেলনেও এর ব্যতিক্রম ঘটবে না বলে আশা নেতাকর্মীদের। 

১৯৪৯ সালে রোজ গার্ডেন থেকে যাত্রা। ভাষা আন্দোলন থেকে মুক্তির সনদ ৬ দফা আর ৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধ- সব লড়াই-সংগ্রাম আর অর্জনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে উপমহাদেশের প্রাচীনতম দল আওয়ামী লীগ।

স্বাধীনতার পর নতুন যুদ্ধে আওয়ামী লীগ। একদিকে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন আরেক দিকে দল গোছানোর কাজে মনোযোগ দিলেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৭ ও ৮ এপ্রিল আওয়ামী লীগের প্রথম সম্মেলনে সভাপতি হন বঙ্গবন্ধু আর সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান। 

১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে জাতির পিতা বলেছিলেন, চারটি আদর্শ ছাড়া রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান টিকতে পারে না। তা হলো- আদর্শ, সঠিক নেতৃত্ব, নিঃস্বার্থ কর্মী ও সংগঠন। এ সম্মেলনে এএইচএম কামরুজ্জামান সভাপতি এবং জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৭৫ এ স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম শুরু হয়। 

এরপর ১৯৭৬ সালে আওয়ামী লীগের পুনরুজ্জীবনের পর মহিউদ্দীন আহমেদ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সালের ৩ ও ৪ এপ্রিল কাউন্সিলে সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনকে প্রধান করে আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হবার পর ১৯৭৮ সালের ৩, ৪ ও ৫ মার্চের কাউন্সিলে আবদুল মালেক উকিল সভাপতি এবং আবদুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন।

১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেরুয়ারি কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের শক্তি পুনরুদ্ধারে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবদুর রাজ্জাক। পরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে সংকট মোকাবিলা করে এগিয়ে চলে আওয়ামী লীগ।

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্বে দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত ৪ দশকেরও বেশি সময় দলের হাল ধরে আছেন তিনি। বিরোধী দলে থেকেও নিয়মিত সম্মেলন করেছে গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারক আওয়ামী লীগ। একদিকে বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্রের হামলা, প্রাণনাশের অপচেষ্টা, ক্ষমতাসীনদের অত্যাচার-নির্যাতন,  দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, অন্যদিকে সংগঠনের অভ্যন্তরেও প্রতিকূল পরিবেশ- এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা।

১৯৯৫ সালের বিশেষ কাউন্সিল ও ৯৭-এর কাউন্সিলে আবারও সভাপতি শেখ হাসিনা সভাপতি এবং জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক। আর ২০০০ সালের ২৩ জুন পল্টন ময়দানে বিশেষ কাউন্সিলের পর ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পাশে পান আবদুল জলিলকে।

২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন সরকার মাইনাস টু-ফর্মুলার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠাবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলে আবারও সংকটের মুখোমুখি আওয়ামী লীগ। তখন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশ্নে আপোসহীন সমর্থন জানিয়ে রাজপথে সোচ্চার হয়ে ওঠে। 

২০০৯ সালের ২৪ জুলাই কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা সভাপতি এবং সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় কাউন্সিলেও এর পুনরাবৃত্তি ঘটে। 

২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি এবং ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। রানিংমেট হিসেবে টানা দুই মেয়াদে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন ওবায়দুল কাদের।

শনিবার দেশের ঐতিহ্যবাহী দলটির ২২তম জাতীয় সম্মেলন। সংসদ নির্বাচনের এক বছর আগে এই সম্মেলনে এখনও নেতাকর্মীদের চোখে অবিসংবাদিত নেতা শেখ হাসিনা। আর সবার আগ্রহের কেন্দ্রে সাধারণ সম্পাদক পদ। 

এএইচ