শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাচারি বাড়ি সম্পূর্ণ সংস্কারের দাবি (ভিডিও)
স্বপন মির্জা, সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত : ০৩:১৮ পিএম, ৯ জানুয়ারি ২০২৩ সোমবার | আপডেট: ০৩:৩১ পিএম, ৯ জানুয়ারি ২০২৩ সোমবার
‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে, আমি বাইব না মোর খেয়া তরী এই ঘাটে’- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শাহজাদপুরে অবস্থানকালে এই অমর কবিতা লিখেছিলেন। কবির লেখনীর কথামতই তিনি এখন নেই। তবে কবির স্মৃতিধন্য সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের রবীন্দ্র কাচারি বাড়িতে তার পায়ের চিহ্ন রয়ে গেছে প্রতি পদে, ছোঁয়ায়, আর প্রতি স্পর্শে।
বর্তমানে এ কাচারি বাড়িটি বাঙ্গালী সংস্কৃতি ও সাহিত্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ হওয়ায় এখানে প্রতিদিনই ভক্ত অনুরাগীর পদচারনায় মুখোর থাকে। বাংলার স্বাধীনতা অর্জন, শিক্ষা-সংস্কৃতি, সৃষ্টি ও বিশ্বশান্তিতে কবিগুরুর ভূমিককে তারা স্মরণ করেন হৃদ মাঝারে। এদিকে কবির জমিদারীর প্রাচীন ঠাকুর কাচারি ভবনটি অবহেলা আর অযত্নে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যা পুনঃ সংস্কারের কথা জানালেন কর্তৃপক্ষ।
সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাচারি বাড়িটি অবস্থিত। কবির পিতামহ প্রিন্স দারকানাথ ঠাকুর মাত্র ১৩ টাকা ১০ আনায় তাদের শাহজাদপুরের জমিদারী পরিচালনা করতে ইংরেজ নীলকরদের কাছ থেকে ইন্দো ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত ২টি ভবন সহ ৪.৬৮ জায়গা কিনে নেন। ১৮৯০ থেকে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত ৭ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শাহজাদপুরের জমিদারী দেখভালের জন্য মাঝে মাঝে আসতেন ও বসবাস করতেন।
বর্তমানে এই বাড়িটির উত্তরদিকের প্রধান ফটক বন্ধ করে দিয়ে দক্ষিণ দিক দিয়ে প্রবেশের পথ করা হয়েছে। কবির স্মৃতিচিহ্ন ছড়ানো বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দায়িত্ব নিয়েছে, যা এখন জাদুঘর করা হয়েছে। ভবন চত্বরে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে রবীন্দ্র অডিটরিয়াম। আর পুরো এলাকা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে সৌন্দর্য বর্ধনে করা হয়েছে ফুলের বাগান। তাই কাচারি বাড়িতে এখন বিরাজ করছে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ।
এক সময়ে এই ভবন সংলগ্ন একটি পোস্ট অফিস থাকলেও তার চিহ্ন নেই, যা ঘিরেই তিনি ছোট গল্প পোস্ট মাস্টার রচনা করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো কবি ভক্ত এই বাড়িতে এসে তার আঙ্গিনা স্পর্শ করে হন সন্তুষ্ট।
এদিকে মহাকবির স্মৃতিধন্য কাচারি বাড়ির ‘ঠাকুর কাচারি’ প্রাচীন ভবনটি অবহেলিত থাকায় তা দ্রুত সংস্কারের দাবি উঠেছে।
বিশ্বকবির অবদান শুধু বিপুল সাহিত্য কর্মে নয়, বাংলার সৃষ্টিসহ ঘাসের জন্য নিজের জমি দান করে গো-সমৃদ্ধ শাহজাদপুর গড়ে সমাজকর্মী সত্তাও বিকোশিত করেছেন তিনি।
এএইচএস