ঢাকা, বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩১

কর্ণফুলী টানেলের নিরাপত্তায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমাহার (ভিডিও)

মুহাম্মদ নূরন নবী, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১৬ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২৩ রবিবার

দেশে নতুন হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টানেল সড়ক বেশ পুরনো। পাহাড় কিংবা পানির ভেতর দিয়ে আর মাটির নীচের এসব সড়কে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সব ধরণের ব্যবস্থা থাকে। ঠিক এমন নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমাহার হয়েছে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলে। 

কর্ণফুলী টানেলের প্রত্যেকটি টিউবের ব্যস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। পানির উপরের বিন্দুর ১৮ থেকে ৩৬ মিটার গভীরতায় এবং নদীর একেবারে মাঝ পয়েন্টে ১শ’ ৫০ ফুট গভীরতায় গেছে টিউব দুটি। 

পর্যাপ্ত আলো ও বাতাস প্রবেশ নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে নকশাও প্রণয়ন করা হয়েছে সেভাবেই। প্রথমত ভ্যান্টিলেশনে ২০টি জেট ফ্যান সার্বক্ষণিক চালু থাকবে। উচ্চমানের সড়ক লাইটিংয়ের পাশাপাশি সূর্যালোক প্রবেশের ব্যবস্থাও রয়েছে। 

কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, “ভ্যান্টিলেশন সিস্টেম, ফায়ার ফাইটিং, ড্রেনেজ, পাওয়ার, কমিউনিকেশন, মনিটরিং সিস্টেমের সবই রয়েছে এখানে।”

পানি কিংবা তরলের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে টিউবের প্রতিটি অংশ তৈরি হয়েছে উচ্চমানের প্রতিরোধী উপকরণ দিয়ে। 

বড় ধরণের বন্যার পানি সুড়ঙ্গে প্রবেশ ঠেকাতে সুরক্ষিত ফ্লাডগেট আছে। টিউবগুলোর অবস্থান পানির নীচে। আর বন্যা বিবেচনায় রেখে আপৎকালীন পানি বের করতে ৫২টি সেচ পাম্প স্ট্যান্ডবাই থাকছে। 

প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, “পানি ভেতরে প্রবেশের কোনো সম্ভাবনা নেই। আর ১শ’ বছরের মধ্যে যদি পানি হয় তাহলে তো আমাদের ফ্লাডগেট আছে। সেই সময় ফ্লাডগেট বন্ধ করে দেওয়া হবে।”

নদীর তলদেশে মূল পথের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। যেখানে ১২ মিটার দূরত্বে থাকা সুড়ঙ্গগুলোর পারস্পরিক দূরত্ব ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে বা জরুরি প্রয়োজনে এক টিউব থেকে অন্যটিতে যেতে তিনটি সংযোগ টিউব রয়েছে টানেলে। 

প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, “কোনো একটা কিছু হলে পড়ে সেটা যাতে ওভারকাম করতে পারি সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।”

অগ্নি প্রতিরোধে টানেলে নিজস্ব বিশ্বমানের অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা পর্যাপ্ত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দুই প্রান্তে দুটি স্বয়ং সম্পূর্ণ ফায়ার স্টেশনও প্রস্তুত থাকবে সার্বক্ষণিক। 

একেবারে নদীর তলদেশে নির্মাণ হওয়ার পরও এই টানেলে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই। সম্ভবত যে ঝুঁকিগুলো হতে পারে সেগুলো প্রতিরোধ করার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে কর্ণফুলি টানেলে। আর যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটেও যায় তাহলে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সব ধরনের প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার আয়োজন রয়েছে টানেলটিতে। তাই যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারবেন কর্ণফুলি টানেলের মধ্য দিয়ে।

এএইচ