ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

‘বিদেশি নির্ভরতা কমাতে আয়কর বিভাগকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:০২ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার

বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরতা কমিয়ে আত্মনির্ভরশীল জাতি গড়ে তুলতে আয়কর বিভাগকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট এয়ারপোর্ট এলাকার একটি অভিজাত হোটেলে কর অঞ্চল সিলেট আয়োজিত সেরা করদাতা সম্মাননা পুরস্কার প্রধান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের জনগণ কর দেয় বলেই সরকার সরকার মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে পারছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মাসেতু, বঙ্গবন্ধু ট্যানেল, মেট্রোরেল-এর মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে এক অন্যন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে করদাতাদের সংখ্যা খুবই কম। নতুন আয় কর দাতা সৃষ্টি করতে হবে, মুষ্টিমেয় করদাতার উপর করের বোঝা না চাপিয়ে কর নেট সম্প্রসারণ করতে হবে। দেশ গঠনে তিনি কর বিভাগের সাফল্য কামনা করেন। সেজন্য করদাতাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে হবে। গত অর্থ বছরে সিলেট কর অঞ্চলে ৮০০ কোটি টাকা টার্গেট থাকলেও ৮৩৫ কোটি টাকা আয়কর সংগ্রহ করায় সিলেটের কর কর্মকর্তদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কর না দিলে আমরা কোন কিছুই প্রত্যাশা করতে পারিনা। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই সেখানে আহরিত রাজস্ব অধিকাংশই আসে প্রত্যক্ষ আয়কর থেকে। 

কর অঞ্চল সিলেটের কর কমিশনার আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ, কাস্টমস ও ভ্যাট কমিশনরেট সিলেটের কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম. রফিকুর রহমান, সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাহমিন আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারেরসহ সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল।

অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি করপোরেশন ও চার জেলায় ১০ জনকে দীর্ঘমেয়াদি সর্বোচ্চ করদাতা সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া সর্বোচ্চ করদাতা ১৫ জন ছাড়াও নারী ও তরুণ পুরুষ  শ্রেণিতে ৫ জন করে ১০ জনসহ মোট ৩৫ জনকে করদাতা পুরস্কার দেওয়া হয়।

সিটি কর্পোরেশন পর্যায়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পর্যায়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলা থেকে মোট ১০জন দীর্ঘমেয়াদী সর্বোচ্চ করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া ১৫জন সর্বোচ্চ ৫জন নারী, ৫জন তরুণ পুরুষ করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। সিসিক থেকে দীর্ঘ সময় ধরে কর প্রদানকারী দুজন আব্দুল খালিক এবং ধ্রুব জ্যোতি শ্যাম, এছাড়া সর্বোচ্চ তিনজন।

করদাতা হলেন এ কে এম আতাউল করিম, রাখাল দে, এবং এম নুরুল হক সোহেল। সর্বোচ্চ করদাতা নারী হলেন হাছিনা আক্তার চৌধুরী, তরুণ পুরুষ সর্বোচ্চ করদাতা হলেন মুহাম্মদ শাহ আলম।

হবিগঞ্জ জেলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন মো. আব্দুল মালিক এবং মো. আজমান আলী। সর্বোচ্চ করদাতা মিজানুর রহমান শামীম, মো. গোলাম ফারুক এবং আলহাজ্ব মো. দুলাল মিয়া। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী নারী করদাতা হলেন শাবানা বেগম এবং তরুণ পুরুষ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করাদাত হলেন মো. এমদাদুল হাসান।

সুনামগঞ্জ জেলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন ডা. মো. গোলাম মোস্তফা এবং হিমাংশু আচার্য্য। সর্বোচ্চ করদাতা মো. আতিকুর রহমান, অমল কান্তি চৌধুরী এবং মো. মোর্শেদ আলম বেলাল। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী নারী। করদাতা হলেন দিলশাদ বেগম চৌধুরী এবং তরুণ পুরুষ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করাদাত হলেন মো. জহিরুল হক।

মৌলভীবাজার জেলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন ডা. সত্য রঞ্জন দাস এবং সাধন চন্দ্র ঘোষ। এছাড়া সর্বোচ্চ করদাতা তিনজন মো. মুহিবুর রহমান, কুতুব উদ্দিন আহমেদ এবং জালাল আহমেদ। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী নারী করদাতা হলেন সান আরা চৌধুরী এবং তরুণ পুরুষ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করাদাত হলেন মো. তানভীর চৌধুরী

সিলেট জেলা থেকে দীর্ঘ সময় ধরে করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ আলাউদ্দিন আহমেদ এবং আলী আহমেদ কুলু। এছাড়া সর্বোচ্চ করদাতা তিনজন মো. আবুল কালাম, মোহাম্মদ আবু তাহের এবং মোহাম্মদ ফরহাদ। সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী নারী করদাতা হলেন মোসাম্মৎ আফছানা আক্তার এবং তরুণ পুরুষ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করাদাত হলেন মো. খাইরুল হাসান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কর অঞ্চল সিলেটের যুগ্ম কর কমিশনার মর্তুজা শরীফুল ইসলাম। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোনালিসা শাহরিন সুস্মিতা। অনুষ্ঠানে সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার প্রতিনিধিসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।

এরআগে সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বিমানবন্দর টার্মিনাল কাজে বিলম্বিত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রকল্পের ব্যায় বাড়াতে উন্নয়ন কাজ দেরি করা হয়, এটা আমাদের দেশের ট্রেডিশন হয়ে দাঁড়িয়েছে, যাহা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কাজ বিলম্বিত হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখা হবে তিনি জানান।

এসময় সিলেটের জেলা প্রশাসক মো, মজিবুর রহমান, ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক মো. হাফিজ আহমদ, বিমানবন্দর উন্নয়নের প্রকল্প পরিচালক শাহ জুলফিকার হায়দার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস

এসবি/