হাসপাতালের বাহিরে সন্তান প্রসব: দুই নার্সকে অব্যাহতি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:২২ এএম, ১০ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সরকারি হাসপাতালের দুই সিনিয়র নার্সকে তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তাদের অবহেলায় হাসপাতালের বাইরে প্রসূতির সন্তান প্রসবের ঘটনা ঘটে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্বাস্থ কর্মকর্তা ডাঃ বাহারুল আলম।
অভিযুক্ত দুই নার্স হলেন সুপার আরজু বেগম ও ওটির ইনচার্জ ইয়াসমিন আক্তার। তাদের পরিবর্তে নার্স আফরোজা, নাইমুন নাহার ও নাজমাকে ওটিসহ অন্যান্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বাইরে কনকনে শীতের মধ্যে পুত্র সন্তান প্রসব করেন এক গৃহবধূ। আমেনা বেগম বেগম (৩৬) নামে ওই গৃহবধূ উপজেলার চরবংশী ইউপির চরকাছিয়া গ্রাম দিনমজুর লাল মিয়ার স্ত্রী।
এই ঘটনা জানাজানি হলে চার ঘণ্টার মধ্যেই হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা চিকিৎসক বাহারল আলম জরুরি ভিত্তিতে গৃহবধূর বোন, গৃহকর্তা প্রভাষক নুরনবি ও সাংবাদিকের উপস্থিতিতে নার্স আরজুকে এ ঘটনার জন্য বৎসনা করেন।
অসুস্থ্য আমেনা বেগম ও তার অসুস্থ্য শিশুকে দ্রুত হাসপাতালে এনে শিশু চিকিৎসক দিয়ে সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করেন তিনি। বর্তমানে আমেনা বেগম ও তার শিশু সন্তান সুস্থ রয়েছে বলে জানান গাইনি ওয়ার্ডের নার্সরা।
আমেনার বড় বোন ফিরোজা বেগম জানান, অসুস্থ্য আমেনাকে দুপুর ২টায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার দেখার পর ভর্তি করেন। নার্স আরজু বেসরকারি দুটি হাসপাতালে আলট্রা পরীক্ষা করান। বাচ্চার ওজন কম, পানিও কম এবং আইসিইউ নাই বলে বিকালে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। কিন্তু টাকার অভাবে অন্য হাসপাতালে না গিয়ে এই হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসার জন্য নার্সকে অনুরোধ করি। কিন্তু নার্স আমাদের কথা না শুনেই অন্য হাসপাতালে পাঠান।
সন্ধ্যায় অসুস্থ্য আমেনাকে নিয়ে সদর হাসপাতালে রওয়ানা দিলে হাসপাতালের সামনে টিউবওয়েলের কাছে আসার পর প্রসব বেদনা উঠে। সেখানেই আমেনা সন্তান জন্ম দেয়।
চিকিৎসাধীন গৃহবধূ আমেনা জানান, এটি তার প্রথম সন্তান। জরুরি বিভাগে ভর্তির সময় প্রসব ব্যথা উঠে। নার্স বলাতেই অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পথে টিউবওয়েলের সামনে সন্তানের জন্ম হয়। তখন দুজন মহিলা এসে সহায়তা করেন।
রায়পুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পটিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিৎসক বাহারুল আলম বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। আগামিতে এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য দুই নার্স আরজু ও ইয়াসমিনকে ওটির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।
এ ঘটনার তিন মাস আগে নার্স আরজুর বিরুদ্ধে অসুস্থ্য রোগীকে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ ও রোগীদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে।
এএইচ