ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

একদিনে সীতাকুণ্ড বোটানিক্যাল গার্ডেন ইর্কো পার্ক ভ্রমণ 

মাজহারুল ইসলাম শামীম

প্রকাশিত : ০৫:০২ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ বুধবার | আপডেট: ০৫:০৪ পিএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ বুধবার

চন্দ্রনাথ পাহাড়ের পাদদেশে ৮০০ হেক্টর জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে সীতাকুণ্ড বোটানিক্যাল গার্ডেন ইর্কো পার্ক। যেখানে রয়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য এবং পর্যটকদের বিনোদনের জন্য বন বিভাগের প্রচেষ্টায় গড়ে তোলা পার্কটিতে রয়েছে বিরল প্রজাতির গাছপালা, হাজার রকমের নজরকাড়া ফুলের গাছ, কৃত্রিম লেক ও নানা প্রজাতির জীববৈচিত্র্য। 

এছাড়া রয়েছে সুপ্তধারা ও সহস্রধারা ঝরনাসহ ঝিরিপথের ছোট-বড় বেশ কয়েকটি ঝরনা, পিকনিক স্পট, বিশ্রামের ছাউনি।

এটি চট্টগ্রাম শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং রেলপথের পূর্ব পাশে অবস্থিত। চট্টগ্রাম শহর হতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে এগোলে প্রথমে পাহাড়তলী এবং তারপর একে একে কাট্টলী, সিটি তোরণ, কুমিরা বাড়বকুণ্ড অতিক্রম করতে করতে পূর্ব পাশে চোখে পড়বে সুউচ্চ পাহাড়ের উপর চন্দ্রনাথ মন্দির, যার পাদদেশে অবস্থিত বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক। 

সীতাকুণ্ড উপজেলা সদর থেকে দুই কিলোমিটার দক্ষিণে ফকিরহাট বাজার সংলগ্ন মহাসড়কের পূর্ব পাশে রঙিন ফটকসহ সাইনবোর্ড ইকোপার্কের দিক নির্দেশনা দেয়া আছে।ইকোপার্কে প্রবেশের সাথে সাথে আপনি একটি বড় ডিসপ্লে ম্যাপ দেখতে পাবেন, যার মাধ্যমে আপনি ইকোপার্ক সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পাবেন। এখান থেকে চন্দ্রনাথ মন্দিরের দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার, আপনি পায়ে হেঁটে অথবা জীপ, মাইক্রোতে চড়ে সেখানে যেতে পারবেন। যে সকল ভ্রমণকারী প্রকৃতিকে ভালোবাসেন, প্রকৃতিকে খুব কাছের থেকে উপভোগ করতে চান তারা অবশ্যই সীতাকুণ্ডে ইকো পার্কে আসতে পারেন। 

উঁচুনিচু নির্জন পাহাড়, হরিণ, ভালুক, বানর, খরগোশ এবং হনুমানসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী, পাখ-পাখালির কলরব, প্রাকৃতিক ঝর্ণা, চিরসবুজ বৃক্ষরাজিসমৃদ্ধ ইকোপার্ক খুবই মনোমুগ্ধকর।সন্ধ্যায় পশ্চিম আকাশে সূর্য যখন গোধূলীর রক্তিম আভা তৈরি করে ইকোপার্কে তখন এক নৈসর্গিক পরিবেশের সৃষ্টি করে।

বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের প্রধান ফটকের ভেতরে ডান পাশে রয়েছে বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্কের প্রধান নার্সারী এবং তার অফিস।এই নার্সারিতেই আছে দেশ-বিদেশের নানা প্রচলিত ও বিলুপ্ত প্রজাতীর ফুল, ফল ও ঔষধি গাছ যেমন– অর্জুন, তেলসুর, চাপালিস, চুন্দুল, কড়ই, জারুল, তুন, জাম, জলপাইসহ আরো অনেক।

সহস্রধারা ও সুপ্তধারা ঝর্ণা

চন্দ্রনাথ রিজার্ভ ফরেস্ট এলাকায় অনেক ছোট-বড় ঝর্ণা আছে। বোটানিক্যাল গার্ডেন ও ইকোপার্ক এলাকার মধ্যে দুটি ঝর্ণা রয়েছে।ঝর্ণা দুটি সহস্রধারা ও সুপ্তধারা নামে পরিচিত।সহস্রধারা থেকে অবিরত পানি ঝরছে।কিন্তু সুপ্তধারা থেকে শীতকালে খুব কম পানি ঝরে।এখানে বলে রাখা ভালো, এই সহস্রধারা ঝর্ণা সীতাকুণ্ডের ঐতিহ্যবাহী এবং ধর্মীয় তীর্থস্থান সহস্রধারা নয়।

যেভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক দেখতে হলে প্রথমে যেতে হবে সীতাকুণ্ড বাজার। সেখান থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে দুই কিলোমিটার দক্ষিণে গেলে পড়বে ফকিরহাট বাজার। সেই বাজারের দেড় কিলোমিটার পূর্বে সীতাকুণ্ড ইকোপার্কের অবস্থান। চট্টগ্রাম থেকে যেতে হলে সীতাকুণ্ড বাজারের দুই কিলোমিটার আগে অর্থাৎ ফকিরহাট বাজারে নেমে গেলেই যাওয়া যাবে খুব সহজে।

কোথায় খাবেন

দুপুর ও রাতের খাবারের জন্য সীতাকুণ্ডেই একাধিক মাঝারি মানের খাবারের হোটেল রয়েছে।আবার কেউ চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়েও খাবার খেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুণ্ড সদরে রাত্রিযাপনের জন্য একাধিক মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। উন্নতমানের হোটেলে থাকতে চাইলে যেতে হবে চট্টগ্রাম শহরে। 

লেখক: শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ফেনী সরকারি কলেজ।

এএইচএস