বন্ধুর চিকিৎসার নামে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ, মামলা দায়ের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৪৮ এএম, ১১ জানুয়ারি ২০২৩ বুধবার | আপডেট: ১১:৫১ এএম, ১১ জানুয়ারি ২০২৩ বুধবার
সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বন্ধুর চিকিৎসার নাম করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে পাওয়া প্রায় ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রংপুরের তাজহাট থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রংপুরের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান লিমন (১৯) জানান, গত বছর ২০ জুন রংপুরের কাউনিয়াতে মোটরসাইকেলযোগে বাড়িতে আসার পথে এক সড়ক দুর্ঘটনায় তার বাবা নিহত হন এবং তিনি মারাত্মকভাবে আহত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। এই সুযোগে পরিচিত সহপাঠিরা টাকা আত্মসাতের উদ্দেশে কৌশলে পরিবারের কাছ থেকে তার চিকিৎসায় ব্যবহৃত মেডিকেল সার্টিফিকেট ও দুর্ঘটনার সময় তোলা বিভিন্ন ছবি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের নিজস্ব নগদ ও বিকাশ নাম্বার ব্যবহার করে টাকা সংগ্রহ করে। একই সঙ্গে রংপুর শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, রাস্তা-ঘাট, নগরীর অলিগলিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দুর্ঘটনার ছবি এবং মেডিকেল রিপোর্ট দেখিয়ে এবং ব্যানার ফেস্টুনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
লিমন জানান, চিকিৎসায় তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়, ফলে তখন তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে কিছু জানতে পারেননি। পরে বিষয়টি জানতে পেরে চিকিৎসা শেষে ঢাকা থেকে রংপুরে ফেরার পর আসামিদের কাছ থেকে টাকা তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি স্বীকার করে। তারা এ টাকা ফেরত দেবে বলেও জানিয়ে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে টাকাগুলো তারা আর ফেরত দেয়নি এবং যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এরপরই লিমন নিজে বাদী হয়ে তাজহাট থানায় মো. নুরুল ইসলামের ছেলে মুনজিম ইসলাম নিম্মেল (১৯) ও মো. মেহেদী হাসান (৩২), মাহামুদুল ইসলামের ছেলে মো. আসমাউল ইসলাম অমিও (১৯), রিয়াদ (১৯), মো. আনারুলের ছেলে মো. আবিদ (১৮), সারাবান তহুরা (২০) এবং মো. সাঈদ হাসানসহ (১৯) অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগটি যাচাইবাছাই শেষে সোমবার (৯ জানুয়ারি) মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিমনের বোন অ্যাডভোকেট মাহিয়া মেহেজাবীন রিফা একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আসামিরা আমার ভাই ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে যে প্রতারণা করেছে, তার বিরুদ্ধে তাজহাট থানায় আমরা একটা অভিযোগ দিয়েছিলাম, তদন্ত ও যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগটি মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকেই আসামিদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে কি-না, জানি না। তবে শুনেছি তারা মামলার খবর পেয়ে পলাতক।’
এ বিষয়ে তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের জানান, প্রতারণার অভিযোগে উল্লেখিত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে এবং আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এনএস//