রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কাচারি বাড়ি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:২১ পিএম, ৪ জানুয়ারি ২০২৩ বুধবার
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র কাচারী বাড়ির অবস্থান। বৃটিশ আমলে নীলকররা এই কাচারি বাড়ি নির্মাণ করেন। ১৮৪২ সালে প্রিন্স দারোকানাথ ঠাকুর প্রথম ইংরেজদের কাছ থেকে কাচারী বাড়িটি কিনে নেন। ১৮৯০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথম শাহজাদপুর কুঠিবাড়িতে আসেন এবং ১৮৯৫ সাল পর্যন্ত বহুবার তিনি এখানে এসে বসবাস করেছেন এবং সৃষ্টি করেছেন অনবদ্য সব সাহিত্যকর্ম। প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক বাহক এ ভবনটি জাদুঘর হিসেবে রূপান্তর করা হয়েছে ।
জাদুঘরের দোতলা ভবনের নিচতলায় পর পর তিনটি কক্ষের দেয়ালে সুন্দর ও সুসজ্জিতভাবে রয়েছে কবির আকা কিছু মূল্যবান ছবি ও দুর্লভ আলোকচিত্র। জলরঙে আকা নারী প্রতিকৃতি এবং কয়েকটি নৈসর্গিক চিত্রকর্ম। এছাড়া কবির তিনটি পান্ডুলিপি এবং চারটি আলোকচিত্র এ দুটি কক্ষকে আরো আকর্ষণীয় করেছে। কবির ইতালিতে, বিলেতে এবং তার জন্মদিনে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে বিশেষ মুহূর্তের ছবিগুলো এখনো প্রানবন্ত।
বর্তমানে কাচারি বাড়িটি বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও সাহিত্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়ায় প্রতিদিনই ভক্ত অনুরাগীর পদচারনায় মুখর থাকে।
ভবন চত্বরে নতুন করে নির্মান করা হয়েছে রবীন্দ্র অডিটরিয়াম। আর পুরো এলাকা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে সৌন্দর্য বর্ধনে করা হয়েছে বিভিন্ন ফুলের বাগান। তাই কাচারী বাড়িতে এখন বিরাজ করছে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। এক সময়ে ভবনের পাশে একটি পোষ্ট অফিস থাকলেও এখন আর চিহ্ন নেই। যা ঘিরেই তিনি ছোট গল্প ‘পোষ্ট মাষ্টার’ রচনা করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।
প্রতি বছর সরকারি উদ্যোগে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এখানে তিন দিন ব্যাপী ব্যাপক অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী পালিত হয়। এই জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। রবীন্দ্র-কাচারিবাড়ীর মিলনায়তনে কোনভাবেই স্থান সংকুলান হয় না। তাই একান্ত প্রয়োজন দেখা দিয়েছে একটি রবীন্দ্র মুক্ত মঞ্চের।
কাচারিবাড়ীর দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে একটি মুক্তমঞ্চ নির্মাণের মতো যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। কাচারিবাড়ীর প্রত্নতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য ও সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রাখার জন্য যা কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তা জরুরী ভিত্তিতে গ্রহণ করার পরামর্শ সুধী মহলের।
এমএম/