ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১০ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২৪ ১৪৩১

টাইগারদের স্বপ্নভঙ্গ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০১ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ রবিবার | আপডেট: ১২:০৬ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ রবিবার

রাতভর রোমাঞ্চের অপেক্ষা। সকালের শিশিরেও জমলো জয়ের স্বপ্নমালা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আউট হলেন উনাদকাট-পন্ট-প্যাটেলরা। উইকেট নিলেন সাকিব, পাঁচ উইকেট ঝুলিতে ভরলেন মিরাজ। আশার আলোর উজ্জ্বলতা বাড়লো আরেকটু। 

তবে এরপরই ফিকে হতে থাকে সেই স্বপ্ন। অনেকটা সহজ ক্যাচ রাখতে পারলেন না মোমিনুল। জীবন পেলেন অশ্বিন। এর সঙ্গেই যেন যেন প্রাণ ফিরে পেল ভারতীয় শিবির। টাইগারদের প্রবল চাপে ফুরিয়ে আসা দম যেন বুক ভরে নিতে পারল ভারত। বুকের ওপর থেকে যেন সরে যেতে থাকলো জগদ্দল পাথর।

জীবন পাওয়া অশ্বিনকে নিয়েই অসাধারণ, অনন্য এক জুটি গড়লেন শ্রেয়াস। একের পর এক বাহারি শটে খোলস ছেড়ে বের হয়ে ছিনিয়ে নিলেও কাঙ্ক্ষিত জয়। মূলত ১০৫ বলে এ দুজনের গড়া ৭১ রানের অনিন্দ্যসুন্দর জুটির কাছেই হেরে গেলো জয়ের প্রবল সম্ভাবনা তৈরি করা সাকিবের দল।

সাকিব-মিরাজের ঘূর্ণিতে ৭৪ রানে ৭ উইকেট খুইয়েও ম্যাচ বের করে নিলো ভারত। মিরপুরে ৩ উইকেটের অনবদ্য জয়ের সঙ্গে ২-০ ব্যবধানে সিরিজটা জিতে নিলো রাহুলের দল।

অথচ বাংলাদেশ দল শনিবারের শেষ বিকেলে জয়ের স্বপ্নজ্বাল বুনেছিল ক্রিকেটারদের চঞ্চলতায় চড়ে। ভারতের প্রথম সারির চার ব্যাটারকে ফিরিয়ে সাকিবরা দেখাচ্ছিলেন জয়ের স্বপ্ন। চতুর্থ দিনের ১২তম মিনিটে জয়দেব উনাদকাট যখন ফিরলেন, অথবা এর মিনিট ১৬ পর ঋষভ পন্ত; স্বপ্নের সাগরে ডুবে থাকাই তো ছিল স্বাভাবিক। 

ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়! কিন্তু হলো না। অষ্টম উইকেট জুটিতে ৭১ রান যোগ করে ভারতকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও শ্রেয়াস আইয়ার। বাংলাদেশের স্বপ্নের শেষ হলো হারের বেদনায়।

মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ৩ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকরা প্রথম ইনিংসে ২২৭ রান করার পর ভারত করে ৩১৪ রান। বাংলাদেশ পরের ইনিংসে ২৩১ রান করলে ভারতের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৪৫ রান।  

৪৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করেছিল ভারত। চতুর্থ দিনের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে উনাদকাটের জন্য এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করে বাংলাদেশ। আউট দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নিলে আম্পায়ারস কলে বেঁচে যান ভারতীয় ব্যাটার। পরের বলেই তিনি হাঁকান ছক্কা।  

পরের ওভারের চতুর্থ বলেই অবশ্য তাকে সাজঘরে ফেরত পাঠান সাকিব। এলবিডব্লিউ আউট হওয়ার পর বাঁচতে পারেননি রিভিউ নিয়েও। ১ ছক্কায় ১৬ বলে ১৩ রান করেন তিনি। এরপর পন্থকেও সাজঘরে ফেরানো গেছে। তার উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ভয়ঙ্কর হতে পারা ব্যাটার ১৩ বলে ৯ রান করে হয়েছেন এলবিডব্লিউ।  

পন্থ ছিলেন ভারতের বড় ভরসার নাম। তিনি ফেরার পর বাংলাদেশের স্বপ্ন চওড়া হওয়াই ছিল স্বাভাবিক। সেটিকে আরও বড় করেন মিরাজ। আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটার অক্ষর প্যাটাল ভোগাচ্ছিলেন এদিনও। তাকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরত পাঠান ৪ চারে ৬৯ বলে ৩৪ রান করার পর।  

এরপর সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নেয় ভারত। মাঝে রবীচন্দ্রন অশ্বিনের ক্যাচ শর্ট লেগে নিতে পারেননি মুমিনুল হক। একটু একটু করে ম্যাচও বেরিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশের হাত থেকে। শেষ অবধি অষ্টম উইকেট জুটিতেই ম্যাচ জেতান অশ্বিন ও আয়ার। ৪৬ বলে ২৯ রান করে আয়ার ও ৬২ বলে ৪২ রান করেন অশ্বিন।  

বাংলাদেশকে হোয়াইওয়াশ করার ম্যাচে সেরা হলেন ৬ উইকেটের সঙ্গে ৪২ রান করা অশ্বিন। আর সিরিজে ২২২ রান করে সেরা হলেন পুজারা।
এনএস/ এসএ/