ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

টিকিট সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে ধীরগতি

মো: আরিফুজ্জামান, মালয়েশিয়া থেকে

প্রকাশিত : ০৯:০৯ পিএম, ৫ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার

টিকিট সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। টিকিটের দামের ঊর্ধ্বগতি ও তারল্য সংকটের কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। 

টিকিট সিন্ডিকেটের কারণে একদিকে যেমন প্রবাসী বাংলাদেশীরা বিড়ম্বনায় পড়ছেন অন্যদিকে কলিংয়ে মালয়েশিয়াগামী বাংলাদেশী কর্মী প্রেরণেও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। টিকিটের উচ্চ মূল্যের কারণে দেখা দিয়েছে বাড়তি অভিবাসন ব্যয়। যেটা বহন করতে হচ্ছে বিদেশগামী প্রবাসী বাংলাদেশীদের। ফলে ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে টিকিট সিন্ডিকেটগুলো। বিমানের অসাধু কর্মকর্তারা ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর সঙ্গে যোগসাজশে এই সিন্ডিকেট করলেও যেন দেখার কেউ নাই।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর দুই দেশের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে ৮ আগস্ট দিবাগত রাতে ৫৩ জন কর্মীর মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রার মধ্য দিয়ে পুনরায় মালয়েশিয়ার এই দ্বিতীয় বৃহৎ শ্রমবাজার চালু হয়। ফলে বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার চালু হওয়ার কারণে অভিবাসী কর্মীর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এয়ারলাইন্সগুলো সিন্ডিকেট করে বিমানের টিকিটের দাম কয়েকগুণ বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে চড়া দামে টিকিট কিনে মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের হতে হচ্ছে গলদঘর্ম।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়া শ্রম বাজার বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ও কাঙ্ক্ষিত শ্রমবাজার। মালয়েশিয়ার নির্মাণ, সেবা, কৃষি, পর্যটনসহ বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশি কর্মীরা দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছেন। 

ফলে শ্রমবাজার খোলার ৩ মাসের মধ্যে প্রায় দেড় লাখ ভিসা প্রস্তুত করে মালয়েশিয়া। কিন্তু দেশটিতে কর্মী পাঠাতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। সম্প্রতি যখন কর্মী প্রেরণের পথ সুগম হয়েছে ঠিক তখনই সৃষ্টি হয়েছে টিকিটের তারল্য সংকট ও ৪/৫ গুণ বেশি দাম। এ যেন গোদের উপর বিষফোঁড়া। কোনো কারণ ছাড়াই বিমানের ভাড়া অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় হাজার হাজার বিদেশগামী কর্মী টিকিটের টাকা জোগাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এতে অভিবাসন ব্যয় বাড়ছে হু হু করে। পরিস্থিতি এমন দিকে গড়াচ্ছে যে এসব দেখার কেউ নেই।

রিক্রুটিং ব্যবসার সাথে জড়িত নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মালয়েশিয়াগামী প্রত্যেকটা কর্মী পদে পদে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সরকার প্রথম দিকে ঘোষণা দিয়েছিলেন কম খরচে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি করা হবে। কিন্তু মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের বর্তমান অভিবাসন ব্যয় ৪ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। বাকি ছিল এজেন্সিগুলো তারাও সময় মতো সৃষ্টি করেছে মালয়েশিয়াগামী টিকিটের তারল্য সংকট ও উচ্চ মূল্য। যা সাধারণ সময়ের থেকে ৪/৫ গুণ বেশি দাম। বিদেশগামী কর্মীদের নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিতকরণে সকল এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার জোর দাবি জানান তিনি। 

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে প্রায় আড়াই লাখের বেশি কর্মী মালয়েশিয়া আসেন। পরে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া সরকার। পরে বাংলাদেশ সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

এসি