ভুয়া সংবাদে সুরাহা প্রেস কাউন্সিলে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:৩৪ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার | আপডেট: ০১:৫৩ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২৩ মঙ্গলবার
প্রত্যেক বিষয় সদ্ব্যবহারের পাশাপাশি অপব্যবহার রয়েছে। সেক্ষেত্রে জাতির বিবেক, রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃত গণমাধ্যমও ভুল পথে পরিচালিত হতে পারে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীগত অপোদ্দেশ্যে পত্রপত্রিকাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার নজির রয়েছে। এতে সমাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্মানহানী হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিরুপায়ী ভুক্তভোগী ঝামেলা মনে করে কোনো পদক্ষেপে যেতে চান না। তবে কোনো মিথ্যা খবরে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বাংলাদেশ প্রেসকাউন্সিলের দারস্ত হয়ে আইনী সুরক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। যার মাধ্যমে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সুরাহা পেতে পারে।
হয়রানির শিকার সাউথ বাংলা এগ্রিকাল এন্ড কমার্স ব্যাংকের প্রধান সংযোগ কর্মকর্তা আসাদুল্লাহিল গালিবের একটি মামলা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কথা হচ্ছিল তার সাথে: তিনি স্বল্প পরিচিত এক প্রতিবেদকের কথা শুনে হতবিহ্বল। তিনি নাকি শতকোটি টাকার মালিক বনে গেছেন! তার নাকি চাকুরি চলে গিয়েছিল! তিনি নাকি গণমাধ্যমকে ম্যানেজ করার কথা বলে চেয়ারম্যান-এমডির কাছ থেকে টাকা নিয়ে তা দেননা! তার বিরুদ্ধে একটি পত্রিকা এসব আজগুবি অভিযোগের ভিত্তিতে রিপোর্ট করার হুমকি দেয়। এ জন্য অফিসকে ম্যানেজ করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিকার রিপোর্টার ও বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি পরামর্শ দেন।
অভিযোগগুলো এতোটাই হাস্যকর ও ভিত্তিহীন ছিল যে তিনি বিষয়টিকে একেবারেই গুরুত্ব দেননি। কেননা শতকোটি টাকা বা জমিজমা তো দূরের কথা তার বেতনের টাকার বাইরে কোনো আয় নেই। আর কোনোকালে তার চাকুরি চলে গেছিল বা এ ধরনের কোনো প্রক্রিয়া হয়েছিল কি-না, তা ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের কাছে নিশ্চিত হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া চেয়ারম্যান বা এমডি স্যারদের কাছ থেকে কোনো টাকা তিনি নেন, প্রয়োজনের তাদের সাথেও কথা বলার পরামর্শ দেন। এমনিক তিনি ওই প্রতিবেদককে কোথায় তার সম্পদ বা টাকা আছে, তার সন্ধানও চান। তবুও প্রতিবেদক জানায়, সে এসব নিয়ে রিপোর্ট করবে। কয়েকদিন বাদে আবারও ফোন করে জানানো হয়, ‘আপনার রিরুদ্ধে রিপোর্ট হচ্ছে, কিছু করার থাকলে করেন।’ এবারও কোনো ভ্রুক্ষেপ না করেই, তিনি বলে দেন, ‘আই ডোন্ট কেয়ার, আপনারা যা খুশি-তাই করতে পারেন।’
তার কিছুক্ষণ বাদেই ওই পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে কতোগুলো অভিযোগ এনে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। যার লিঙ্কসহ গালিবের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয় এবং জানানো হয়, এই রিপোর্ট আগামিকাল পত্রিকায় আসবে। বিষয়টিকে একেবারেই পাত্তা না দেওয়ায় যথারীতি পরের দিন পত্রিকায় ‘গালিব-মিজান সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে এসবিএসি ব্যাংক’ শিরোনামে একটি ভুয়া খবরটি প্রকাশিত হয়। যা সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন ফ্লোরে পত্রিকা সংশ্লিষ্টরা বিতরণ করেন।
ব্যাংকের আইটি ও মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মিজানুর রহমান এবং জনসংযোগ বিভাগের প্রধান মো. আসাদুল্লাহিল গালিব-এর নামে এধরনের খবর প্রকাশ দেখে ব্যাংকের অভ্যন্তরে ও বাহিরে বেশ হাস্যরস এবং আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয়। পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব এবং সহকর্মীদের মাঝেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করেন তিনি।
ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ কওে ওই দিনই গালিব পত্রিকাটির অফিসে নিজে গিয়ে একটি প্রতিবাদলিপি জমা দেন এবং সিলসহ রিসিভড কপি গ্রহণ করেন। ওই সময়ে পত্রিকার কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। প্রতিবাদ জমার দীর্ঘ ১৫ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও তা পত্রিকাটি ছাপেনি। অবশেষে আইনগত বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন তিনি। তিনি প্রথমে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে যান। তখন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। ওই মামলার রেজাল্ট নিয়ে পরবর্তীতে অন্যান্য আদালতে গেলে কাক্সিক্ষত সুবিচার পাওয়া যাবে মর্মে তিনি অবহিত করেন।
এরপর আসাদুল্লাহিল গালিব প্রেসকাউন্সিলের ওয়েবসাইটে (www.presscouncil.gov.bd) গিয়ে কাউন্সিলের বিচারিক ব্যবস্থার খুটিনাটি ঘেটে এর নিয়মাবলী সম্পর্কে অবহিত হন। এখান থেকেই মামলা রুজুর আবেদনফরম ডাউনলোড করেন। ফরমে মামলা দায়েরের প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখ করে পত্রিকাটির মূলকপিসহ প্রয়োজনীয় তথ্যাদির ১১টি সেট জমা দিতে হয়। সে মোতাবেক প্রেসকাউন্সিলের পুরানা পল্টনস্থ কার্যালয়ে গিয়ে জমা দেন এবং একটি রিসিভ কপি গ্রহণ করেন। এরপর এ বিষয়ে তিনি খোঁজখবর রাখেননি। প্রায় দু’মাস পর এ বিষয়ে শুনানির জন্য একটি নোটিশ প্রদত্ত ঠিকানায় আসে। এরপর থেকে কাউন্সিলে বেশ কয়েকবার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে আইনজীবী নিয়োগ করতে হয়, তবে কোনো ফরিয়াদি চাইলে নিজেও শুনানিতে অংশ নিতে পারেন। তিনি কাউন্সিলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আন্তরিকপূর্ণ ব্যবহার পেয়েছেন বলে জানান।
গালিব জানান, মামলায় পরাজয় হওয়ার আশঙ্কা যে পক্ষের থাকে, সে পক্ষ সমঝোতার জন্য চেষ্টা করে। তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় প্রতিপক্ষ সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু এধরনের অপকর্মের একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সমঝোতায় সাড়া দেই নাই। তিনি আরও জানান, তারা যারা জনসংযোগ পেশায় রয়েছে, তাদের কাছে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার লোকজন আসে এবং বিজ্ঞাপন চান। প্রত্যেককে সবসময় তাদের চাহিদা অনুযায়ী দেওয়া সম্ভবও হয় না। তখন নানান হুমকি ও ভুয়া নিউজ ছেপে ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করে। এর হাত থেকে প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে এবং এই ধরনের পত্রিকাগুলোকে সতর্কবার্তা দেওয়ার জন্য প্রেসকাউন্সিলের মামলা দায়েরে কিছুটা প্রতিকার মিলে।
আসাদুল্লাহিল গালিবের মামলার রায়ে বলা হয়, ‘‘উভয়পক্ষকে শুনলাম এবং সংযুক্ত কাগজপত্রসমূহ দেখলাম। দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকায় প্রকাশিত যে প্রতিবেদনটি নিয়ে অত্র মামলার উদ্ভব হয়েছে তাও দেখলাম। এই প্রতিবেদনটি পড়ে আমরা সবাই একমত যে, সেখানে যা বলা হয়েছে তা বাদীর মানহানি হওয়ার জন্য যতেষ্ঠ। এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর আমরা একেবাওে সন্দেহহীন যে ইহাতে বাদীর মানহানী হয়েছে। এই প্রতিবেদনটি ছাপানোর পওে বাদী এই প্রতিবেদনের বিপক্ষে একটি প্রতিবাদ পাঠিয়েছিলেন। সেই প্রতিবদাটি দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকায় সময়মতো ছাপা হয়নি। বিবাদীর বক্তব্য হলো প্রতিবাদলিপি তার পাননি বরং বাদী অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতিবাদলিপিটি ভোরের পাতা কার্যালয়ে না পাঠিয়ে মনগড়া কাগজে পত্রিকার নকল সিল দিয়ে তাতে অজ্ঞাত একটি সিল বসিয়ে রিসিভ দেখিয়ে অত্র আদালতে দাখিল করেছেন। যা ফরিয়াদীর তঞ্চকতার পরিচয়। বিবাদীর এই বক্তব্য আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এই পত্রিকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বাদীর পূর্ববতী কোনো বিরোধ ছিল না।, ফলে তারা প্রতিবাদলিপিটি গোপন করে এই মামলা করেছেন, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বরাং আমাদেও কাছে এটাই মনে হয়েছে যে, অনেক পত্রিকায় এ ধরনের প্রতিবেদন ছাপার পওে প্রতিবেদনের ব্যাপাওে প্রতিবাদ আসলে তারা তা ছাপাতে চান না। অত্র প্রতিবেদনটি প্রকাশি হয় ১৫/০৮৯/২০২১ তারিখে এবং প্রতিবাদটি পাঠানো হয় একই দিনে অর্থাৎ ১৫/০৯/২০২১ তারিখে। ১৯/০৫/২০২২ তারিখে বিবাদীপক্ষ জবাব দাখিল করেন সেই জবাবে তারা প্রথম প্রতিবাদলিপি সম্পর্কে তাদেও বক্তব্য পেশ করেন অথচ মামলা আর্জির সাথেই প্রতিবাদ পাঠানো এবং তা ছাপা না হওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরিশেষে ২৪/০৭/২০২২ তারিখে তারা দৈনিক ‘ভোরের পাতা’ পত্রিকায় শেষ পাতায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ এই হেডিংয়ে প্রতিবাদলিপির কথা উল্লেখ করেছেন তাও প্রতিবাদলিপির বিশেষ অংশসমূহ প্রকাশ করা হয়নি। এবং যে অবয়বে প্রতিবেদনটি ছাপা হয়েছিল সেখানেও ছাপাননি। ফলে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল প্রণীত প্রতিবাদ ছাপানো সম্পর্কে সাংবাদিকতার নীতিমালার ১০ ধরায় প্রয়োজনীয়তা মানা হয়নি, তদুপরি আচরণবিধির ১৭ ধারাও মানা হয়নি। আর মামলা চলা অবস্থায় বায়ের প্রায় শেষ অবস্থায় প্রতিবাদ ছাপিয়ে নিয়ে আসা কোনো ক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। তদুপরি শুনানীর শেষ দিনে প্রতিপক্ষের আইনজীবী শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেন যে প্রতিবাদটি তাদের অফিসে সময়মতো পৌঁছেছিল, কিন্তু সম্পাদক সাহেব দেশে না থাকায় তারা এই প্রতিবাদলিপি তখন ছাপান নাই। শেষে মামলা হবার কথা শুনে প্রতিবাদপত্রটি তাদের ইচ্ছামতো তারা ছাপিয়েছেন যাহা নীতিমালার ১০ ধারার বরখেলাপ। এই অবস্থায় অত্র কমিটি মনে করে যে, বিবাদী কথিত প্রতিবাদটি সময়মতো না ছাপিয়ে প্রেস কাউন্সিল আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী অপরাধ করেছেন।’’
‘‘এই মামলায় যে কথাগুলো প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে তার সোর্স সম্পর্কে বিবাদী পক্ষের বক্তব্য হলো ব্যাংকের লোকদের সাথে কথা বলে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে এবং তার অডিও টেপ নাকি প্রতিপক্ষের কাছে সংরক্ষিত আছে । যদিও তাদের প্রয়োজন ছিলো এ ব্যাপারে বাদীপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে তাদের বক্তব্য যাচাই করা যা বিবাদীপক্ষ করেননি। ফলে সংবাদ বা প্রতিবেদন প্রকাশের প্রাথমিক নিয়মটি এখানে অনুসরণ করা হয়নি। এই মামলায় আরো দেখা যায় বাদীপক্ষ থেকে বলা হয়েছে বাদীর সাথে সাক্ষাৎ করে এবং ফোনের মাধ্যমে প্রত্রিকার প্রতিনিধি এইসব অভিযোগ নিয়ে ব্লাকমেইল করার চেষ্টা করেছিল এবং বাদীর কাছে অর্থ চাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল তাতে সাড়া না পাওয়ায় এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে যে কথাটি বিশেষ করে বলা হয়েছে যে, বিজ্ঞাপন বিলের অর্থ পরিশোধ না করে বাদী নাকি কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন যা বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ ওই ব্যাংকে আত্মসাতের ঘটনা সম্পর্কে কোনো অভিযোগ নেই। থাকলে এতোদিনে এবং এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরে মামলা হতো কিন্তু তা হয়নি। কাজেই আমাদের মনে হয় আজগুবি ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাদীকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে বাদীর এই বক্তব্যটি সঠিক। যাইহোক সর্ববিষয়ে বিবেচনা করে আমরা এই সিদ্ধান্তে একমত হয়েছি যে বাদী তার মামলা প্রমাণ করতে সমর্থ হয়েছেন এবং বিবাদী কথিত প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আইনের ১২ ধারায় অপরাধ সংঘটন করেছেন।’’
‘‘ফরিয়াদীর অভিযোগ, প্রতিউত্তর ও প্রতিপক্ষের জবাব এবং পক্ষগণের দাখিলি কাগজপত্র ও তাদের বক্তব্য বিবেচনা করে সবাই একমত হয়ে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল বিচারিক কমিটি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে প্রতিপক্ষগণ যাচাইবিহীন, একতরফা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রতিবেদন প্রচার করে সাংবাদিকদের অনুসরণীয় আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। জনগণের রুচির বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন। যা পেশাগত অসদাচারণ ব্যতীত অন্য কিছু নয়। এখানে আরো উল্লেখ করতে চাই দৈনিক ভোরের পাতা পত্রিকাটির কর্তৃপক্ষ দাবী করেন যে দীর্ঘকাল যাবত জনগণের সেবায় এবং দাবী আদায়ে এই পত্রিকাটি দায়িত্ব পালন করে আসছে এবং তারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের পত্রিকা তাই তাদের কাছে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা এবং বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আচরণবিধি মানার আশা অনেক বেশি। কিন্তু তারা তাদের কার্য্যের দ্বারা ইহা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। সবশেষে প্রতিপক্ষের আইনজীবী জুডিশিয়াল কমিটির কাছে আদালতে স্বীকার করেন যে, এই মামলায় কোনো কোনো ব্যাপারে বিবাদী সত্যিই ভুল করেছেন। প্রতিবেদনটি ছাপা হয় যখন বিবাদী দেশের বাহিরে ছিলেন। সময়মতো এই ভুলসমূহ সম্মন্ধে তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। তাই তিনি প্রেসকাউন্সিল আইনের ১২ ধারায় অপরাধ করেছেন। এরপর তিনি ভবিষ্যতে আরো সাবধান হবেন এই কথা বলে প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করেন। এইসব বক্তব্য সমূহ চিন্তা করে আমরা প্রতিপক্ষগণকে তদ্রুপ গর্হিত আচরণের জন্য ভৎসনা করে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করাকে শ্রেয় মনে করি। এই কমিটি প্রত্যাশা করে যে, প্রতিপক্ষগণ ভবিষ্যতে কোনো সংবাদ প্রকাশের পূর্বে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করবেন।’’
জানা গেছে, সংবাদপত্রের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে প্রেসকাউন্সিল আইন সংশোধন করে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। অপসাংবাদিকতা রোধে এই ধরনের উদ্যোগ সময়ের অপরিহার্য দাবি। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রত্যেক খবরের দায়দায়িত্ব সম্পাদক ও প্রকাশকের। কোনো রিপোর্টার যেনো কল্পনাপ্রসুত প্রতিবেদন ছাপতে না পারে সে ব্যাপারে তাদেরকে উদ্যোগী হতে হবে। এ জন্য প্রেসকাউন্সিলকে আরও কঠোর ভূমিকা রাখা জরুরি বলে মনে করেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
এসএ/